ফরিদগঞ্জের রানীতিতে কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করার দাবি


ফরিদগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতির জুয়া খেলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরবর্তী ঘটনায় সাবেক এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ নেতাদের নিয়ে অপপ্রচার এবং কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধের দাবিতে গতকাল শনিবার দুপুরে ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠন সংবাদ সম্মেলন করেছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ম-লীর সদস্য ও সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ ’৭১ ফরিদগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ এম তবিবুল্ল্যা।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান নেতৃত্ব ও চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সাবেক এমপি ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়ার নেতৃত্ব গুণে ফরিদগঞ্জ উপজেলায় আজ আওয়ামী লীগের একটি শক্ত অবস্থান। কিন্তু এই শক্তিশালী অবস্থানকে নড়বড়ে করতে একটি চক্র উঠেপড়ে লেগেছে। দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনাসহ একের পর এক হেনস্তা করার ঘটনা ঘটছে। গত ৩১ অক্টোবর রাতে ফরিদগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বিআরডিবির বর্তমান চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেন রতন সরকারি নিজ দপ্তরে জুুয়া খেলা অবস্থায় পুলিশের হাতে সঙ্গী জুয়াড়িসহ আটক হন। পরবর্তীতে পুলিশ তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে আদালতে প্রেরণ করে। কিন্তু পরবর্তীতে গত ৫ নভেম্বর পৌর আওয়ামী সভাপতি সংবাদ সম্মেলন করে সাবেক এমপি ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারীকে এ ঘটনার জন্য দায়ী করেন। একই সাথে গত ১১ নভেম্বর যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় স্থানীয় এমপির উপস্থিতিতে পৌর মেয়র একইভাবে আওয়ামী লীগের ওই দুই নেতা এবং উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অশালীন কথা বলেন। যা অনভিপ্রেত। ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের ঐক্য ধরে রাখার ক্ষেত্রে এটি একটি অশনি সংকেত বলে আমরা মনে করি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, আবুল খায়ের পাটওয়ারী বিআরডিবির সভাপতি থাকাকালীন সমিতির জায়গা দখল মুক্ত করে পরিত্যক্ত ভূমিতে মার্কেট নির্মাণ করেছেন। সেই ভূমির একটি ভাঙ্গাচুরা ঘর তার স্ত্রীর নামে বরাদ্দ নিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় অফিস করেছেন। যেখানে আজ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নিজস্ব অফিস করতে পারে নি, সেখানে আবুল খায়ের পাটওয়ারী দলের জন্যে এই অবদান নিয়ে গর্ব করার পরিবর্তে তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনায় ব্যস্ত একটি চক্র।
সাবেক এমপি ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনকে শক্তিশালী করেছেন। উপজেলার অনেক উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছেন। তাই তাদের নিয়ে অযথা অপপ্রচার করার কোনো মানে নেই।
লিখিত বক্তব্যের পর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাহেদ সরকার বলেন, যুবলীগের আলোচনা সভায় পৌর মেয়র মাহফুজুল হক জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও গণপরিষদ সদস্য মরহুম অ্যাডঃ সিরাজুল ইসলামকে নিয়ে কথা বলার সাহস দেখায় কী করে। তাও বর্তমান সংসদ সদস্যের উপস্থিতিতে। তিনি বলেন, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৪জন কৃতী সন্তান চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাই তাদের নিয়ে মন্তব্যকারী ব্যক্তি মানসিক বিকারগ্রস্ত ছাড়া আর কিছুই নয়।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার সহিদ উল্যা তপাদার বলেন, বর্তমানে ফরিদগঞ্জে আওয়ামী লীগ নিধন অভিযান চলছে। আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের ইচ্ছা করে হয়রানি করা হচ্ছে। মূলপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
পরে সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে নেতৃবৃন্দ জানান, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতির জুয়া খেলার সময় আটকের ঘটনার বিষয় আওয়ামী লীগের পরবর্তী সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। একই সাথে জানান, দলীয় নেতাদের নিয়ে মিথ্যাচারের বিষয় ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দকে অবহিত করা হবে। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল খায়ের পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু সাহেদ সরকার, যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর হোসেন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার শহিদ উল্যা তপাদার, ডেপুটি কমান্ডার সরোয়ার হোসেন, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান হাবিব নেভী, উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সামাদ মিন্টু, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ সহিদ, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক জাহেদুল ইসলাম বাবুল, প্রচার সম্পাদক সুলতান আহমেদ রিপন, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক কামাল পাঠান, পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জসিম পাটওয়ারী, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহবুব আলম সোহাগ, পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।