ছাত্রলীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে চাঁদপুরে স্মরণকালের বৃহৎ সমাবেশ
আমাদের স্বাধীনতা-গণতন্ত্র-উন্নয়ন সবকিছুতেই ছাত্রলীগ ছিলো এবং আছে : শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি
গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদ্যাপন করেছে চাঁদপুর জেলা ছাত্রলীগ। এ উপলক্ষে গত ৪ জানুয়ারি চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি হাইস্কুল মাঠে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ ছাত্রসমাবেশ করে তারা। চাঁদপুরের মাটি ও মানুষের নেত্রী স্থানীয় সংসদ সদস্য ও শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির সার্বিক দিকনির্দেশনায় এটা ছিলো জেলা ছাত্রলীগের বিশাল শোডাউন। সমাবেশ শেষে বর্ণিল সাজে এবং ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে শহরে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র্যালি বের হয়।
এদিন দুপুরের পর শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাদের ইউনিটের ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে সমাবেশে যোগদান করেন। বিকেল পাঁচটার আগেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় হাসান আলী হাইস্কুল মাঠ। সেখানে মাঠ ছাপিয়ে নেতা-কর্মীদের রাস্তায় অবস্থান নিতে দেখা যায়।
বিশাল এ ছাত্রসমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জহির উদ্দিন মিয়াজীর সভাপ্রধানে ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের পরিচালনায় সমাবেশে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী, ডাঃ জেআর ওয়াদুদ টিপু, সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটোয়ারী, সাবেক ছাত্রনেতা অ্যাডঃ মজিবুর রহমান ভূঁইয়া প্রমুখ। সমাবেশে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের অসংখ্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সরব উপস্থিতি ছিলো সাবেক ছাত্রনেতাদেরও।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাঃ দীপু মনি এমপি বলেন, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। দেশ ভাগের পর তিনি বুঝতে পেরেছিলেন সেই স্বাধীনতা বাঙালির জন্যে প্রকৃত স্বাধীনতা ছিলো না। বাঙালিকে স্বাধীন করার লক্ষ্যে তিনি সর্বপ্রথম যে প্রতিষ্ঠানটি, যে সংগঠনটি করেছিলেন সেটি হলো ছাত্রলীগ। সেই ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আমাদের চাঁদপুরের কৃতী সন্তান ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদ, যিনি আমার এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডাঃ জাওয়াদুর রহমান টিপুর বাবা। তিনি ছাত্রলীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। সেই হিসেবে আমরা চাঁদপুরের মানুষ গর্ববোধ করতে পারি।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগের প্রথম কাউন্সিল ১৯৫৩ সালে যখন হয়, তখন তিনি নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এই ছাত্রলীগ ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের ভাষার অধিকার দিয়েছে। পুরো পাকিস্তানের সময় আন্দোলন-সংগ্রামের নেতৃত্বের ভূমিকায় ছিলো ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগ সবসময় মানুষের পাশে থেকেছে। আমাদের গণতন্ত্র-স্বাধীনতা-উন্নয়ন সবকিছুতেই ছাত্রলীগ ছিলো এবং আছে।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ছাত্রলীগ নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সামনের সারিতে থেকে তাদের দায়িত্ব পালন করেছে। এই বৈশ্বিক করোনার মধ্যে যেভাবে তারা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, মাঠে মাঠে ধান কেটে কৃষকের সহযোগিতা করেছে। যেভাবে তারা পরিবেশ রক্ষায় লক্ষ লক্ষ গাছের চারা রোপণ করেছে। আমার বিশ্বাস, ছাত্রলীগ দেশের উন্নয়ন ও মানুষের অধিকার সুরক্ষার কাজে আগামীদিনেও ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, চাঁদপুর জেলা ছাত্রলীগ অত্যন্ত সুসংগঠিত। প্রতিষ্ঠিতাবার্ষিকীর এইদিনে তিনি সংগঠনের সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। পাশাপাশি স্বাধীনতার পরাজিত অপশক্তির বিরুদ্ধে ছাত্রলীগকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।