বকুলতলা সড়কটিকে আরো সঙ্কুচিত করা হচ্ছে
চাঁদপুরকে ব্র্যান্ডিং জেলা ঘোষণা এবং শহরকে 'ক্লিন চাঁদপুর গ্রীন চাঁদপুর' করার যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছিলো তা ভেস্তে যেতে বসেছে নানা অব্যবস্থাপনা ও অপরিকল্পিত অবকাঠামো নির্মাণের কারণে। শহরের অলিগলিতে যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা, সড়কের উপর ভ্রাম্যমাণ ভ্যানে করে বিভিন্ন ফলমূল, তরিতরকারিসহ বিভিন্ন প্রকার মালামাল ফেরি করে বিক্রি করার দৃশ্য এখন শহর জুড়েই দেখা যায়। এতে মানুষের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে এবং যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া পাড়া-মহল্লায় পৌর আইন অমান্য করে কিছু অসাধু বাড়ির মালিক ও ব্যবসায়ী পথচারীদের চলাচলের রাস্তা না রেখে রাস্তার অংশ দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করার মহোৎসবে মেতে উঠেছে। জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টি করে অপরিকল্পিতভাবে ভবন বা স্থাপনা নির্মাণের আগেই পৌর কর্তৃপক্ষের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগ থেকে রেহাই পেতে পারে। পৌর কর্তৃপক্ষকে চাঁদপুর শহরের মানুষের কল্যাণের দিক বিবেচনা করে নতুন স্থাপনা নির্মাণের পূর্বে জোরালো মনিটরিং করা একান্ত প্রয়োজন বলে সচেতন পৌরবাসীর দাবি।
চাঁদপুর শহরের অত্যন্ত ব্যস্ততম, জনগুরুত্বপূর্ণ ও প্রাচীনতম ব্যবসা কেন্দ্র পালবাজার-বকুলতলা সড়কটির প্রবেশ পথে পুরাতন দেয়াল ভেঙ্গে মোঃ বাদশা ভূঁইয়া সড়কের অংশ দখল করে সড়কটি আরো সঙ্কুচিত করে নতুন করে স্থাপনা ও দেয়াল করার পাঁয়তারায় লিপ্ত হচ্ছে বলে এলাকার অসংখ্য ব্যবসায়ীর পক্ষ থেকে ও এলাকার আবাসিক বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে। এ রাস্তাটি যেনো পূর্বের চেয়ে আরো প্রশস্ত করা হয় সেদিকে দৃষ্টি দেয়ার জন্যে পৌর মেয়রের কাছে দাবি জানিয়েছেন পালবাজারের শত শত ব্যবসায়ী ও বকুলতলা সড়ক এলাকায় বসবাসরত লোকজন। শহরের এ বকুলতলা সড়কটির প্রয়াত কালী বাবুর বাসা থেকে অ্যাডঃ ইকবাল-বিন-বাশার সাহেবের বাসা পর্যন্ত সড়কটির যে পরিমাণ জায়গা রয়েছে তার প্রায় ৫ ফুট জায়গা দখল করে রয়েছে আব্দুর রহমানের বাড়ির (বর্তমানে বাদশা ভূঁইয়া) বাউন্ডারি দেয়ালটি। এ বাড়তি দেয়ালের কারণে পালবাজারে ও বকুলতলা এলাকায় আবাসিক বাসা-বাড়িতে অগি্নকা-ের সৃষ্টি হলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি এলাকায় প্রবেশ করতে না পারাসহ বড় বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। এছাড়াও এ সড়কটি প্রশস্ত না হলে ব্র্যান্ডিং জেলা হিসেবে যানজট নিরসনে এ সড়কটি দিয়ে বড় স্টেশন সড়ক হতে রেল লাইন দিয়ে বকুলতলা সড়কটিকে যে বাইপাস সড়ক হিসেবে করার পরিকল্পনা পৌর কর্তৃপক্ষ নিয়েছে সে পরিকল্পনাও ভেস্তে যাবে।
