লকডাউন মঙ্গলের জন্য, মানুষকে সেটা উপলব্ধি করতে হবে
সবদিক রক্ষা করে করোনা মোকাবিলার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেন, আমরা লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি মানুষের মঙ্গলের জন্য, মানুষকে সেটা উপলব্ধি করতে হবে।
মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় জাগো নিউজকে এ কথা বলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী। সরকারের বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে আন্দোলনের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সবার ভেবে দেখা উচিত, আমরা ভুল করছি কিনা।
করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকায় গত সোমবার (৫ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে সাতদিনের লকডাউন শুরু হয়েছে। আগামী ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত থাকবে এই লকডাউন। গণপরিবহন না পেয়ে প্রতিদিন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যাত্রীরা, বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেছেন তারা। একইসঙ্গে দোকান ও মার্কেট খুলে দিতেও আন্দোলনে নেমেছেন মালিক-শ্রমিকরা।
এরই মধ্যে মঙ্গলবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, বুধবার (৭ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিটি করপোরেশন এলাকার মধ্যে গণপরিবহন চলাচল করবে।
এসব বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অফিসটা খুলে রাখতে হচ্ছে, না হলে তো লোকজন আবার এলাকার দিকে ছুটবে। পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। সেখানে কথা আসছে অফিস খুলে রাখা অনেক প্রতিষ্ঠান গাড়ির আয়োজনটা করছে না। সেখানে তো বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। লোকজন কষ্ট পাচ্ছে। সে জন্য কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘মানুষের ভালোর জন্যই আমরা মানুষকে ঘরে রাখতে চাইছি। অপ্রয়োজনে মানুষের বাইরে আসার দরকার নেই। মানুষের সব দিক যাতে রক্ষা পায় সেই রকমভাবেই সাজানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। অনেক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরও অফিস করতে কষ্ট হচ্ছে। অফিসে আসতে ও বাসায় যেতে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা লেগে যাচ্ছে। এসব চিন্তা করেই আপাতত গাড়ি চলাচলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
‘আমরা চাই সবাই আমাদের সহযোগিতা করুক। করোনা তো বেড়ে যাচ্ছে, ঢাকায় তো জেনারেল বেডও পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি মানুষের মঙ্গলের জন্য, মানুষকে তো সেটা উপলব্ধি করতে হবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সবার ভেবে দেখা উচিত আমরা ভুল করছি কিনা। সবাই এভাবে চললে চিকিৎসাব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে আর বলার দরকার হবে না, সবাই এমনিতেই ঘরে থাকবে। ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে গেলে তো আর ট্রিটমেন্ট করা যাবে না, সেই সুযোগ থাকবে না।’
তিনি বলেন, ‘সবাই মাস্কটা পরলেই হতো শুধু। কিন্তু এখনও অনেকে মাস্ক পরে না। বিদেশে পিপিই পায়নি চিকিৎসকরা, শুধু মাস্ক পরে করোনা রোগীর চিকিৎসা করেছে। আমাদের চিকিৎসকরাও তাই বলেছেন। কিন্তু আমাদের ২০ শতাংশ মানুষ এখনও মাস্ক পরছে না। অনেকের মাস্ক পরার ধরনও ভালো না, থুতনিতে মাস্ক পরে, মুখে রাখছে না।’
সরকারি বিধিনিষেধ মেনে করোনা মোকাবিলায় এই মুহূর্তে সবার এগিয়ে আসা উচিত মন্তব্য করে ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘সবার বলা উচিত আমরা নিজেরাই সাতদিন বাসায় থাকব। যাদের অফিস আছে, যতটুকু না করলেই নয়, সেটুকু করুক। সবাইকে সুবিবেচনার পরিচয় দেয়া উচিত। এতে নিজেদেরই ভালো।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিভিন্নভাবে যারা ব্যর্থ তারাও এখানে (করোনার মধ্যে আন্দোলন) উসকানি দিচ্ছে। বিপদের সময় পজিটিভলি জনগণের সামনে আসতে হবে, এটা হচ্ছে রাজনীতি। আমরা আমাদের দলের লোকজনকে মাস্ক বিতরণ করতে বলেছি। অন্য দলের লোকজন কেন সেটা করছে না। আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন।’