আজ সেই ভয়াল ২১ আগস্ট: হাইমচরে শহীদ কুদ্দুছের স্মৃতি ধরে রাখতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন
আজ ভয়াল রক্তাক্ত সেই ২১ আগস্ট। বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বিভীষিকাময় কলংকিত দিন। সেই দিনের গ্রেনেডের হিংস্র আক্রমণ, দানবীয় সন্ত্রাস, মানবতাবিরোধী, নারকীয় ও জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞ অবলোকন করে সারা পৃথিবীর মানুষ। এই বীভৎস হত্যাকা-ের হোতা ঘাতকদের প্রতি ঘৃণা ধিক্কার জানিয়েছিলেন বিশ্ব রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকা বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপি ও জামায়াতের মদদে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে একদল সন্ত্রাসী গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছিলো। সেই গ্রেনেড হামলায় শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও তাঁর জীবন রক্ষা করতে শহীদ হন হাইমচরের কৃতী সন্তান কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুল কুদ্দুছ পাটওয়ারীসহ কেন্দ্রীয় বেশ কজন নেতৃবৃন্দ। এই গ্রেনেড হামলায় মদদদাতাদের ফাঁসিসহ গ্রেনেড হামলার রায় দ্রুত বাস্তবায়ন চায় কুদ্দুছের পরিবার।
আজ আব্দুল কুদ্দুছ পাটওয়ারীর ১৫তম শাহাদাতবার্ষিকী। গ্রেনেড হামলায় নিহত আব্দুল কুদ্দুছ পাটওয়ারীর স্মৃতি ধরে রাখতে চায় তার পরিবারের লোকজন। হাইমচরে যে কোনো একটি কলেজ, কিংবা হাসপাতাল স্থাপন করে যেনো কুদ্দুছ পাটওয়ারীর নামে নামকরণ করা হয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার আবেদন জানিয়েছেন কুদ্দুছ পরিবারের সদস্যবৃন্দ।
নিহত কুদ্দুছ পাটওয়ারীর বড় ভাই হাইমচর উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি মোঃ হুমায়ুন কবির পাটওয়ারী বলেন, আমার ভাই জননেত্রী শেখ হাসিনাকে বাঁচাতে গিয়ে জীবন দিয়েছে। এটা একদিকে কষ্টের হলেও অন্য দিকে গর্বের। আমার ভাইয়ের জন্যে আমাদের পরিবারের সকল সদস্যরা আজ গর্ববোধ করে। আমরা এমন একটা ভাই পেয়েছিলাম যে ভাই বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্যে জীবন দিয়েছে। ভাই হারিয়েছি কষ্ট নেই, কষ্ট শুধু যারা এ জঘণ্যতম কাজটি করেছে তাদের মদদদাতাদের যে শাস্তির রায় হয়েছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট নই। যারা এ গ্রেনেড হামলার সাথে জড়িত কিংবা ইন্দনদাতা তাদের প্রত্যেককেই মৃত্যুদ- হলে আমাদের ভাইয়ের আত্মা শান্তি পাবে। আমরাও খুশি হবো। আমার ভাইয়ের স্মৃতি ধরে রাখতে কুদ্দুছ পাটওয়ারীর নামে হাইমচরে একটি বিজ্ঞান কলেজ স্থাপন করার জন্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
২১ আগস্ট উপলক্ষে হাইমচরে আজ নানা কর্মসূচি
২০০৪ সালের ২১ আগস্টে ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে তৎকালীন রিরোধী দলীয় নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় শেখ হাসিনার প্রাণ রক্ষার্থে জীবন উৎসর্গ করেন হাইমচরের কৃতী সন্তান স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল কুদ্দুস পাটওয়ারী। দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে হাইমচর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ আহ্বায়ক আঃ ছাত্তার গাজী জানান, আজ ২১ আগস্ট শহীদ কুদ্দুস পাটওয়ারীর ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। তার এ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্যোগে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সকাল ৭টায় কালো ব্যাজ ধারণ, ৭টা ৩০ মিনিটে জাতীয় পতাকা, দলীয় পতাকা ও কালো পতাকা উত্তোলন। ৮টায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শহীদ আব্দুল কুদ্দুস পাটওয়ারীর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ। সকাল ৯টায় শোক র্যালি ও শহীদ কুদ্দুস পাটওয়ারীর সমাধিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ। সকাল ১০টায় দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা, মিলাদ, দোয়া ও তবররুক বিতরণ। সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে শহীদ আঃ কুদ্দুছ পাটওয়ারীর পরিবারের সাথে নেতৃবৃন্দের সাাক্ষাত। এ সকল কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোঃ মোতালেব জমাদার। এ সকল কর্মসূচিতে উপজেলা আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ সকল অঙ্গ-সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে অংশগ্রহণ করার জন্যে অনুরোধ জানিয়েছেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ আহ্বায়ক আঃ ছাত্তার গাজী।