কর বাড়ল সম্পদশালীদের, নারীদের ছাড়
নতুন অর্থবছরে (২০২১-২২) রাজস্ব আয় বাড়াতে সম্পদশালীদের সারচার্জের স্ল্যাব পুনর্গঠন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ বাড়াতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি নারী উদ্যোক্তাদের বার্ষিক লেনদেনে কর ছাড় দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরেন। এটি অর্থমন্ত্রী হিসেবে তার তৃতীয় বাজেট। আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ১৩তম বাজেট।
নতুন অর্থবছরের এ বাজেটে সারচার্জে স্তর পাঁচটিতে নামিয়ে এনে ন্যূনতম সারচার্জ প্রথা বাতিল করা হয়েছে। বাজেটের প্রস্তাব অনুযায়ী, ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত সম্পদের সারচার্জ দিতে হবে না। ৩ কোটি থেকে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত ১০ শতাংশ, ১০ কোটি থেকে ২০ কোটি টাকা পর্যন্ত ২০ শতাংশ, ২০ কোটি থেকে ৫০ কোটি পর্যন্ত ৩০ শতাংশ এবং ৫০ কোটি টাকার বেশি সম্পদশালীদের আয়করের ওপর ৩৫ শতাংশ হারে সারচার্জ দিতে হবে।
সারচার্জ বা সম্পদ কর হচ্ছে এক ধরনের মাশুল, যা ব্যক্তির সম্পদের দলিল মূল্যের ওপর আদায় করা হয়। সর্বপ্রথম ১৯৬৩ সালে পাকিস্তান শাসনামলে সম্পদ কর (ওয়েলথ ট্যাক্স) চালু করা হয়। সেটা স্বাধীনতার পরও অব্যাহত ছিল। ১৯৮৮ সালে সরকার স্থায়ীভাবে সারচার্জ আদায় করতে অর্থ আইনের মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশে ১৬এ ধারা যুক্ত করে। বর্তমানে এ ধারা অনুযায়ী সারচার্জ আদায় করা হচ্ছে। পরে নানামুখী চাপে ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে সেটা প্রত্যাহার করা হয়। ২০১১-১২ অর্থবছর থেকে তা পুনরায় সারচার্জ চালু করে সরকার।
চলমান অর্থবছরে (২০২০-২১) সারচার্জের সাতটি স্তর আছে। নিট সম্পদের মূল্যমান ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত হলে সারচার্জ দিতে হয় না। তবে সম্পদের মূল্যমান ৩ কোটি থেকে ৫ কোটি টাকা হলে বা একাধিক মোটরগাড়ি থাকলে বা যেকোনো সিটি করপোরেশন এলাকায় ৮ হাজার বর্গফুটের বেশি গৃহসম্পত্তি থাকলে ১০ শতাংশ কর বা ৩ হাজার টাকা ন্যূনতম সারচার্জ দিতে হয়।
সম্পদের পরিমাণ ৫ কোটি থেকে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত ১৫ শতাংশ, ১০ কোটি থেকে ১৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ২০ শতাংশ, ১৫ কোটি থেকে ২০ কোটি টাকা পর্যন্ত ২৫ শতাংশ, ২০ কোটি টাকার বেশি সম্পদের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ এবং ৫০ কোটি টাকার বেশি সম্পদের ক্ষেত্রে সম্পদের দশমিক ১ শতাংশ অথবা আয়করের ৩০ শতাংশের বেশি যেটা হয় সেই হিসাবে সারচার্জ দিতে হয়।
এদিকে নতুন অর্থবছরের বাজেটে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য টার্নওভার ছাড় দেয়া হয়েছে। নারী ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য বার্ষিক ৭০ লাখ টাকা পর্যন্ত টার্নওভার কর অব্যাহতি সুবিধা দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ, বছরে ৭০ লাখ টাকা বেচাকেনায় নারীদের কর দিতে হবে না। বর্তমানে বার্ষিক ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত টার্নওভারধারী ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান কর অব্যাহতি সুবিধা পায়।
সূত্র : জাগো নিউজ।