হাসপাতালের ভেতরে কলেজ, অধ্যক্ষ নিজেই আসেন দেরিতে
নানা সমস্যায় জর্জরিত চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ
চাঁদপুর সরকারি মেডিকেল কলেজের নিজস্ব কোনো ভবন নেই। চিকিৎসাশিক্ষায় পাঠদানের জন্য নেই প্রয়োজনীয় শিক্ষক। ছাত্রছাত্রীদের থাকার জন্য কোনো আবাসনসুবিধা নেই। হাতে–কলমে শেখার জন্য নেই ল্যাবরেটরি। পড়াশোনা করার মতো লাইব্রেরি নেই। সাত বছর ধরে ১১টি কক্ষ নিয়ে চলছে চাঁদপুর সরকারি মেডিকেল কলেজ। এই কলেজে ২৫০ জন শিক্ষার্থী আছেন। এ বছর আরও ৭৫ শিক্ষার্থী ভর্তি হতে চলেছেন। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৮ সালে মেডিকেল কলেজটি প্রতিষ্ঠা করে। ইতিমধ্যে একটি ব্যাচ এমবিবিএস পাস করে ইন্টার্নশিপ শুরু করেছে। কিন্তু হাসপাতালে এসব নবীন চিকিৎসক দরকারি প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন না। অসম্পূর্ণ প্রশিক্ষণ নিয়ে তাঁদের ইন্টার্নশিপও শেষ হবে। প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা ছাড়াই একদল চিকিৎসক দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় যুক্ত হতে যাচ্ছেন।
দেশে মেডিকেল কলেজ ১১০টি। এর মধ্যে সরকারি মেডিকেল কলেজ আছে ৩৭টি, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ৬৭টি, আর্মি মেডিকেল কলেজ ৫টি ও আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ ১টি। সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর মধ্যে নিজস্ব ভবন ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ছাড়া চলছে ছয়টি মেডিকেল কলেজ। চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ছাড়াও এই তালিকায় আছে নেত্রকোনা মেডিকেল কলেজ, নওগাঁ মেডিকেল কলেজ, নীলফামারী মেডিকেল কলেজ, মাগুরা মেডিকেল কলেজ ও সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ। সুনামগঞ্জ ছাড়া এই মেডিকেল কলেজগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ২০১৮ সালে। ২০২০ সালে হয়েছে সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ।
সরকারি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার কোনো নীতিমালা নেই। বেসরকারি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে নিজের জায়গায় নিজস্ব ভবনে মেডিকেল কলেজ, কলেজের আয়তন, শিক্ষার্থীর অনুপাতে শিক্ষক, ল্যাবরেটরি, লাইব্রেরি—এ রকম আরও অনেক বিষয়ে শর্ত আরোপ করা হয়। শর্ত পূরণ করে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন উদ্যোক্তারা। কিন্তু সরকারি মেডিকেল কলেজের জন্য কোনো শর্ত নেই। সরকারে থাকা ব্যক্তির ইচ্ছায় এসব মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
২৪ জানুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, ‘কিছু মেডিকেল কলেজ চলার মতো না। আমার ধারণা, ৫০ শতাংশ সরকারি মেডিকেল কলেজ ঠিকমতো চলছে না। সব কটিকে চালু রাখার মানে হয় না। কিছু একটা করতেই হবে। কী করা যায়, তা নিয়ে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর সক্রিয়ভাবে চিন্তাভাবনা করছে।’
চাঁদপুর মেডিকেল কলেজটির অবস্থান চাঁদপুর সদর হাসপাতালের ভেতরে। সরকারি এই মেডিকেল কলেজ খুঁজতে হলে সদর হাসপাতালে যেতে হবে। ২৫০ শয্যার সদর হাসপাতালের চতুর্থ তলার কয়েকটি কক্ষ নিয়ে এই মেডিকেল কলেজ। এখানে ছিল রোগীদের জন্য কয়েকটি কেবিন ও পেয়িং ওয়ার্ড (ভাড়ায় পাওয়া শয্যা)। সব মিলে আয়তন সাড়ে তিন হাজার বর্গফুট। এক তলায় এমন আয়তনের বাসাবাড়ি ঢাকাসহ দেশের বড় বড় শহরে বহু মানুষের আছে।
