• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

নদীতে জেলে আছে মাছ নেই, প্রায় ইলিশশূন্য মাছঘাট

প্রকাশ:  ৩১ মে ২০২০, ১৩:০৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

জ্যৈষ্ঠ মাসের মাঝামাঝিতেও চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মিলছে না। বেশি ইলিশ পাওয়ার আশায় প্রতিদিন নদীতে গেলেও ফিরতে হচ্ছে খালি নৌকা নিয়ে। এতে করে জেলেরা নতুন করে জড়িয়ে পড়ছে ধারদেনায়। আর লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। তারপরও প্রতিদিন আশায় বুক বেঁধে নদীতে ছুটছে হাজার হাজার জেলে নৌকা ও ট্রলার। এসব জেলের অধিকাংশই ফিরে আসে সামান্য মাছ নিয়ে। যা দিয়ে ট্রলারের তেল খরচ উঠলেও অভাব-অনটনে থাকা জেলে পরিবারে সচ্ছলতা ফিরে আসেনি। তাই ইলিশনির্ভর বিশাল এ জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা এখন নানামুখী সঙ্কটে।


মৎস্য বিভাগের মতে, গত ২০ মে থেকে সাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে। নদীতে এখনো ভরপুর পানি আসেনি। তাই নদীতে ইলিশ আসতে দেরি হচ্ছে। সেজন্যে জেলেদেরকে ধৈর্য ধরার প্রয়োজন রয়েছে।

 


এদিকে পর্যবেক্ষক মহলের মতে, এবার জাটকা সংরক্ষণের সময় নদীতে দুই মাসের যে অভয়াশ্রম ছিলো, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে জেলেরা আইন অমান্য করে নদীতে জাটকাসহ ব্যাপক ইলিশ নিধন করায় এর প্রভাব দেখা দিয়েছে এখন। নদীতে জেলে আছে, মাছ নেই। ইলিশশূন্য চাঁদপুর মাছঘাটের প্রায় প্রতিটি আড়ত। শরীয়তপুর জেলার কিছু ঝিলের চাষের রুই-কাতল, মৃগেলসহ বিভিন্ন চাষকৃত মাছের কারণে এ ঘাটের কর্মযজ্ঞ কিছুটা টিকে আছে।

চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতি লিঃ-এর সাধারণ সম্পাদক হাজী মোঃ শবে বরাত সরকার জানান, সমিতির ৭৬-৭৭টি আড়তের মধ্য ৩০ থেকে ৩৫টি আড়ত এই সময় ইলিশে সরগরম থাকত। এবার দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। দুই মাসের অভিযানে অসাধু জেলে ও ব্যবসায়ীরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ সব ধরে বিক্রি করে ফেলেছে। প্রশাসন নদী চেক দিতে পারেনি। এ জন্যে লোকাল নদীগুলোতে ইলিশের দেখা নেই।

তিনি বলেন, গত বছর এই সময় ৫০ থেকে ১০০ মণ ইলিশ ঘাটের আড়তে ক্রয়-বিক্রয় হত। সেখানে গতকাল ৩০ মে একদিনে ছোট-বড় মিলিয়ে ৩ থেকে ৫ মণ ইলিশ ঘাটে আসে।

ইলিশ ব্যবসায়ী ও সমিতির পরিচালক আঃ খালেক বেপারী বলেন, 'নদীতে এখন আগের মতো ইলিশ নেই। জেলেদের জালে আগে যে পরিমাণ ইলিশ আসতো তা এখন আর আসে না। তাই মোকামও আগের মতো জমজমাট নয়।' তিনি আরো বলেন, লোকালে মাছ কম। নামার মাছে মাছঘাট চাঙ্গা থাকে। এখন সাইজের ইলিশ মণ প্রতি ৪৫-৫০ হাজার টাকায় এবং ছোট ইলিশ ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

একজন জেলে বলেন, মাছ না থাকায় নদী এলাকার যত লোক আছে, সব বেকার হয়ে গেছে। ইলিশ না পাওয়ায় টানা লোকসানে পড়েছেন ব্যবসায়ীরাও। পুরানো দাদন ফেরতের পরিবর্তে নতুন করে পুঁজি হারানোর শঙ্কায় তারা। এক উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার তথ্য মতে, বর্ষা যেহেতু দেরিতে আসছে সেহেতু মাছের মৌসুমও দেরিতে শুরু হবে। আষাঢ়-শ্রাবণে বুঝা যাবে ইলিশের আমদানি।

সর্বাধিক পঠিত