• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ঢাবিতে নিজের বসার জায়গা নিয়ে বিপাকে আরেফিন সিদ্দিক

প্রকাশ:  ০৩ অক্টোবর ২০১৭, ২১:১৫
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রিন্ট

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ২২৯ নম্বর রুমে অফিস শুরু করেছেন ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। ওই রুমটি অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া নিয়ম না মেনে বরাদ্দ দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আরেফিন সিদ্দিককে রুম বরাদ্দ দেয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অনুষদের শিক্ষকরা। তাদের অসন্তোষের বিষয়টি বর্তমান ডিন ড. সাদেকা হালিমকেও জানানো হয়েছে।

শিক্ষকদের অভিযোগ, ২২৯ নম্বর রুমটি সাবেক সাইবার সেন্টার ছিল। কোনো নিয়ম না মেনেই ওই রুম বরাদ্দ নিয়ে সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিস সিদ্দিক সেখানে অফিস করছেন। রুমের সামনে বড় টেবিল ও চার-পাঁচটি চেয়ার নিয়ে গানম্যান, স্টাফসহ অন্যরা বসে থাকায় ডিন অফিসের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে ক্ষুব্ধ শিক্ষদের দাবি। শিক্ষকদের অসন্তোষের মুখে ডিন সাদেকা হালিম ওই রুমের সামনে ‘গ্যাদারিং না করতে’ আহ্বান জানিয়েছেন।

অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, আমি রুমে ছিলাম। তখন রুমের সামনে থাকা স্টাফ এবং গানম্যানকে ডিন জানান একটি চেয়ার রেখে বাকি চেয়ার ছেড়ে দিতে।

এ সময় আপনি কিছু বলেছেন কি না জানতে চাইলে আরেফিন সিদ্দিক বলেন, আমি কিছু বলিনি।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, ওই রুমের সামনে একটি বড় টেবিল ও চারপাশে চার-পাঁচটা চেয়ার ছিল। অনুষদের শিক্ষকরা ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে এখন ব্যস্ত। তারা চাচ্ছেন এখানে (ডিন অফিস) সুন্দর-নিরিবিলি পরিবেশ থাকুক। কেউ চাচ্ছেন না কোনো শিক্ষক গানম্যান নিয়ে বসে থাকুক। আমরা চেয়েছিলাম নিরাপত্তার স্বার্থে গানম্যানের জন্য একটা চেয়ার থাকুক। কিন্তু ওখানে অনেকগুলো চেয়ার নিয়ে গ্যাদারিং করলে তো সমস্যা। তাই বলা হয়েছে, যে গানম্যান চেয়ার নিয়ে থাকুক, কিন্তু অনেকগুলো চেয়ার নিয়ে গ্যাদারিং যেন না হয়।

ডিন অফিসের সাইবার সেন্টার পরিবর্তন করে সাবেক উপাচার্যকে রুম বরাদ্দের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, প্রশাসনিক বিষয়ে আমি যতটুকু জানি যে, ডিনের অফিসে অন্য কোনো শিক্ষককে কক্ষ বরাদ্দ দেয়া হয় না। এখানে শুধু ডিন এবং স্টাফরাই বসেন। এখানে ইউনিট সম্পর্কিত অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ হয়। কিন্তু আমার আগে যিনি ডিন ছিলেন তিনি সাবেক উপাচার্যকে রুমটি বরাদ্দ দিয়েছেন। এটি একেবারেই তার নিজস্ব সিদ্ধান্তে দিয়েছেন। কিন্তু বিধি মোতাবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য সাবেক উপাচার্যরা যখন বিভাগে ফেরত গেছেন তখন তারা তাদের নিজস্ব রুমে বসেছেন। কেউ ডিন অফিসের কক্ষে যাননি।

তিনি বলেন, সকল বিভাগের চেয়ারপারসন তাদের শিক্ষকদের রুম বরাদ্দ দেন। আমি আশা করি, তারা অত্যন্ত সম্মানের সাথে তাদের বিভাগের শিক্ষকদের রুম বরাদ্দ দেবেন।

রুমটি নিয়ে কী ভাবছেন জানতে চাইলে সাদেকা হালিম বলেন, এ মুহূর্তে রুমটি নিয়ে ভাবছি না। আপাতত ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে। তবে রুমটি এখানে না রাখার জন্য আমাদের অনুষদের শিক্ষকরা চাচ্ছেন। এই রুমটি যেহেতু সাইবার সেন্টার ছিল তাই তারা এটি ব্যবহার করতে চান।

এদিকে সাবেক উপাচার্যকে রুম বরাদ্দে অনিয়ম করা হয়নি বলে দাবি করেছেন অনুষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া। তিনি বলেন, কোনো শিক্ষক ডিনের কাছে রুম চাইলে ডিন যদি মনে করেন তার রুম পাওয়া দরকার তাহলে তিনি ওই শিক্ষককে রুম বরাদ্দ দিতে পারেন। এটা নিয়ম মেনেই হয়।

তিনি আরো বলেন, আমার অনুষদে স্পেস অ্যালটমেন্ট কমিটি আছে, তারা রুম বরাদ্দ দেন; এমন কোনো বিষয় আমার জানা নেই। তার দাবি কতিপয় শিক্ষক সাংবাদিকদের বিভ্রান্ত করছেন।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী কোনো শিক্ষকের রুমের প্রয়োজন হলে বিভাগীয় চেয়ারম্যান বরাদ্দ দেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের (প্রশাসন) নেতৃত্বে যে স্পেস অ্যালটমেন্ট কমিটি আছে তাদের মাধ্যমে বিভাগকে যে রুমগুলো বরাদ্দ দেয়া হয় সেগুলো থেকে চেয়ারম্যান রুম বরাদ্দ দিতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পেস অ্যালটমেন্ট কমিটিও আছে, তারা অন্য যে কোনো রুম বরাদ্দ দিয়ে থাকেন।

সর্বাধিক পঠিত