• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ সুন্দরীদের নিয়ে বিতর্কের গুমর ফাঁস হচ্ছেই

প্রকাশ:  ০৬ অক্টোবর ২০১৭, ১৫:৫৩
বিনোদন প্রতিবেদক
প্রিন্ট

মিস ওয়ার্ল্ডের মতো সুন্দরী প্রতিযোগিতার আন্তর্জাতিক আসরে যোগ দেওয়া যে কোনো দেশের জন্যই গৌরবের। আর সে কারণে যে প্রতিযোগী একটি দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন তাকে যাচাই-বাছাই করা হয় নানা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে।

প্রতিযোগিতার প্রধান কিছু শর্ত পালন-সাপেক্ষে সৌন্দর্য, শিক্ষা, মানবিকতা ও দেশকে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপনের যোগ্যতা থাকতে হবে সেই প্রতিযোগীর মধ্যে। কিন্তু গৌরবময় এমন আন্তর্জাতিক আসরে যোগদানের আগে বাংলাদেশের প্রতিযোগী নির্বাচনে প্রথম থেকেই শুরু হয়েছে নানা বিতর্ক। আর এ বিতর্ক যেন কিছুতেই থামছে না, বরং সময়ের ব্যবধানে বেরিয়ে আসছে নানা গুমর। 

গ্র্যান্ড ফিনালেতে যাকে মুকুট পরিয়ে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল এর মধ্যে আবার তার পদবি ও মুকুট ফিরিয়ে নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। বিয়ের তথ্য গোপন করার অভিযোগে বিজয়ীর মুকুট ফিরিয়ে নিয়ে ৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে নতুনভাবে ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ নির্বাচিত করা হয়। এবার মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ হিসেবে নির্বাচিত হন জেসিয়া ইসলাম। এই প্রতিযোগিতা নিয়ে শোরগোল এখানেই হয়তো থেমে যেতে পারত। কিন্তু না, বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না। প্রতিযোগিতার ফাইনাল রাউন্ড ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে কলকাতা সুন্দরী ও মডেল শিনা চৌহানের উপস্থাপনায় প্রথম নির্বাচিত ঘোষণা করা হয় জান্নাতুল সুমাইয়া হিমিকে। 

কিন্তু হঠাৎ করে অন্তর শোবিজের কর্ণধার স্বপন চৌধুরী মঞ্চে সবার সামনে এসে অন্য প্রতিযোগীর নাম ঘোষণা করেন। তার ঘোষণায় বিজয়ী হন জান্নাতুল নাঈম এভ্রিল। তার এ ঘোষণায় উপস্থিত বিচারকসহ সবাই স্তম্ভিত হয়ে যান। এর পর থেকেই এই ইস্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সব মিডিয়ায় জল ঘোলা হতে থাকে। বেরিয়ে আসে নানারকম মুখরোচক তথ্য। পক্ষে-বিপক্ষে চলে তুমুল আলোচনা। 

সমালোকদের মুখে ছাই চাপা দিতে আয়োজক কমিটি দ্বিতীয়বার সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনে বিজ্ঞ বিচারকদের সম্মতিক্রমে নতুনভাবে জেসিয়া ইসলামকে পরানো হয় ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’-এর মুকুট। কিন্তু আগের প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার-আপ হিমিকে বাদ রেখে জেসিয়াকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। সঙ্গে রানার-আপ হিসেবে যোগ হন ফাতেমা তুজ জাহরা মিতু। এদিকে সপ্তাহজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে এভ্রিল ছিলেন সবচেয়ে আলোচিত নাম। বিজয়ী হওয়ার পর গণমাধ্যমে উঠে আসে তার বিয়ে, বিচ্ছেদসহ নানা খবর। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ফেসবুক লাইভে এসে বিয়ে ও বিচ্ছেদের কথা স্বীকার করে নেন তিনি। তবে তার দাবি, সে সময় বয়স কম থাকায় মতের বিরুদ্ধে বিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাকে। আর এ বিষয়টিই প্রতিযোগিতার প্রধান শর্ত ভঙ্গের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। 

গুঞ্জন এখানেই শেষ নয়, সম্প্রতি তথ্য প্রকাশ হয়েছে যে, নতুন ঘোষিত দ্বিতীয় রানার-আপ রুকাইয়া জাহান চমক, সঞ্চিতাসহ আরও চার-পাঁচ জন আছেন বিবাহিতা। এত কিছুর পরও গুজব যেন এভ্রিলের পিছু ছাড়ছে না! বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এভ্রিল আত্মহত্যা করেছেন বলে একটি খবর ভাইরাল হয়। কিন্তু একে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন এভ্রিল নিজেই। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আত্মহত্যা করার মতো কিছু হয়নি। অনেক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে আমি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছি। সাফল্য ও ব্যর্থতা দুটিতেই আমি অভ্যস্ত। হতাশ হয়ে আত্মহত্যা করার মতো মেয়ে আমি নই। দয়া করে কেউ আমাকে নিয়ে কোনো মিথ্যা গুজব ছড়াবেন না। আমি ভালো আছি, আমি এখনো বেঁচে আছি। ’

মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশকে ঘিরে শুধু প্রতিযোগীরাই নন, অভিযোগের তীর থেকে বাঁচতে পারেনি আয়োজক কমিটিও। অন্তর শোবিজের কর্ণধার প্রতিযোগিতার মধ্যমণি স্বপন চৌধুরী প্রথম থেকেই ছিলেন বিতর্কিত। তার বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে অনেক। তার মধ্যে অন্যতম অভিযোগ হলো, বিচারকদের বিচারকাজে প্রভাবিত করা। একটি জাতীয় দৈনিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্বপন স্বীকার করেন, গ্র্যান্ড ফিনালে বিচারের সময় তিনি বিচারকদের চিরকুট দিয়েছিলেন। তবে এটা মোটেও তাদের বিচারকাজকে প্রভাবিত করার জন্য নয় বলে তিনি দাবি করেন। ‘আমি চিরকুট দিয়ে তাদের বলতে চেয়েছি, এই তিনজন আগের রাউন্ডগুলোয় এগিয়ে আছে, আপনারা ওদের একটু দেখবেন। আমার তো গোপন করার মতো কিছু নেই। যদি বলা হয়, জান্নাতুল নাঈমকে আমি প্রথম করতে চেয়েছি তাহলে বলব, কেন? এমন নয় যে আমি টাকা নিয়ে এ কাজ করেছি। তার বাবার কোটি টাকা নেই! কেউ বলতে পারবে না আমি টাকা খেয়েছি। ’ যত বিতর্কই হোক না কেন, বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে ৬৭তম আন্তর্জাতিক মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় জেসিয়াই যাচ্ছেন।