২১ জানুয়ারি সকাল ৯টায় চাঁদপুর সদর হাসপাতালের চতুর্থ তলায় গিয়ে দেখা যায়, অধ্যক্ষের কক্ষে তালা। উপাধ্যক্ষের কক্ষ খোলা থাকলেও তিনি অনুপস্থিত। তখনো কলেজের হেড ক্লার্ক (প্রধান করণিক) এসে কর্মস্থলে পৌঁছাননি। সদর হাসপাতালের চতুর্থ তলার এক পাশে থাকা পেয়িং ওয়ার্ড ও কয়েকটি কেবিন বন্ধ করে কলেজ চালু করা হয়েছে। গুনে দেখা গেল, এখানে কক্ষ মোট ১১টি। কলেজের যাবতীয় দাপ্তরিক কাজ হয় দুটি কক্ষে। অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের দুটি পৃথক কক্ষ। বাকি সব শিক্ষকের জন্য একটি কক্ষ। পরপর তিনটি কক্ষে ফিজিওলজি ল্যাব, বায়োকেমিস্ট্রি ল্যাব ও অ্যানাটমি ল্যাব। পাঠদানের বড় শ্রেণিকক্ষ মাত্র দুটি। আর একটি কক্ষের সামনে লেখা লাইব্রেরি। সেখানে কয়েকটি টেবিল ও চেয়ার রাখা আছে। কোনো বই, বইয়ের তাক চোখে পড়ল না।
অফিস, অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের কক্ষে তিনটি টয়লেট। আর শিক্ষার্থীদের দুটি টয়লেট পাশাপাশি, একটি ছাত্রদের, অন্যটি ছাত্রীদের জন্য। কলেজের একজন ছাত্রী বলেন, ‘ভাবতে পারেন, কলেজের প্রায় ২০০ ছাত্রীর জন্য মাত্র একটি টয়লেট!’
কলেজটিতে কোনো প্রাণচাঞ্চল্য চোখে পড়ল না। সকাল ৯টা থাকে ১০টা পর্যন্ত কিছু শিক্ষার্থীকে যাওয়া-আসা করতে দেখা গেল। এ সময়ে দুটি ক্লাস হয়েছে। একেকটি ক্লাসে ১৫-২০ জন করে শিক্ষার্থী, ৮০ শতাংশের ওপর ছাত্রী। শিক্ষার্থীদের জন্য কমনরুম নেই। চা-নাশতা বা খাবারের জন্য কোনো ক্যানটিন নেই। ক্লাস শেষে শিক্ষার্থীরা অবসর নেবেন, গল্প করবেন বা আড্ডা দেবেন, এমন এক ইঞ্চি খোলা জায়গা এই কলেজে নেই। পুরো কলেজ একটি কোচিং সেন্টারের মতো আঁটসাঁট। সকাল ১০টায় অধ্যক্ষ অধ্যাপক সাহেলা নাজনীনের কক্ষটি খোলা হয়। অধ্যক্ষ প্রতিদিন মোটামুটি এমন সময় কলেজে আসেন। সাহেলা নাজনীন একজন স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞ। থাকেন কুমিল্লা শহরে। চাঁদপুর শহর থেকে কুমিল্লা শহরের দূরত্ব ৭০ কিলোমিটারের মতো। প্রতিদিন সকালে এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে কলেজে আসতে তিনি নিয়মিতভাবে বিলম্ব করেন।
দেড় ঘণ্টার বেশি সময় ধরে কলেজের সমস্যা, স্বল্পতা বা সীমাবদ্ধতা নিয়ে অধ্যক্ষ সাহেলা নাজনীনের কথা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যে কলেজের সংকট স্পষ্ট হয়ে ওঠে। অ্যানাটমি চিকিৎসাশিক্ষা ও চিকিৎসা পেশার একেবারে মৌলিক বিষয়। কিন্তু এ বিষয়ে একজনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বা শিক্ষক কলেজে নেই। অর্থাৎ অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক বা সহকারী অধ্যাপক নেই। এই বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করছেন সার্জারি বিভাগের একজন সহকারী অধ্যাপক। শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে পাঠ দেওয়ার জন্য দেশের অন্য স্থান থেকে ‘অতিথি প্রভাষক’ আনা হয়। ফিজিওলজি বিভাগে কোনো অধ্যাপক বা সহযোগী অধ্যাপক নেই। একজন সহকারী অধ্যাপক দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে।
এমবিবিএসের দ্বিতীয় স্তরে ফরেনসিক মেডিসিন ও ফার্মাকোলজি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনা করা হয়। এই কলেজে ফরেনসিক মেডিসিনের কোনো পদই নেই। ফার্মাকোলজির অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী অধ্যাপকের পদ থাকলেও লোক নেই। কলেজে কোনো ফার্মাকোলজিস্ট বা ওষুধবিশেষজ্ঞ নেই। এভাবে বায়োকেমিস্ট্রি, প্যাথলজি, মেডিসিন, জেনারেল সার্জারি, পেডিয়াট্রিকস, গাইনি অ্যান্ড অবস, অ্যানেসথেসিওলজি, মাইক্রোবায়োলজি, নেফ্রোলজি, সাইকিয়াট্রিসহ অন্য প্রতিটি বিভাগে তীব্র শিক্ষকসংকট রয়েছে। এ সংকট চলছে কলেজের জন্মলগ্ন থেকে, অর্থাৎ ২০১৮ সাল থেকে। এ পরিস্থিতির উন্নতিরও কোনো লক্ষণ নেই। কলেজের অবকাঠামোগত দুর্বলতা এবং শিক্ষক স্বল্পতার বর্ণনা দিতে দিতে অধ্যাপক সাহেলা নাজনীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুঃখ এই যে আমরা কোয়ালিটি (মানসম্পন্ন) চিকিৎসক তৈরি করতে পারছি না।’
