• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

৬টি রকেট ও স্টিমারের মধ্যে ৪টিই নষ্ট

বিকল হওয়া রকেট পিএস মাহ্সুদ ও পিএস টার্ণ নারায়নগঞ্জে প্রেরন

প্রকাশ:  ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ২২:৪৭
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

বাংলাদেশ আভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডাব্লিউটিসি)’র পিএস মাহ্সুদ বিকল হয়ে চাঁদপুর রকেট স্টীমার ঘাটে ১মাস ৫দিন যাবত পড়ে রয়েছে। পিএস টার্ণ চাঁদপুরে মেরামত না হওয়ায় নারায়নগঞ্জে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে করে এ রুটে প্রতিদিন যাতায়াতকারী শত-শত সাধারন যাত্রীরা রকেট ও স্টিমার সার্ভিস না থাকায় মারাত্বক দূর্ভোগ পৌহাতে দেখা যাচেছ। বিগত বছর ঢাকা-চাঁদপুর-খুলনার ও খুলনা-চাঁদপুর-ঢাকার মধ্যে চলাচলের জন্য নিয়মিত (বিআইডাব্লিউটিসি)’র রকেট ও স্টিমার সাভিস ছিল। কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ কালে জানা যায়, বিগত দিনে সপ্তাহে ৭দিনই চাঁদপুর থেকে খুলনা ও ঢাকা থেকে চাঁদপুর ও খুলনার মধ্যে হাজার-হাজার যাত্রী যাতায়াত করতো ও মালামাল পরিবহন হতো। এতে সরকার লক্ষ-লক্ষ টাকা রাজস্ব আয় পেত। আর যাত্রীরাও নিরাপদে যাতায়তের নিশ্চতা পেয়ে থাকতো। ৬টি রকেটের মধ্যে বিগত কয়েক বছর পূর্বে ২টি রকেট পুরো বিকল হয়ে যায়। যার ফলে এ রুটে ৪টি রকেট বা স্টিমার চলাচল করায় সপ্তাহে ৫দিন এ রুটের যাত্রীরা নিরাপদে যাতায়াতের নিশ্চয়তা পেয়ে থাকছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে জানা যায়,বর্তমানে ২টি রকেট বা স্টিমার সার্ভিস পুনরায় চাঁদপুর রকেট ঘাটে বিকল হয়ে পড়ে থাকায়,এ রুটের যাত্রীরা তাদের সে সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ে। বর্তমানে এ রুটে সপ্তাহে ৩দিন রকেট ও স্টিমার সার্ভিস চলাচল করায় এ রুটের যাত্রীরা সঠিক ভাবে তাদের যাত্রী সেবা পাচেছ না বলে ভুক্তভোগী অনেক যাত্রী অভিযোগ করে যানান।


 এর মধ্যে পিএস মাহ্সুদ গত ৭ আগস্ট থেকে ১মাস ৫দিন মেরামতের অপেক্ষায় চাঁদপুর ঘাটে রয়েছে এবং পিএস টার্ন ৩১ আগস্ট থেকে ১২ দিনেও সচল না হওয়ায় সেটিকে চাঁদপুর থেকে নারায়নগঞ্জে প্রেরন করা হয়েছে।  পিএস টার্ণ এর প্রকৌশল বিভাগের মাষ্টার অফিসার আ: মান্নানের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের একটি টীম ঘটনাস্থলে এসে যান্ত্রিক ত্রুটি, পাখার বাঁকা হওয়া ৪টি পাতা ও ওয়েন্ডার মেরামতের কাজ করেও জাহাজটি সচল করতে পারেনি। পিএস মাহ্সুদ এর রাবার ডিস্ক লায়নার এর মেরামতের কাজ ঢাকার ওয়ার্কসপে চলছে।

বিআইডাব্লিউটিসি’র স্থানীয় মাধ্যম থেকে জানাগেছে, গত ৭ আগস্ট পিএস মাহ্সুদ চাঁদপুর মোহনায় বিকল হওয়ার পরে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে পিএস মধুমতি রকেট চাঁদপুরে এনে যাত্রীদেরকে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কিন্তু ৩১ আগস্ট পিএস টার্ণ বিকল হওয়ার পর রকেটে ১৪৬জন যাত্রীদেরকে গন্তব্যে পাঠানোর কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তারা চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়। ১ সেপ্টেম্বর রকেটে থাকা যাত্রীদের মধ্যে চাঁদপুরের ঘাট থেকে টিকিট ক্রয় করা ১শ’ ১৩জন যাত্রীকে টিকিট বাবদ ২৩ হাজার ৫শ’ ৪০ টাকা ফেরৎ দেয়া হয়। ওই রকেটে ঢাকা থেকে বিভিন্ন শ্রেনীর দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের মধ্যে ৩৩ জনের টিকিটের টাকা ফেরৎ না দিয়ে ঢাকা সদরঘাট কাউন্টার থেকে টাকা ফেরৎ নেয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়।

 গতকাল বুধবার বিআইডাব্লিউটিসি’র চাঁদপুর ঘাটের সহকারী ম্যানেজার মো. মনির হোসেন জানান, গত ৭ আগস্ট ৪শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে পিএস মাহ্সুদ চাঁদপুর ঘাটে এসে বিকল হয়। এরপরে ওই যাত্রীদের পিএস মধুমতির মাধ্যমে গন্তব্যে পৌঁছানো হয়। ৩১ আগস্ট পিএস টার্ণ মেঘনা মোহনায় এসে প্রচন্ড ¯্রােতের কবলে পড়ে পাখার ৪টি পাতা বাঁকা হয়ে যায় এবং ওয়েন্ডারে সমস্যা দেখা দেয়। পরবর্তীতে চাঁদপুরে যাত্রী নামিয়ে পুন:রায় রওয়ানা হওয়ার জন্য রকেটটি চালু করা হলে পাতাগুলো বিপরীত দিকে ঘুরতে থাকে এবং রকেটের ইঞ্জিন বিকট শব্দ হলে বন্ধ করে দেয়া হয়। ওই তারিখে যাত্রী কম হওয়ায় পিএস টার্ণের যাত্রীদের গন্তব্যে যাওয়ার ব্যবস্থা করেনি সংশ্লিস্ট কর্তুপক্ষ।

তিনি আরো বলেন,সহসাই পিএস টার্ণ মেরামত কাজ সম্পন্ন করা হলে এ রুটে চলাচল করবে। ঢাকা থেকে পুন:রায় রকেটটি সার্ভিস সংযোগ করণ করা হবে। পিএস মাহ্সুদ এর রাবার ডিস্ক লারনার এর  কাজ সম্পন্ন হয়ে  সচল হলে সেটিও ঢাকায় প্রেরণ করা হবে।

মো. মনির হোসেন আরো বলেন, উল্লেখিত দু’টি রকেট যান্ত্রিকত্রুটির পর থেকে এই রূটে পিএস বাঙালী ও মধুমতির মাধ্যমে যাত্রীদের চলাচল সচল রাখা হয়েছে। এই রুটে এখন সপ্তাহে ৩দিন সোম,বুধ ও বৃহস্পতিবার রকেট ও স্টিমার সার্ভিস চলাচর করছে। এ রুটির অতি গুরুত্ব রয়েছে। এখান থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩ শতাধিক যাত্রী চলাচল করছে। বিশেষ সময় যাত্রী বেড়ে ৬ থেকে ৭শ’ যাত্রীও হয়ে থাকে।