• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

প্রথম মেজর জেনারেল মতলব উত্তরের এম শামসুল হক ॥ এবার সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ

প্রকাশ:  ২১ জুন ২০১৮, ০৮:১৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 বৃহত্তর কুমিল্লার প্রথম মেজর জেনারেল মেজর জেনারেল (অবঃ) এম শামসুল হক ছিলেন মতলব উত্তর উপজেলার কৃতী সন্তান। তিনি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী। তিনি ১৯৩১ সালের ১ সেপ্টেম্বর মতলব উত্তর উপজেলার সুগন্ধি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এবার সেনাবাহিনী প্রধান হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত আজিজ আহমেদের পৈত্রিক বাড়িও মতলব উত্তর উপজেলার টরকী গ্রামে।
    এম শামসুল হক ১৯৫৬ সালে এমবিবিএস পাস করে একই সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৭১ সালে তিনি ঢাকা সেনানিবাসের ইস্ট পাকিস্তান এয়ারফোর্স ব্যাজে কর্মরত ছিলেন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ উপস্থিত থেকে শোনার পর তিনি অনুপ্রাণিত ও প্রত্যয়ী হয়ে উঠেন। ২৬ মার্চের পর ক্যান্টনমেন্ট থেকে পালিয়ে চলে যান গ্রামের বাড়িতে। এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে রাতের অন্ধকারে আগরতলা যান। সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। পরবর্তীতে জেনারেল ওসমানী সেনাবাহিনীর জন্য পৃথক মেডিকেল কোর সংগঠিত করতে স্কোয়াড্রন লিডার এম শামসুল হককে দায়িত্ব দেন। তিনি বাংলাদেশের প্রথম ডিজিএমএস নিযুক্ত হন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ১ নম্বর সেক্টরের অধীনে যুদ্ধ করেছিলেন।
    শামসুল হক ছিলেন বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর মেডিকেল কোরের প্রথম মহাপরিচালক। ১৯৭১ সালের নভেম্ব^র মাসে তাঁকে এ দায়িত্ব দেয়া হয়। ১৯৮২ সালের ২৬ মার্চ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে তিনি নিয়োগ পান। বাংলাদেশের ঔষধ শিল্প বিকাশের জন্যে যুগান্তকারী পদক্ষেপ ড্রাগ অর্ডিন্যান্স অ্যাক্ট ১৯৮২ প্রণয়নে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অনস্বীকার্য।
    বিজয় অর্জিত হওয়ার পর তিনি ২২ ডিসেম্বর দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। ৫ এপ্রিল ১৯৮২ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় ১১ বছর ডিজিএমএস-এর দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৮২ সালের মার্চ মাস থেকে ডিসেম্বর ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৯ বছর বিভিন্ন সময়ে তিনি স্বাস্থ্য, পরিকল্পনা, সমাজকল্যাণ, বাণিজ্য, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন। তাঁর কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ঢাকা সেনানিবাসের আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ (এএফএমসি) অডিটোরিয়ামের নতুন নামকরণ করা হয়েছে ‘মেজর জেনারেল এম শামসুল হক অডিটোরিয়াম’।
    ২০১৫ সালের ২১ নভেম্বর এই মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যুবরণ করেন। আর এর মধ্য দিয়ে মতলবের কৃতী সন্তান শামসুল হকের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনের অবসান ঘটে। তিনি দুই ছেলে ও দুই মেয়ের জনক। তাঁর বড় ছেলে জোনারেল ফার্মাসিউটিক্যালস্-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাঃ মোঃ মমিনুল হক ও ছোট ছেলে শিল্পপতি মোঃ আনিসুল হক।