কলেজ থেকে পাওয়া একটি হিসাব বলছে, ৬টি বিভাগে প্রভাষকের পদ আছে ২০টি। এর মধ্যে ৮টি পদ শূন্য। পুরো কলেজে অধ্যাপক আছেন মাত্র দুজন। এর একজন অধ্যক্ষ নিজে। অধ্যক্ষ বলেন, ‘সব শিক্ষক একসঙ্গে কলেজে এলে বিপদে পড়ে যাই। তাঁদের একসঙ্গে বসতে দেওয়ার মতো জায়গা নেই।’
চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস প্রথম বর্ষের দুজন শিক্ষার্থী এবং এই কলেজ থেকে সদ্য এমবিবিএস পাস করা তিনজন ইন্টার্ন চিকিৎসকের সঙ্গে প্রথম আলোর কথা হয়। তাঁরা প্রত্যেকেই বলেছেন, হোস্টেল না থাকার কারণে বাসাভাড়া এবং কলেজে যাতায়াতের জন্য শিক্ষার্থীদের মাসিক ব্যয় অনেক বেশি।
প্রথম বর্ষের একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা হাতে–কলমে কিছু শিখতে পারি না। শিক্ষকেরা যে হাতে-কলমে শেখাবেন, এমন আয়োজন কলেজে নেই। যা আছে, তা অপ্রতুল।’
ইন্টার্ন চিকিৎসক নাকিবুল হাসান বলেন, অন্য বিভাগের শিক্ষকেরা ফরেনসিক মেডিসিনের ক্লাস নিতেন। আমাদের কোনো ফরেনসিক ল্যাবও নেই।
আরেকজন ইন্টার্ন চিকিৎসক সকওয়াত সাইফ উল্লাহ বলেন, ‘হাসপাতালে কাজ করছি ঠিকই, কিন্তু বিভিন্ন বিষয়ের সাব-স্পেশালিটি (যেমন মেডিসিনের পাশাপাশি নিউরোমেডিসিন) নিয়ে কোনো প্রশিক্ষণ আমাদের হচ্ছে না। কারণ, প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা হাসপাতালে নেই, জনবলও নেই। উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যাওয়া আমাদের জন্য সমস্যা হতে পারে।’
কলেজের প্রায় ২০০ ছাত্রীর টয়লেটের সংকটের কথা উল্লেখ করে ইন্টার্ন চিকিৎসক জাহিন নানজিবা বলেন, ‘আমরা এই কলেজের প্রথম ব্যাচ। সমস্যা অনেক। আমরা শিখতেছি খুবই কম।’
এমন কলেজ আছে আরও
অভিজ্ঞ শিক্ষক নেই, ল্যাবরেটরি নেই, হাতে–কলমে শেখার ব্যবস্থা নেই, লাইব্রেরি নেই—এ রকম স্বল্পতা নিয়ে আরও কয়েকটি সরকারি মেডিকেল চলছে বছরের পর বছর। নেত্রকোনা মেডিকেল কলেজের নিজস্ব ক্যাম্পাস নেই, একাডেমিক ভবন নেই। কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল হাসান বলেন, কলেজে একজনই মাত্র অধ্যাপক, তিনি নিজে। কলেজ ৪০ শতাংশ শিক্ষকস্বল্পতা নিয়ে চলছে।
তবে কলেজের জন্য এখনো কোনো জমি দিতে পারেনি সরকার। সরকার কোথায় জমি দেবে, কবে নিজস্ব ক্যাম্পাস হবে, নিজের ভবন গড়ে উঠবে—তার কোনো ঠিক নেই। অনিশ্চয়তার মধ্যে সময় পার করছে কলেজটি। নীলফামারী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক জিম্মা হোসেন দুই দিন আগে অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিয়েছেন। গত শুক্রবার মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কলেজের নিজস্ব কোনো ক্যাম্পাস নেই। অন্যের জায়গা ব্যবহার করে তাঁরা কলেজ চালাচ্ছেন। নিজস্ব জমি অধিগ্রহণ বাকি আছে। ব্যবহারিক ক্লাসের জন্য শিক্ষার্থীরা সাত কিলোমিটার দূরে নীলফামারী সদর হাসপাতালে যান। ওই পথে কোনো বাস চলে না, কলেজের বাসও নেই।
অধ্যক্ষ জানান, কলেজে ৭৮ জন শিক্ষকের মধ্যে এখন কাজ করছেন ৫৫ জন, অর্থাৎ ৩০ শতাংশ শিক্ষকের পদ খালি। কলেজে অধ্যাপকের পদ ১১টি, আছেন ২ জন।
নওগাঁ, মাগুরা ও সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের অবস্থাও একই ধরনের।
