শেখ হাসিনার বহরে হামলা : এক আসামির মামলা বাতিলে আবেদন খারিজ
২০০২ সালে সাতক্ষীরায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় করা এক মামলায় আসামি রাকিবুর রহমানের মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
এর ফলে মামলা চলতে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
এ বিষয়ে আদেশের নির্ধারিত দিনে মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যের বিচারকের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আজ আসামিপক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর।
ধর্ষণের শিকার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরার কলারোয়ায় গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। সড়কপথে ঢাকায় ফেরার পথে উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে তার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। বোমা বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে সেদিন।
শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাসহ স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাংবাদিকরা সেদিন আহত হন। ওই ঘটনায় কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দিন কলারোয়া থানায় মামলা করতে গেলে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়।
এক যুগ পর ২০১৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা আদালতে নালিশি অভিযোগ করেন কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন। আদালত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করতে সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশ দেন।
তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৭ মে বিএনপির তৎকালীন সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
এর মধ্যে হত্যাচেষ্টা মামলায় এক আসামি রাকিব ওরফে রাকিবুর রহমানের বয়স ঘটনার সময় ১০ বছর ছিল উল্লেখ করে হাইকোর্টে মামলা বাতিলে আবেদন করা হয়।
সেখানে বলা হয়, ঘটনার সময় তার বয়স ছিল ১০ বছর। সে আবেদনে ২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেয়। হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়ে রুলও জারি করেন।
এরপর মামলাটি স্থগিতাদেশ অবস্থায় সেভাবেই পড়ে ছিল। বিষয়টি জানার পর সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত রুল শুনানির উদ্যোগ নেন নবনিযুক্ত অতিরিক্ত অ্যার্টনি জেনারেল এস এম মুনীর।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সেই রুলের ওপর শুনানি শুরু হয়। এরপরে গত ৬ অক্টোবর এ রুলের ওপর শুনানি শেষে ৮ অক্টোবর রায় দেন হাইকোর্ট।
রায়ে আসামি রাকিবুর রহমানের ক্ষেত্রে মামলার কার্যক্রম বাতিলের প্রশ্নে রুল খারিজ করে দেয়। সেই সঙ্গে মামলাটি তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এরপর আপিল করেন আসামিপক্ষ। বর্তমানে মামলাটি সাতক্ষীরার আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।