আজ উত্থাপিত হবে বাজেট
করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত গোটা বিশ্বের অর্থনীতি। বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও রয়েছে এর প্রভাব। তবে সকল শঙ্কা আর মহামারির প্রকোপের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদে তৃতীয়বারের মতো বাজেট উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করবেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩ জুন) বিকেল ৩টায় বাজেট অধিবেশনে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উত্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী। প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আলোচনা শেষে আগামী ৩০ জুন এটি পাস হবে।
জানা গেছে, আগামী বাজেটে প্রাধিকার পাবে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। ‘জীবন-জীবিকায় প্রাধান্য দিয়ে সুদৃঢ় আগামীর পথে বাংলাদেশ’ শিরোনামের এবারের বাজেটটি প্রস্তুত হয়েছে সরকারের অতীতের অর্জন এবং উদ্ভূত বর্তমান পরিস্থিতির সমন্বয়ে।
এবারের বাজেটে সঙ্গত কারণেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে স্বাস্থ্য খাতে। পাশাপাশি কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজসমূহের বাস্তবায়ন, কৃষিখাত, খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনাকে অধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। অর্থবছরের পুরো সময় জুড়েই থাকবে সরকারের নানা ধরনের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি, বাড়ানো হবে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা।
বাজেটকে অধিকতর অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে অর্থ বিভাগের ওয়েবসাইট www.mof.gov.bd-এ বাজেটের সব তথ্য ও গুরুত্বপূর্ণ দলিল যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পাঠ ও ডাউনলোড করতে পারবে। দেশ-বিদেশ থেকে ওই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ফিডব্যাক ফরম পূরণ করে বাজেট সম্পর্কে মতামত ও সুপারিশ প্রেরণ করা যাবে। প্রাপ্ত সব মতামত ও সুপারিশ বিবেচনা করা হবে। জাতীয় সংসদ কর্তৃক বাজেট অনুমোদনের সময় ও পরে তা কার্যকর করা হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের মূল আকার ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। মহামারির কারণে সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা করা হয়েছে। বিশাল পরিমাণ এ ব্যয়ের বিপরীতে মোট আয় ধরা হচ্ছে ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছর মোট আয় ধরা হয় ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। সে হিসেবে আয় বাড়ছে ১১ হাজার কোটি টাকা। মোট আয়ের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয় ধরা হচ্ছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া আগামী বাজেটে এনবিআর-বহির্ভূত কর থেকে আসবে ১৬ হাজার কোটি টাকা। আর কর ছাড়া প্রাপ্তি ধরা হচ্ছে ৪৩ হাজার কোটি টাকা।
আগামী অর্থবছরে বৈদেশিক অনুদান পাওয়ার পরিমাণ ধরা হচ্ছে ৩ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। চলতি বাজেটে প্রবৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৩ শতাংশের মধ্যে রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আগামী অর্থবছরে মোট জিডিপির আকার ধরা হচ্ছে ৩৪ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। বাজেটে মোট উন্নয়ন ব্যয় ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৩৭ হাজার ৭৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা, যা এরই মধ্যে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) অনুমোদন দিয়েছে। চলতি বছরের বাজেটে এডিপির আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা।
বাজেটে পরিচালন ব্যয়ের মধ্যে আগামী অর্থবছর সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় হবে ঋণের সুদ পরিশোধে। এ খাতে বরাদ্দের ৬৮ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকার মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ বাবদ খরচ হবে ৬২ হাজার কোটি টাকা এবং বৈদেশিক ঋণের সুদ বাবদ ব্যয় হবে ৬ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। ব্যয় সাশ্রয়ের অংশ হিসেবে আগামী অর্থবছর উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে জমি অধিগ্রহণ, নির্মাণ ও পূর্ত কাজ, শেয়ার ও ইক্যুইটিখাতে বিনিয়োগ চলতি অর্থবছরের তুলনায় কমাবে সরকার। মূলধন ব্যয় নামে এসব খাতে আগামী অর্থবছর বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩২ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে এটি ছিল ৩৬ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে এসব খাতে ব্যয় কমিয়ে সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ ২১ হাজার ১৪১ কোটিতে নামানো হয়।
