ভয়াবহ তুষারঝড় : যুক্তরাষ্ট্রে জরুরি অবস্থা জারি, ১৫০০ ফ্লাইট বাতিল
যুক্তরাষ্ট্রে তুষারঝড়ের কারণে সাতটি অঙ্গরাজ্যে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। সবমিলিয়ে দেশটির ৩০টি অঙ্গরাজ্যের ছয় কোটির বেশি মানুষ দুর্যোগে পড়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। অনেক স্থানে তাপমাত্রা রেকর্ড মাত্রায় কমে গেছে। উড়োজাহাজ চলাচলও ব্যাহত হয়েছে। ২ হাজারেরও বেশি ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে এবং আরও কমপক্ষে দেড় হাজার ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি ও সংবাদমাধ্যম বিবিসি। এদিকে কয়েক দশকের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে এটা সবচেয়ে ভয়াবহ তুষারঝড় হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ। কয়েকটি অঙ্গরাজ্যের স্কুল ও সরকারি অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তুষারঝড়টি আর্কটিক থেকে এখন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এদিকে মার্কিন কর্তৃপক্ষ এই ঝড় মোকাবিলায় জারি করেছে “উচ্চ সতর্কতা”। লাখো মার্কিনি এই শক্তিশালী ঝড় মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে এই ঝড় সবচেয়ে বেশি তুষারপাত এবং হিম শীতল তাপমাত্রাসহ “তুষার ঝড়ের পরিস্থিতি” বয়ে আনতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসের উদ্ধৃতি দিয়ে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছে, ঝড়টি যুক্তরাষ্ট্রের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয়েছে এবং আগামী কয়েক দিনের মধ্যে পূর্ব দিকে অগ্রসর হবে। ঝড়ের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সোমবার পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলের অর্ধেক এলাকাকে আর্কটিক বাতাসের গভীর বরফের মধ্যে নিমজ্জিত করবে বিশাল এই ঝড়। এই ঝড়ে ৬ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। কেন্দ্রিয় সমভূমি থেকে মধ্য-আটলান্টিক পর্যন্ত অঙ্গরাজ্যগুলোতে বরফ, তুষার এবং ঝড়-বৃষ্টির সতর্কবার্তা জারি করেছে আবহাওয়া সংস্থা। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পশ্চিম কানসাস থেকে উপকূলীয় অঙ্গরাজ্য মেরিল্যান্ড, ডেলাওয়্যার এবং ভার্জিনিয়া পর্যন্ত শীতকালীন ঝড়ের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
আবহাওয়া দপ্তর সতর্ক করে বলেছে, উত্তর-পূর্ব কানসাস থেকে উত্তর-মধ্য মিসৌরি পর্যন্ত অঞ্চলগুলো গত “এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভারী তুষারপাতের” মুখোমুখি হতে পারে। এদিকে একটি ট্র্যাকিং ওয়েবসাইটের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ঝড়ের প্রভাবে এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ২ হাজারেরও বেশি ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে এবং অন্তত দেড় হাজার ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে বহির্গামী ফ্লাইটের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কানসাস সিটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। সেখানে ৮৬ শতাংশ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।