মিয়ানমারের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আঁচ ভারতের গায়ে!
মিয়ানমার জান্তা সরকারের অর্থ সরবরাহ কমাতে সম্প্রতি সেনানিয়ন্ত্রিত দুটি সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন থেকে সংস্থা দুটির সঙ্গে কেউ কোনও ধরনের বাণিজ্যিক বা আর্থিক সম্পর্ক রাখলে তার ওপরও নেমে আসতে পারে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার খড়গ। আর সেই বিপদে ভারতের একটি প্রতিষ্ঠানও পড়তে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার ভারতীয় ইংরেজি দৈনিক দ্য ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদন অনুসারে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আঁচে পুড়তে চলা সেই প্রতিষ্ঠানটির নাম আদানি গ্রুপ।
মিয়ানমারে জান্তা সরকারের অন্যতম প্রধান আয়ের উৎস বলা হচ্ছে মায়ানমা ইকোনমিক পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড এবং মিয়ানমার ইকোনমিক করপোরেশন (এমইসি) নামে দুটি সংস্থাকে। গত সপ্তাহে সেনানিয়ন্ত্রিত সংস্থা দুটির ওপর ব্যবসায়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব বিভাগ।
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার একদল আইনজীবী দাবি করেছেন, আদানি গ্রুপের সঙ্গে মার্কিন নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত মিয়ানমার ইকোনমিক করপোরেশনের আর্থিক সম্পর্ক রয়েছে।
তাদের অভিযোগ, আদানি গ্রুপ এমইসি’কে আড়াই হাজার কোটি রুপি দিচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল জাস্টিস (এসিআইজে) এবং জাস্টিস ফর মিয়ানমার (জেএফএম) নামে দুটি সংগঠন বলছে, নথিপত্রে এমইসি’কে বিপুল অর্থ দেয়ার প্রমাণ পেয়েছে তারা।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত সংস্থাটি মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে আন্তর্জাতিক আদালতের তদন্তের মুখে রয়েছে।
অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার কারমাইকেল কয়লা খনি সংশ্লিষ্ট একটি বন্দর পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে আদানি গ্রুপের অঙ্গসংস্থা আদানি পোর্টস। তাদের সঙ্গে লেনদেন বন্ধে ক্যানবেরার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এসিআইজে।
তবে আদানি গ্রুপের চোখে বিষয়টি অন্যরকম। আদানি পোর্টসের এক মুখপাত্র বলেছেন, মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন আন্তর্জাতিক টার্মিনাল প্রকল্প পুরোপুরি স্বতন্ত্র, এতে তাদের সঙ্গে আর কারও অংশীদারিত্ব নেই।
তিনি বলেন, আদানি পোর্টস মিয়ানমারের পরিস্থিতি সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও শেয়ারহোল্ডারদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে আগামীতে ব্যবস্থা নেবে।
এর আগে, গত মাসে বন্দরের অনুমতির জন্য মিয়ানমার জেনারেলদের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগ অস্বীকার করেছিল আদানি গ্রুপ।
২০১৯ সালে জাতিসংঘের একটি সত্য-অনুসন্ধানী মিশন মিয়ানমার ইকোনমিক করপোরেশনের সঙ্গে ব্যবসায়িক কার্যক্রম রাখার বিষয়ে বেশ কিছু বিদেশি সংস্থাকে সতর্ক করেছিল। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম ভারতের এই আদানি গ্রুপ।