• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

সাবেক স্বামীর বক্তব্যে ক্ষুব্ধ বাঁধন যা বললেন

প্রকাশ:  ০৪ অক্টোবর ২০১৭, ১৭:২৮
বিনোদন প্রতিবেদক
প্রিন্ট

মাশরুর সিদ্দিকী সনেটের সঙ্গে জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনের বৈবাহিক সম্পর্কের ইতি ঘটেছে আগেই। একমাত্র সন্তানকে নিজের কাছে রাখার অধিকার চেয়ে পারিবারিক আদালতে গত ৩ আগস্ট মামলা করেন তিনি। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বাঁধন যেমন বক্তব্য দিয়েছেন একইভাবে তার সাবেক স্বামী মাশরুর সিদ্দিকী সনেটও কথা বলেছেন। তবে সনেটের বক্তব্য সম্মানহানী করেছে বলেই দাবি করেছেন এ অভিনেত্রী। বাঁধন তার সাবেক স্বামীর বক্তব্যের প্রতিবাদে একটি বিবৃতি পাঠিয়েছেন। বাঁধনের সেই বক্তব্য তুলে ধরা হলো।

“গত কয়েকদিনে অনলাইন, সংবাদপত্রসহ কিছু গণমাধ্যমে আমাকে নিয়ে মাশরুর সিদ্দিকী সনেটের বিভিন্ন কুৎসামূলক মন্তব্যকে উপজীব্য করে খবর প্রকাশিত হয়েছে। সেগুলো আমার চোখে পড়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কিছু কথা বলা প্রয়োজন মনে করছি।

আসলে এসব প্রতিবেদনে সনেটের যেসব উদ্ধৃতি উল্লেখ রয়েছে তা দেখে আমি স্তম্ভিত ও হতবাক হয়ে গেছি। এমন মিথ্যাচার ও নোংরামি করা কিভাবে সম্ভব কোনও সভ্য মানুষের পক্ষে? কোনও ব্যক্তি, বিশেষ করে কোনও নারীর প্রতি এত অকথ্য, আপত্তিকর ভাষায় এমন অভব্য আক্রমণ! এতদিন আমি ও আমার মেয়ের প্রতি মাশরুর সিদ্দিকী সনেট যে অবহেলা ও দায়িত্বহীনতা দেখিয়েছেন, আমাকে যেভাবে নিগ্রহ করেছেন, আমার সঙ্গে যেসব নির্যাতনমূলক আচরণ করে এসেছেন, আমার বাবা-মা-ভাইসহ আমাদের পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদেরকে যে ধরনের উদ্বেগ ও আতঙ্কের মধ্যে রেখেছেন, মা হিসেবে শুধু আমার মেয়ের মানসিক দিকের কথা ভেবে সেইসব বিষয়গুলো সবসময় চেপে গিয়েছি। মেয়েটিকে সামাজিক অবজ্ঞা বা বিদ্রুপের মুখে পড়তে হবে এই ভয়ে দাম্পত্য সম্পর্ক রক্ষা করতে চেয়েছি। এমনকি তার কাছ থেকে বিয়েবিচ্ছেদের নোটিশ পাওয়ার পরও সম্পর্কটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করেছি।

কিন্তু গণমাধ্যমে সনেট আমাকে নিয়ে যা যা বলছেন বলে জানতে পারছি, তা শুধু অরুচিকর ও স্থূলই নয়, একই সঙ্গে ভয়াবহ নিষ্ঠুরও বটে। কেননা তিনি যে চরিত্রহননের মাধ্যমে আমাকে দুর্বল করে দিয়ে আমাকে আমার মেয়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করার উদ্দেশে এসব করছেন, তা ইতোমধ্যেই স্পষ্ট হয়ে গেছে। তিনি ও তার বর্তমান স্ত্রী দু’জনের কাছ থেকে আমার মেয়েকে আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার হুমকি পেয়েছি। যে কোনও সময় আমার মেয়েকে অপহরণ করা হতে পারে, এমন আতঙ্ক আমাকে গ্রাস করছে। তাছাড়া তারা আমার সঙ্গে ও গণমাধ্যমে আমাকে নিয়ে যে কথাবার্তা বলেছেন, তাতে আমার মেয়ের নিরাপত্তা নিয়ে আমার মধ্যে তীব্র শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

