বেতন না দিয়েই ডব্লিউ রহমান জুট মিল হঠাৎ বন্ধ ॥ শ্রমিকদের বিক্ষোভ
বকেয়া পাওনা ও মিল চালুর দাবিতে চাঁদপুর ডব্লিউ রহমান জুট মিল শ্রমিকরা মিল চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। গত কদিন ধরে তারা এ দাবি জানিয়ে আসছে। গতকাল ২৯ জুলাই সোমবার দুপুরে মিল চত্বরে গিয়ে একই চিত্র দেখা গেছে। শ্রমিকরা তাদের পাওনা আদায়সহ মিল চালুর লক্ষ্যে ডব্লিউ রহমান জুট মিলের প্রকৃত মালিক ট্রান্সকম কোম্পানির এমডি লতিফুর রহমানের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তারা মিলের প্রকৃত মালিকের কাছ থেকে চুক্তিভিত্তিক ভাড়া নেয়া ঢাকা সাহারা জুট কোম্পানির চুক্তি বাতিলপূর্বক তাদের ভাড়াকালীন আমানত থেকে শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধেরও দাবি জানান।
কয়েক হাজার শ্রমিকের পদচারণায় একসময় যে মিলের চাকা ঘুরে নি¤œ মধ্যবিত্ত পরিবারের জীবন-জীবিকার অন্নসংস্থান করে দিতো, সেই ঐতিহ্যবাহী ডব্লিউ রহমান জুট মিল ও স্টার আলকায়েদ জুট মিল আজ বন্ধ হয়ে হাজারো শ্রমিককে করে দিয়েছে বেকার। খেয়ে না খেয়ে তাদের পরিবার-পরিজন এখন অনেকটাই সর্বহারা। মাঝে মাঝে মিলগুলো চললেও হঠাৎ করেই আটকে যায় কষ্টার্জিত প্রাপ্য মজুরি। ডব্লিউ রহমান জুট মিলে কর্মরত আড়াইশ’ শ্রমিক তাদের ৯ দিনের বেতন ও বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মিলে দায়িত্বরত মিলের ১০ জন অফিসারের ৩ মাসের বেতন বাকি রেখেই সাহারা জুট কোম্পানি বন্ধ করে দিয়েছে ভাড়ায়চালিত ডব্লিউ রহমান জুট মিল। গত বছর ঢাকার সাহারা জুট কোম্পানি প্রকৃত মালিক লতিফুর রহমানের কাছ থেকে চুক্তিভিত্তিক ভাড়া নেয় ডব্লিউ রহমান জুট মিলটি। ভাড়া নেয়ার পর পাটের সমস্যা, টেকনিক্যাল সমস্যাসহ নানা সমস্যা দেখিয়ে বছরের অধিকাংশ সময়ই তারা মিলটি বন্ধ রাখে। ফলে সারাবছরে হয়তো দেখা যায় মিলের চাকা সচল থাকে ৪/৫ মাস। গত ঈদুল ফিতরের পর মিল চালু ছিলো মাত্র ২০/২৫ দিন। এর মধ্যে ৯ দিনের মজুরি বাকি রেখে পুনরায় মিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শ্রমিকদের মাঝে দেখা দেয় হতাশা। আসন্ন ঈদুল আযহর পূর্বে এভাবে বেতন বাকি রেখে মিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্মরত শ্রমিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা সাহারা জুট কোম্পানির চুক্তি বাতিলসহ তাদের ভাড়াকালীন আমানত থেকে বেতন পরিশোধ করার জন্যে ডব্লিউ রহমান জুট মিলের প্রকৃত মালিকের কাছে দাবি জানান।
মিল বন্ধসহ শ্রমিকের পাওনা টাকা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয় মিলের শ্রমিক নেতা জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক নূরুল ইসলাম মিয়াজীর কাছে। তিনি বলেন, দীর্ঘসময় ধরে শ্রমিকের স্বার্থ সংরক্ষণসহ তাদের দাবি আদায়ে কাজ করেছি। জননেত্রী সকল শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকানোর আগেই তাদের প্রাপ্য বুঝিয়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে অনেক ক্ষেত্রেই এর ব্যতিক্রম হচ্ছে। যেমন ডব্লিউ রহমান জুট মিল মালিক পক্ষ থেকে ভাড়া নিয়ে সাহারা কোম্পানি শ্রমিকদের ৯ দিনের বেতন না দিয়ে হঠাৎই বন্ধ করে দেয় মিলটি। আমরা চেষ্টা করছি যাতে শ্রমিকরা তাদের প্রাপ্য বকেয়া পাওনা টাকা পায় এবং নিয়মিত মিলটি চালুর ব্যাপারে আমি সাহারা জুট কোম্পানির এমডি শিমুল চৌধুরীর সাথেও যোগাযোগ অব্যাহত রাখছি। তারা আশ্বাস দিয়েছে বকেয়া পরিশোধপূর্বক মিলটি চালু করার।
কথা হয় চুক্তিভিত্তিক মিল ভাড়া নেয়া সাহারা জুট কোম্পানির জিএম শওকতের সাথে। তিনি পুনরায় মিল চালুর ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।