• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

মেঘনায় ক্লিংকার বোঝাই জাহাজডুবির ১১দিন পরও উদ্ধার হয়নি ॥ লুটপাট হচ্ছে ক্লিংকার

প্রকাশ:  ২২ জুন ২০১৯, ০৮:৩৮
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

চাঁদপুর মেঘনা নদীর মোহনা এলাকায় যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি ময়ূর-২-এর ধাক্কায় ভারত থেকে আসা সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল ক্লিংকার বোঝাই এমভি শাওন-১ জাহাজটি ডুবে যাওয়ার ১১দিন পার হলেও জাহাজটির ক্লিংকার উদ্ধারে তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।
খবর নিয়ে জানা যায়, ক্লিংকার  বহনকারী জাহাজটি গত ৩মাস পূর্বে চলাচলের ত্রুটিপূর্ণ ও অযোগ্য ঘোষণা করার পরও জাহাজ মালিক জাহাজটি দিয়ে মালামাল পরিবহন করে যাচ্ছিল। জাহাজটি মেরামতের জন্যে না পাঠিয়ে মালিক পক্ষ থেকে ভারতে জাহাজটি পাঠায় ক্লিংকার পরিবহনের জন্যে। যার ফলে জাহাজটি ক্লিংকার নিয়ে চাঁদপুর আসলে যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি ময়ূর-২-এর সাথে ধাক্কা লেগে এটি ফুটো হয়ে যায় এবং দুর্ঘটনার শিকার হয়।  জাহাজটি ত্রুটিজনিত কারণেই লঞ্চের ধাক্কায় এটি দুর্ঘটনায় পতিত হয় বলে জানান অনেকেই।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জাহাজের মাস্টার মোঃ শহিদুল ইসলাম ও নৌ-পুলিশের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র। বর্তমানে জাহাটির অনুকূলে ইন্সুরেন্স কোম্পানীর ইন্সুরেন্স থাকার কারণে ব্যাপক তদন্ত কার্যক্রম ও ইন্সুরেন্স কোম্পানীর পক্ষ থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনাস্থল চাঁদপুর এসে পরিদর্শনের অপেক্ষায় জাহাজটি উদ্ধার না করে ঘটনাস্থলে ফেলে রাখা হয়েছে। ক্লিংকারসহ জাহাজটি ডুবে থাকায় সেখানে পুলিশ সার্বক্ষণিক পাহারা ও নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে। একটি সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ দিন-রাত ক্লিংকার বোঝাই জাহাজটি পাহারার ব্যবস্থাগ্রহণ করলেও দিনে পাহারা জোরদার না থাকায় স্থানীয় একটি চোরাচালানি চক্র যুবকদের দিয়ে পানির নীচে থাকা জাহাজ থেকে ক্লিংকার কেটে বস্তাভর্তি করে লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শারমিন-হান্নান নেভিগেশনের এমভি শাওন-১-এর ক্লিংকারসহ জাহাজের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হবে অনুমান আড়াই কোটি টাকা। দুর্ঘটনার সময় লঞ্চে থাকা ৭জন নাবিককে উদ্ধার করেছে চাঁদপুর নৌ থানার পুলিশ। এরা হচ্ছেন: মাস্টার শহিদুল ইসলাম, ড্রাইভার মাইনুদ্দিন, সুকানী আশিক এবং ৪ জন লস্কর।
গত ১১ জুন মঙ্গলবার বিকেলের দিকে দুর্ঘটনা ঘটলেও জাহাজটি ছিদ্র হয়ে যাওয়ায় পানি প্রবেশ করে ধীরে ধীরে নিমজ্জিত হয়ে রাত ১০টায় চাঁদপুর লঞ্চঘাটের পূর্ব দিকে এটি অর্ধেক ডুবন্ত অবস্থায় নোঙ্গর করা হয়। এখন পর্যন্ত জাহাজটি ডুবন্ত অবস্থায় ঘটনাস্থলেই রয়েছে।
লঞ্চের মাস্টার শহীদুল ইসলামর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, জাহাজটি গত ৩ মাস পূর্বে ডকে উঠিয়ে মেরামত করার কথা ছিল। জাহাজ মালিক এ ত্রুটিপূর্ণ জাহাজটি নিয়ে আমাদেরকে ভারতে পাঠান ক্লিংকার বহন করার জন্যে। এ দুর্ঘটনায় যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি ময়ূর-২-এর কোনো দোষ ছিল না। জাহাজটি নোঙ্গর করার সময় লঞ্চের সাথে লেগে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
লঞ্চের মাস্টার শহীদুল ইসলামের বরাত দিয়ে চাঁদপুর নৌ-থানার  অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু তাহের খান বলেন, এ ঘটনায় লঞ্চের মাস্টার চাঁদপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়ের করেছেন। ডায়েরি নং-৫৭৬। ১ জুন জাহাজটি ভারতের কলকাতা টিডিসেট বন্দর থেকে ছেড়ে আসে। এটি চাঁদপুর হয়ে নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়। যাত্রীবাহী লঞ্চের ধাক্কার পর ধীরে ধীরে এটি পানিতে তলিয়ে যায়।
তিনি আরো জানান, জাহাজটিতে ৬৮৫টন ক্লিংকার ছিলো। শারমিন-হান্নান নেভিগেশনের এমভি শাওন-১-এর ক্লিংকারসহ জাহাজের ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ আড়াই কোটি টাকা বলে মাস্টার ডায়েরিতে উল্লেখ করেন।