মাশরুর সিদ্দিকী সনেট শুধু আমার প্রতি অমর্যাদাকর মন্তব্য করেই ক্ষান্ত হননি, তিনি গোটা সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিবর্গকে ঢালাওভাবে হেয় করেছেন। আপনারা জানেন, তিনি যেভাবে আমাকে লক্ষ্য করে যেসব কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন, তার আইনি প্রতিবিধান রয়েছে। তবে সেই পথ খুঁজতে চাইনি।

একজন সংস্কৃতিকর্মী বা গণমাধ্যমের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যক্তি হিসেবে নয়, একজন সাধারণ মানুষ বা একজন বিপন্ন নারী হিসেবেই এ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণে আপনাদের কাছ থেকে সাহায্য চাই। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি— ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্রের কাছ থেকে অন্তত নৈতিক সমর্থনটুকু পাবো। আমার সুহৃদ ও শুভাকাঙ্ক্ষী যারা আছেন, গণমাধ্যমে এখন পর্যন্ত আমার নীরবতার সুযোগে একপক্ষের প্রচারিত মিথ্যায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ রাখছি। তাদের জানিয়ে রাখতে চাই, আমার মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার হুমকি পাওয়ার পর আইনানুগ রাস্তায় হাঁটা ছাড়া আমার হাতে কোনও সভ্যবিকল্প ছিল না। এ বিষয়ে অবশেষে একটি মামলা দায়ের করেছি। এতদিন আমার মুখ বুঁজে সব সয়ে যাওয়ার সুযোগে সনেট যেভাবে আমার নারীত্বের অবমাননা করে চলেছেন, আমার মেয়েকে মাতৃস্নেহ বঞ্চিত করার পাঁয়তারা করছেন, বাধ্য হয়ে সে বিষয়গুলো আপনাদের জানিয়ে রাখার প্রয়োজন বোধ করছি।

আপনাদের বলতে চাই, এ পর্যন্ত বিয়েসহ বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য গোপন করাসহ ধারাবাহিকভাবে যেভাবে সনেট মিথ্যার ওপর ভর করে এসেছেন, আমার বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে দেওয়া তার কথাগুলো আরেকটি নজির মাত্র। জোরপূর্বক মধ্যরাতে আমাদের বাড়িতে অনুপ্রবেশ করে আমার পরিবারের সদস্য, প্রতিবেশী ও আমার ওপর আক্রমণ চালিয়ে উল্টো তিনি আমাদের নামেই মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছেন। এখনও আমার মেয়ের পাসপোর্ট আটকে রেখেছেন সনেট।

এই পরিস্থিতিতে আমার গণমাধ্যমের বন্ধুরা সত্যনিষ্ঠার অঙ্গীকারের প্রতি দায়বদ্ধতাকে সমুন্নত রেখে এ বিপন্নতা থেকে আমাকে উদ্ধারে এবং আমার কন্যার নিরাপদ ভবিষ্যতটুকু রক্ষায় সবসময়ের মতোই আমাদের পাশে এসে দাঁড়াবেন বলে আমি প্রত্যাশা করি।”

এদিকে বেশ কয়েকটি অনলাইন পত্রিকায় সনেট কথা বলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি বাঁধনকে বিয়ে করবো শুনে তার কাজিন (যে আমাকে তার সঙ্গে পরিচয় করায়) অনুরোধ করে বিয়েটা যেন না করি। বাঁধন লোভী মেয়ে, তার মধ্যে ঝামেলা আছে। কিন্তু এসব শুনিনি। শোবিজে কাজ করে এমন অনেক পরিচিত লোক আমাকে না করেছিল বিয়েটা না করতে। বিয়ের পর সে আমাকে বিভিন্নভাবে মানসিক অত্যাচার করতে থাকে। তার সব খরচ দেওয়ার পরও সে প্রতি মাসে হাত খরচের জন্য ১ লাখ টাকা চাইতো আমার কাছে। আমি দিয়েছিও অনেকদিন। মাসের ২ তারিখের মধ্যেই টাকাটা দিতে হতো। নইলে চিৎকার চেঁচামেচি করতো সে।’

সর্বাধিক পঠিত