• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

বড় দুর্যোগে ৭ ঝুঁকিতে ব্যাংকিং খাত

প্রকাশ:  ০৫ অক্টোবর ২০১৭, ১৭:৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

বড় ধরণের দুর্যোগে সাত ধরণের ঝুঁকিতে রয়েছে দেশের ব্যাংকিং খাত। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং খাতে দুর্যোগে ঋণ, নিরাপত্তা, তারল্য, সুদের হার, দক্ষতা সংকট, সুনাম এবং সামষ্টিক অর্থনীতি ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। এজন্য এখনই ভবিষ্যত দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিতে হবে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে এক সেমিনারে ‘অ্যাড্রেসিং  ডিজেস্টার রিস্ক বাই ব্যাংকস বাংলাদেশ পারসপেক্টিভ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ড. শাহ মো:আহসান হাবীব। সেমিনারে ‘ইমপ্যাক্ট অব এডোপটিং ব্যাসেল অ্যাকর্ড ইন দ্য ব্যাংকিং সেক্টর অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক আরও একটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের অধ্যাপক মো নেহাল আহমেদ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান। সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিচালক (গবেষণা উন্নয়ন ও কনসালটেন্সি) ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জ্জী।

‘অ্যাড্রেসিং  ডিজেস্টার রিস্ক বাই ব্যাংকস বাংলাদেশ পারসপেক্টিভ’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বড় ধরণের দুর্যোগে ব্যাংকে কি পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হবে তার তথ্য ব্যাংকের কাছে নেই। ব্যাংকগুলোর এ তথ্য সংরক্ষণে অনীহা। আমানত, বিনিয়োগ প্রভাব এ সম্পর্কে ব্যাংকিং খাত কোনো তথ্য সংরক্ষণ করে না। যাবতীয় কৃষি ঋণ বিতরণে বীমার আওতায় আনতে হবে। এতে আরো বলা হয়েছে, দুর্যোগ মোকাবেলায় ব্যাংকগুলোকে ভবিষ্যত পরিকল্পনা করতে হবে বলে ৪৭ শতাংশ ব্যাংকার মত দিয়েছেন। ১৭ শতাংশ ব্যাংকার জানিয়েছেন সচেতনতা প্রয়োজন। 

এদিকে ‘ইমপ্যাক্ট অব এডোপটিং ব্যাসেল অ্যাকর্ড ইন দ্য ব্যাংকিং সেক্টর অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শক্তিশালী ব্যাংকিং ব্যবস্থার জন্য ব্যাসেল-৩ অনুযায়ী পুঁজি সংরক্ষণ জরুরী। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর বলেন, বাংলাদেশের মতো দেশে দুর্যোগে ব্যাংকিং খাত থমকে যায়। প্রায়ই সুদ মওকুফ, ঋণ পুন:তফসিল করতে হয়। এ কারণে বিরূপ প্রভাব পড়ে। ব্যাংকিং খাত অনেক অসুবিধার মধ্যে পড়ে। ২০১৫ সালের রাজনৈতিক গোলযোগেও ব্যাংকিং খাত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

তিনি বলেন, ব্যাসেল-৩ বাস্তবায়ন পর্যায়ে রয়েছে। ২০১৬ থেকে ব্যাসেল-৩ বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এটি ২০১৯ সালের মধ্যে পুরোপুরি বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বিআইবিএমের গবেষণায় পাওয়া সুপারিশ গুলো ব্যাসেল-৩ কাজে আসবে। বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক এবং পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্যাসল-৩ বাস্তবায়নে ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদকে সচেতন হতে হবে। বোর্ডকে প্রত্যেকটি ধাপ বোঝানোর দায়িত্ব টপ ম্যানেজমেন্টের।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি বলেন, ব্যাংকিং খাতে কিছু ক্ষেত্রে অস্থিরতা চলছে। হঠাৎ ব্যাংক কর্মীদের ছাঁটাই করা হচ্ছে। আবার অন্য খাতের লোকজনকে বড় বেতনে ব্যাংকে সিনিয়র পদে বসানো হচ্ছে। এটি ব্যাংকিং খাতের জন্য ভালো খবর নয়। মেঘনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুল আমীন বলেন, ব্যাংকিং খাতে সুশাসনটা জরুরী। খুব তাড়াহুড়া না করে পরিকল্পনা তৈরি করে ব্যাচেল-৩ সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনজুর আহমেদ বলেন, রাষ্ট্রায়াত্ত্ব ব্যাংকগুলো ধীরে ধীরে ভালো অবস্থানে ফিরছে। বিডিবিএল ১০ কোটি টাকা লভ্যাংশ দিয়েছে সরকারকে। বড় দুর্যোগে ব্যাংকিং খাতের ঝুঁকি এড়াতে বীমার আওতায় আনার ওপর জোরারোপ করেন। সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহমুদ ওসমান ইমাম।

সর্বাধিক পঠিত