• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

বিএনপি নেতার পরকীয়া ঠেকাতে না পেরে স্ত্রীর আত্মহত্যা

প্রকাশ:  ০২ অক্টোবর ২০১৭, ২১:৫২
নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রিন্ট

স্বামীর পরকীয়া ঠেকাতে না পেরে দাম্পত্য কলহের জের ধরে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আব্দুস সাত্তার নান্নুর স্ত্রী সোহানা আখতার মিতু (৪০) অবশেষে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এমন ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে রোববার দিনগত রাতে। সোমবার সকালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

জানা গেছে, মহাদেবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার নান্নু দীর্ঘদিন ধরে তার এক সহকর্মীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি তার স্ত্রী সোহানা আখতার মিতু (৪০) জানতে পেরে স্বামীকে ওই পথ থেকে ফেরানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু নান্নু না-ছোড় বান্দা। প্রয়োজনে তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পরকীয়ার নায়িকাকে বিয়েও করতে চান। এনিয়ে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা দেয়।

এ নিয়ে দাম্পত্য কলহ যখন চরমে, ঠিক তখনী রবিবার দিনগত রাত ১০টার দিকে উপজেলা সদরের দুলাল পাড়াস্থ নিজ বাড়ির দোতলার সেলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন মিতু। রাত ১১ টার দিকে স্বামী আব্দুস সাত্তার নান্নু এবং তার শ্যালক হিরা দোতলা ঘরের দরজা ভেঙ্গে মিতুকে মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এ সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান আলাল চেয়ারম্যান পত্মীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার অনেক আগেই সোহানা আখতার মিতুর মৃত্যু হয়েছে। মিতুর গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।

মিতুর ভাই হিরা জানান, বিষয়টি নিয়ে বোন ও ভগ্নিপতির মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছিল বেশকিছুদিন থেকে। এই কলহের বিষয়টি মিমাংসার জন্য তিনি ওই দিন সন্ধ্যায় মহাদেবপুরস্থ তার ভগ্নিপতির বাসায় আসেন। কিন্তু মিমাংসার আগেই তার বোন আত্মহত্যা করে। এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার নান্নু সাংবাদিকদের বলেন, পরকীয়ার বিষয়টি গুজব এবং ভিত্তিহীন। তিনি একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং যে মেয়ের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তোলা হয়েছে তিনিও একজন জনপ্রতিনিধি। আর জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে এলাকার উন্নয়নে কথপোকথন হওয়াটাই স্বাভাবিক।

এ ব্যাপারে মহাদেবপুর থানার ওসি মিজানুর রহমান স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার নান্নুর সঙ্গে পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিসেস মর্জিনা আক্তারের পরকীয়ার অভিযোগ তুলে চেয়ারম্যানের স্ত্রী সোহানা আখতার মিতু তার স্বামীর সঙ্গে প্রায়দিন ঝগড়া বিবাদে জড়িয়ে পড়তেন। ওই জের ধরে এ দিন সন্ধ্যা থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে চরম ঝগড়া বিবাদ চলছিল।

এ খবর পেয়ে চেয়ারম্যানের শ্যালক হিরা বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য এ বাড়িতে আসেন। এরপর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু আগেই মিতু তাদের দোতালার শয়ন ঘরের সেলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না বেঁধে গলায় ফাঁস দেয়। এ ঘটনায় মহাদেবপুর থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে। লাশ হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সর্বাধিক পঠিত