এ অবস্থা কত দিন চলবে
ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, পাকিস্তান আমলে ১৯৪৬ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত ৬টি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ১৯৪৬ সালে প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ। বাকিগুলো হলো ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও সিলেট মেডিকেল কলেজ। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৭২ সালে দুটি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করে—একটি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, অন্যটি রংপুর মেডিকেল কলেজ।
বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯২ সাল থেকে পাঁচটি এবং ২০০৫ সালে একটি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করে। সেনা–সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৮ সালে ৩টি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করে। আর ২০১০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ২০টি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করে আওয়ামী লীগ সরকার, অর্থাৎ ৫৪ শতাংশ সরকারি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে আওয়ামী লীগের শেষ ১৬ বছরে। এ সময়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন অধ্যাপক আ ফ ম রুহুল হক, মোহাম্মদ নাসিম ও জাহিদ মালেক।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ‘বাংলাদেশ স্বাস্থ্য জনবল কৌশলপত্র ২০২৪’ প্রকাশ করেছে ১৩ জানুয়ারি। এতে বলা হয়েছে, সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে ৩৪ শতাংশ অধ্যাপকের পদ এবং ৪৬ শতাংশ সহযোগী অধ্যাপকের পদ খালি। আর সব ধরনের শিক্ষকের ৪৪ শতাংশ পদ খালি। কলেজগুলোতে এত পদ খালি রেখে মানসম্পন্ন চিকিৎসা শিক্ষা দেওয়া উদ্বেগের বিষয়।
প্রস্তুতি ছাড়া, কলেজের নিজস্ব জায়গার ব্যবস্থা না করে, একাডেমিক ভবন ও হাসপাতাল ছাড়া, শিক্ষার্থীদের হোস্টেলের ব্যবস্থা না করে, প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ না দিয়ে বছর বছর মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে মূলত রাজনৈতিক বিবেচনায়।
১৭ জানুয়ারি ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার দিন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরহাজান বেগম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, খারাপ অবস্থায় থাকা কয়েকটি মেডিকেল কলেজ বন্ধ করে সেসব কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অন্য কলেজে অঙ্গীভূত করার কথা ভাবা হচ্ছে।
বিষয়টি কিছুটা জটিল ও কঠিন বলে মনে করছেন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। সর্বশেষ প্রতিষ্ঠিত এই ছয় মেডিকেল কলেজে বর্তমানে ১ হাজার ২০০–এর বেশি শিক্ষার্থী আছেন।
কলেজগুলো নিয়ে কী করা যায়, তা নির্ধারণ করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরকে। ২৪ জানুয়ারি জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘ছয়-সাতটি মেডিকেল কলেজের অবস্থা খারাপ। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এসব কলেজের বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে আমরা কাজ করছি। আমাদের কথা বা প্রতিবেদন আমরা দু-এক দিনের মধ্যে মন্ত্রণালয়কে জানাব। এরপর মন্ত্রণালয় বা মন্ত্রণালয় গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি কলেজের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।