রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ে, দম্পতি আত্মগোপনে
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় রাফিজা আক্তার (১৮) নামে এক রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ে করেছেন শোহেব হোসেন জুয়েল নামে এক যুবক। জুয়েল চারিগ্রাম দাসের হাটি গ্রামের বাবুল হোসেনর ছেলে। এছাড়া জুয়েল কোরআনে হাফেজ বলে জানা গেছে। তবে বিয়ে করে প্রশাসনের ভয়ে আত্মগোপন করে আছে এ নব দম্পতি।
জুয়েলের বাবা বাবুল হোসেন বলেন, মেয়ের বড় ভাই ও মায়ের উপস্থিতিতেই এ বিয়ে হয়েছে। তবে পুলিশ বাড়িতে এসেছিল ওদের খোঁজে তাই ওরা বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র গেছে। এখন ওদের মোবাইল ফোন বন্ধ ফলে যোগাযোগ করতে পারছি না। সরকার স্বীকৃতি দিলে বৌ মেনে নিব।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর উপজেলা ধল্লা এলাকায় মাওলানা ফিরোজ মুন্সি ওরফে সিরাজুল হকের বাড়িতে ১১ এবং চারিগ্রাম দাসের হাটি গ্রামে মাওলানা তাজুল ইসলামের বাড়িতে ৯ জন রোহিঙ্গা অশ্রয় নেয়। খবর পেয়ে উভয় বাড়ি থেকে ২০ রোহিঙ্গাকে আটক করে টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেয় পুলিশ। চারিগ্রাম দাসের হাটি গ্রামে আশ্রিতা রোহিঙ্গা তরুণী রাফিজার সঙ্গে শোহেব হোসেন জুয়েলের ওই সময় দেখা হয়। এরপর থেকে তাদের যোগাযোগ এবং ভালোবাসা পর্যন্ত গড়ায়। কিন্তু স্থানীয়ভাবে বিয়ে করতে না পেরে জুয়েল ছুটে যান টেকনাফের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। সেখানে গিয়ে তিনি রাফিজাকে বিয়ে করেন।
এদিকে গত ২০ সেপ্টেম্বর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে শিক্ষক ও অভিভাবকরা যান রোহিঙ্গাদের ত্রাণ দিতে। ত্রাণ দেয়া শেষে তারা ২৩ সেপ্টেম্বর বাড়ি ফেরেন তারা। সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন এবং থানা আওয়ামী লীগ নেতা এ আর রহমান খান বলেন, সিট খালি থাকায় বোরকা পড়া অবস্থায় মেয়েটি আমাদের গাড়িতে করে ওই ছেলের সঙ্গে পেছনের সিটে বসে। তবে বোরকা থাকায় আমরা তাকে দেখতে চাইনি এবং গুরুত্বও দেইনি। পড়ে জানতে পারলাম গাড়িতে রোহিঙ্গা বউ আছে।
চারিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাজেদুল আলম স্বাধীন বলেন, আত্মীয়তার সূত্র ধরে প্রথমে আওয়ামী লীগ নেতা আজিমপুর গ্রামের ওবায়দুল হকের বাড়িতে আশ্রয় নেয় ওই নব দম্পত্তি। এছাড়া ওবায়দুল ওদের বিয়ের উকিল হয়েছে বলে শোনেছি। ওবায়দুল হকের ভাই কৃষক জনতা শ্রমিক লীগের থানা সভাপতি আয়নাল হক বলেন, আমার ভাই ওবায়দুলের ভায়রার ভাতিজা শোয়েব হোসেন জুয়েল। সেই হিসেবে আমাদের বাড়িতে দুই রাত থেকে এখন সাভার এলাকাতে বাসা নিয়ে থাকছে।
তবে ওবায়দুল হক বলেন, আমি ওদের চিনি না এবং উকিলও হয়নি। হয়তো শেল্টার মনে করে তারা আমার নাম বলেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. যুবায়ের বলেন, শেনেছি এক নেতার ছত্রছায়ায় ওরা এ বিয়ে করেছে। এখন ওরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আমি বলেছি পুলিশকে ওদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে। ওসি খোন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, রোহিঙ্গাকে বিয়ের খবরটি আমিও শোনেছি এবং পুলিশ পাঠিয়েছি ওদের ধরে আনতে। কিন্তু বাড়িতে কেউ নেই।