আগামী অর্থবছর উন্নয়ন খাতে সিটি করপোরেশন ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডসহ উন্নয়ন খাতে মোট ২ লাখ ৩৭ হাজার ৭৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে এর পরিমাণ ছিল ২ লাখ ১৫ হাজার ৪৩ কোটি টাকা। অব্যবস্থাপনা ও সক্ষমতার অভাবে তা বাস্তবায়ন করতে না পারায় সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ কমিয়ে ২ লাখ ৮ হাজার ২৫ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যদিও প্রকৃত বাস্তবায়নের পরিমাণ হবে এর চেয়েও কম।
এদিকে ২০২১-২২ অর্থবছরেও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকছে। নির্দিষ্ট পরিমাণ কর দিয়ে কালো টাকায় ফ্ল্যাট বা ভবন কেনার সুযোগ থাকতে পারে। এছাড়া ১০ শতাংশ কর দিয়ে নগদ বা ব্যাংকে রাখা টাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রাখা হতে পারে।
২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে মাথায় রেখে বাজেট করছি। এটা হবে মানুষের জীবন রক্ষার বাজেট। মানুষের জীবিকার রক্ষারও বাজেট এটা। এটা হবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী থেকে ব্যবসায়ী-শিল্পপতি সবার বাজেট। সবার যাতে অংশীদারত্ব থাকে, এমন কৌশল অবলম্বন করেই আমি প্রণয়ন করছি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট। অপেক্ষা করুন, দেখতে পাবেন। এই বাজেট দিয়েই হবে সুদৃঢ় আগামীর পথে বাংলাদেশের অভিযাত্রা।’
করোনা মোকাবিলায় ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ
২০২১-২২ অর্থবছরে করোনা মোকাবিলা, বিভিন্ন দেশ থেকে ভ্যাকসিন কেনা বাবদ ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এছাড়াও বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে ৩২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা। এটি মোট বাজেটের ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে ২৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকার বরাদ্দ রয়েছে। স্বাস্থ্য খাতের বিনিয়োগ বাড়াতে আগামী বাজেটে নতুন করে কর অবকাশসুবিধা দেয়া হচ্ছে। রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ এবং বিভাগীয় শহরের বাইরে হাসপাতাল-ক্লিনিক নির্মাণে বিনিয়োগ করলে ১০ বছরের কর অবকাশ সুবিধা দেয়া হতে পারে। ২০৩১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এ সুযোগ মিলবে। পাশাপাশি সরকারি সব হাসপাতালকে অত্যাধুনিক করা হবে। আইসিইউ, ভেন্টিলেটরসহ করোনা মোকাবিলার পর্যাপ্ত সামগ্রী কেনা হবে। এছাড়া করোনা মোকাবিলায় নতুন ২ হাজার চিকিৎসক, ৬ হাজার নার্স এবং ৭৩২ জন স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দেয়া হবে। এদের জন্য আসছে বাজেটে ৫০০ কোটি টাকা রাখা হচ্ছে।
মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী হচ্ছে ২০ হাজার টাকা
প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী ২০ হাজার টাকায় উন্নীত হচ্ছে। আগামী ১ জুলাই থেকে বাড়তি এ ভাতা পাবেন মুক্তিযোদ্ধারা। বর্তমানে ১ লাখ ৯১ হাজার ৫৩২ জন সাধারণ বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসিক সম্মানী ভাতা পেয়ে থাকেন। আর উৎসব ভাতা, মহান বিজয় দিবস ভাতা ও বাংলা নববর্ষ ভাতা পান ২ লাখ ৫ হাজার ১১৭ জন সাধারণ বীর মুক্তিযোদ্ধা। এছাড়া সম্মানী ভাতা পান ১১ হাজার ৯৯৮ জন শহীদ, যুদ্ধাহত ও অন্যান্য বীর মুক্তিযোদ্ধা। মাসিক সম্মানী ভাতা পাওয়ার মধ্যে আরও রয়েছেন ৫৮৭ জন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা।
২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে এজন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫ হাজার ৭০৫ কোটি ১২ লাখ টাকা। ২০২০–২১ অর্থবছরে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছিল ৩ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা বাবদ ৩ হাজার ৩০৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। সম্মানী ভাতার পাশাপাশি সাধারণ, শহীদ ও যুদ্ধাহত এবং খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েক ধরনের ভাতা ও সম্মানী দেয়া হবে।
করপোরেট কর কমছে