চাঁদপুর শহরের অত্যন্ত ব্যস্ততম জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক হচ্ছে শহরের বকুলতলা সড়ক। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে থাকে। এর মধ্যে স্কুল-কলেজের ছাত্রীরাও রয়েছে। এ সড়কটির পালবাজার এলাকায় প্রবেশ মুখে রাস্তার অংশ দখল করে বিগত দিনে আবদুর রহমান নামে এক ব্যক্তি প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে তার বাড়ির বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণ করেন। বিগত বহু বছর যাবৎ সড়কের অংশ দখল করে রাখায় এ এলাকার শত শত ব্যবসায়ী ও হাজার হাজার পথচারীর চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়ে আসছে। পৌর কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি বলে এ সড়কটি প্রশস্ত করা সম্ভব হয়নি। এ সড়কের ভেতরে সব স্থানে মোটামুটি প্রশস্ত থাকলেও এ স্থানের বকুলতলা রোডের মাথা পর্যন্ত প্রায় ১শ' ফুট জায়গার দেয়ালটি সড়কের উপর চলে আসায় এখান দিয়ে ২টি রিঙ্া পাশাপাশি যেতে পারছে না। তার মধ্যে আবার আড়ত ব্যবসায়ীরা সড়কটির দু'পাশে কাঁচা মালামাল রাখায় সড়কটি দিয়ে চলাচল খুবই দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। চাঁদপুরকে ব্র্যান্ডিং জেলা ও ক্লিন চাঁদপুর গ্রীন চাঁদপুর রূপ দিতে পৌর কর্তৃপক্ষ শহরের বিভিন্ন স্থানের রাস্তা প্রশস্ত করেছে এবং করে যাচ্ছে। সব সড়ক প্রশস্ত করা হলেও শহরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বকুলতলা সড়কটি প্রশস্ত করা একান্ত প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
এ সড়কের পাল বাজারের প্রবেশ মুখ লাগোয়া যে স্থাপনা রয়েছে, তা বিগত মালিক আঃ রহমানের ওয়ারিশরা মোঃ বাদশা ভূঁইয়া ও ফারুক ট্রেডার্সের মালিক ফারুক মিজির কাছে বিক্রি করে দেন। সে স্থানে এখন বাদশা ভূঁইয়া পূর্বের দেয়াল ভেঙ্গে নতুন করে আরসিসি পিলার দিয়ে সড়কটির আরো বেশি অংশ দখল করে বিল্ডিং করার পাঁয়তারা করছেন বলে পালবাজারের ব্যবসায়ী ও বকুলতলাবাসী অভিযোগ করে পৌর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে। এভাবে বিল্ডিং করলে সড়কটি আরো সঙ্কুচিত হয়ে যাবে। এ কাজটি যেনো বাদশা ভূঁইয়া না করতে পারেন সে জন্যে পৌর মেয়রের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বকুলতলাবাসী। এলাকাবাসী ক্ষোভের সাথে বলেন, বকুলতলা সড়কটি প্রশস্ত না থাকায় পালবাজার তথা এ এলাকার আবাসিক বাসা-বাড়িতে অগি্নকান্ডের ঘটনা ঘটলে এ সড়ক দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশ করতে পারবে না। তাতে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যাবে। গত ক মাস পূর্বে পালবাজারে ভয়াবহ অগি্নকান্ডের ঘটনা ঘটেছিল। তখন ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ভেতরে প্রবেশ করতে না পারায় বাজারের প্রায় ৩০টি দোকান আগুনে ভস্মীভূত হয়ে ব্যবসায়ীদের কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতিসাধিত হয়। চাঁদপুর পৌর কর্তৃপক্ষ জনগুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এ সড়কটি প্রশস্ত করবে বলে এলাকাবাসীর দাবি।
এ ব্যাপারে মোঃ বাদশা ভূঁইয়ার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, কয়েক কোটি টাকা দিয়ে সম্পত্তি কিনেছি। পূর্বে যেখানে বাউন্ডারি ছিল সেখান থেকে মাপ দিয়ে পৌরসভা থেকে প্ল্যান পাস করার জন্যে জমা দিয়েছি। অনুমতি পেলে সে অনুযায়ী বিল্ডিং করবো। সড়ক প্রশস্ত করা হলে পৌরসভা কি আমাকে সম্পত্তির টাকা দিবে?
সূত্র : চাঁদপুর কণ্ঠ