• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ব্যাপক হারে ইলিশ নিধনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো চাঁদপুরে ২২ দিনের মা ইলিশ সংরক্ষণ কার্যক্রম

জেলেরা সরকারি চালও খেয়েছে, আইন অমান্য করে মাছও ধরেছে

প্রকাশ:  ২৯ অক্টোবর ২০১৮, ১০:৫৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 মা ইলিশ সংক্ষরণে সরকার ঘোষিত নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়েছে গতকাল ২৮ অক্টোবর রোববার রাত ১২টায়। তবে এবার ব্যাপক হারে মা ইলিশ নিধনের মধ্য দিয়েই শেষ হলো এ নিষেধাজ্ঞার ২২ দিন। আজ সোমবার থেকে মাছ ধরতে নদীতে জাল ও নৌকা নিয়ে নামার ক্ষেত্রে বাধা নেই। সরকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় আজ মঙ্গলবার থেকে চাঁদপুরের নদ-নদীতে পুরোদমে ইলিশসহ সব মাছ শিকারে নামবে জেলেরা। তাই এখন জেলে পল্লীতে আনন্দের বন্যা বইছে।
    ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিনের জন্যে দেশের ইলিশ অধ্যুষিত নদ-নদীতে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা ছিল সরকারের। মা ইলিশ সংরক্ষণ, মা ইলিশ রক্ষা ও স্বাচ্ছন্দে ইলিশের ডিম ছাড়ার সুযোগ করে দিতেই এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলো সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। গতকাল রোববার মধ্য রাত থেকে এ নিষেধাজ্ঞার সময় অতিবাহিত হওয়ায় আজ থেকে আবার শুরু হলো জেলেদের ইলিশ ধরা।
    এবার চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ব্যাপক হারে ইলিশ নিধনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে মা ইলিশ সংরক্ষণ কার্যক্রম। প্রশাসনের সকল বিভাগের কঠোর নজরদারি সত্ত্বেও জেলে নামধারী দুষ্কৃতকারী জেলেদের মাছ ধরা থেকে বিরত রাখা যায়নি। প্রশাসনের অভিযান এড়িয়ে তারা চুরিচামারি করে ইলিশ শিকার করেছে। নদীতে এতো মাছ, স্বাধীনতার পর দেখেনি চাঁদপুরের জেলেরা। বড় বড় সাইজের ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পেয়ে লোভ সামলে না পেরে হামলে পড়েছে তারা নদীতে। কারেন্ট ও ছান্দি জাল নিয়ে জেলেরা আইন অমান্য করে অবাধে মা ইলিশ নিধন করেছে বলে পর্যবেক্ষক মহল থেকে কথা ওঠেছে। এবার পদ্মা ও মেঘনা বেষ্টিত চাঁদপুর ও শরীয়তপুর নৌ-সীমানার চরাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি মা ইলিশ শিকার করা হয়। রাজরাজেশ^র চর থেকে নিষেধাজ্ঞা সময়ে আহরিত সাড়ে সাতশ’ মণ ইলিশ জব্দ করে জেলা টাস্কফোর্স।
    জেলা মৎস্য কর্মকর্তার অফিস জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিনে চাঁদপুরে মা ইলিশ সংরক্ষণ কার্যক্রমে নদীতে ১৬৩টি অভিযান পরিচালনা করে জেলা টাস্কফোর্স। এ সময় ১৪৩টি মামলা হয়েছে। সাজা দেয়া হয় ১৩৩জন জেলেকে। তাদের মধ্যে ১১১জন জেলেকে ১ বছর,  ১২জন জেলেকে ১ মাস ও ৩জনকে ১৫দিন করে কারাদ- দেয়া হয়। জব্দ করা হয় ৭.৯৪২ মেট্টিক টন ইলিশ এবং ১৯.৫৪৬ লাখ মিটার জাল, যার অধিকাংশ  কারেন্ট ও ছান্দিজাল। এ সময়ে ৪১টি জেলে নৌকাও জব্দ করা হয়। প্রশাসনের এত পদক্ষেপ গ্রহণ করার পরও জেলেদের নিবৃত করা যায়নি ইলিশ ধরা থেকে।
    যারা নদীর পাড়ে মা ইলিশ ক্রয়-বিক্রয় করেছে, তারা ছিলেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে এমন অভিযোগও এখন উঠছে। নদীর পাড়ে ইলিশের উৎসব ছিলো চোখে পড়ার মতো। নিষেধাজ্ঞার মধ্যে চাঁদপুরে অন্য জেলা থেকে বরফও ঢুকেছে। কারা কীভাবে এই বরফ আনলো তা চিহ্নিত করা হয়নি। সবদিক পর্যালোচনায় এবার ইলিশ প্রজনন ব্যাহত হবার আশঙ্কা সাধারণ মানুষের। জেলেরা সরকারি চালও খেয়েছে আবার আইন অমান্য করে মাছও ধরেছে।

 

সর্বাধিক পঠিত