২০২০-২১ অর্থবছরের মতো এবারও বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করতে বাজেটে করপোরেট কর কমানো হচ্ছে। করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী টিকিয়ে রাখতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নয়, এমন কোম্পানির করপোরেট করহার ৩০ শতাংশ করা হতে পারে, যা এখন সাড়ে ৩২ শতাংশ। আর একক কোম্পানির করহার ২৫ শতাংশ করা হতে পারে। আর শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারও কিছুটা কমানো হতে পারে।
বিদ্যমান কর কাঠামো অনুযায়ী করপোরেট করের আটটি স্তর রয়েছে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ২৫ শতাংশ, তালিকাবহির্ভূত কোম্পানি ৩২ দশমিক ৫, একক ব্যক্তি কোম্পানির ৩২ দশমিক ৫, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও ২০১৩ সালে অনুমোদন পাওয়া নতুন ব্যাংক ৩৭ দশমিক ৫, তালিকা বহির্ভূত ব্যাংক ৪০, মার্চেন্ট ব্যাংক ৩৭ দশমিক ৫০ শতাংশ হারে করপোরেট ট্যাক্স দিতে হয়। এর বাইরে তৈরি পোশাক খাতের প্রতিষ্ঠানকে ১০ ও ১২ শতাংশ এবং সমবায় প্রতিষ্ঠানকে ১৫ শতাংশ হারে করপোরেট ট্যাক্স দিতে হয়।
সামাজিক নিরাপত্তায় গুরুত্ব
২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বাড়ছে। নতুন বাজেটে প্রথমবারের মতো দেশের ১৫০ উপজেলার সব বয়স্ক মানুষ ও বিধবা নারীকে ভাতা দেয়া হবে। এ ১৫০ উপজেলার প্রত্যেক বিধবা ও স্বামীপরিত্যক্তাকে ভাতার আওতায় আনা হচ্ছে। এতে সুবিধাভোগীর সংখ্যা বেড়ে ২৪ লাখ ৭৫ হাজারে দাঁড়াবে। আগামী বাজেটে নতুন করে রয়েছে ১৮ লাখ অসচ্ছল প্রতিবন্ধী, প্রায় ৮ লাখ দরিদ্র মায়ের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতাভোগী, প্রায় ৩ লাখ ল্যাকটেটিং ভাতাভোগী মায়ের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। এছাড়া বাজেটে হিজড়া, বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর মানোন্নয়নে সুবিধাভোগীর সংখ্যা ৯৫ হাজারে উন্নীত করা হবে।
বৈদেশিক উৎসের প্রতি নির্ভরতা বাড়ছে
বাজেটে ঘাটতি অর্থায়নে সরকার বরাবরের মতো এবারও বিদেশি ও অভ্যন্তরীণ উৎস বেছে নিচ্ছে। এবার অভ্যন্তরীণ উৎসের নির্ভরতা কিছুটা কমিয়ে বৈদেশিক উৎসের প্রতি নির্ভরতা বাড়ানো হচ্ছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ খাতের মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার ঋণ নেবে ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। আর জাতীয় সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেবে ৩২ হাজার কোটি টাকা। অন্যান্য খাত থেকে নেয়া হবে ৫ হাজার ১ কোটি টাকা। বাজেটে বিদেশি উৎস থেকে ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৭ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অর্থমন্ত্রীর আগামী বাজেটে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও কৃষি খাতে থাকছে বিশেষ ছাড়ের ঘোষণা। থাকবে দেশীয় শিল্পের সুরক্ষার ঘোষণা। দরিদ্র মানুষকে সুবিধা দিতে বাড়বে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা। করোনা মহামারিতে মানুষ ও সরকারের আয় কমে যাওয়ায় সাধ ও সাধ্যের সমন্বয় ঘটানোর চেষ্টা থাকবে বাজেটে। করোনা বাস্তবতায় বাজেট অধিবেশন হবে সংক্ষিপ্ত। নতুন করের বোঝা চাপাতে চান না অর্থমন্ত্রী।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাজেটে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো সময়মতো বাস্তবায়ন। সার্বিক বিবেচনায় এবার বাজেটে স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী এবং কৃষি—এই তিনটি খাতকে গুরুত্ব দেয়া উচিত। তবে চলতি অর্থবছরে যেখানে করোনাভাইরাসের প্রকোপ চলছে তা সত্ত্বেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাদের বরাদ্দকৃত অর্থের বড় একটি অংশ এখন পর্যন্ত ব্যয় করতে পারেনি। এই পরিস্থিতি থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। একদিকে সরকারের ব্যয় বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা আছে, আবার রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তাও আছে। রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে যেটা করা উচিত, করের হার না বাড়িয়ে করের আওতা বাড়ানো। বিশেষ করে ইনকাম ট্যাক্স, ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স (ভ্যাট) দেয়ার যোগ্যতা অনেকের আছে, কিন্তু তারা করের আওতায় আসে না। তাদের করের আওতায় আনতে হবে। ব্যয়ের ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য বাড়ানো এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত না করলে এডিপি সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন হয় না।’