মায়ের আর্তি : আমার ছেলের কি দোষ ছিলো?
সংসারের উপার্জনক্ষম একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বার বার কেঁদে বুক ভাসাচ্ছেন মা জেসমিন আক্তার (৩৫)। ক্লাস ফোর পর্যন্ত পড়ালেখা করার পর সংসারের ঘানি টানতে জীবনযুদ্ধে নেমে পড়ে শিশু ছেলে সিয়াম। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিলো ছিলো ২১। টাইলস্ মিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করতেন তিনি।
চাঁদপুর সদরের মৈশাদী ইউনিয়নের হামানকর্দি গ্রামের সর্দার বাড়ির সোহাগ সর্দারের ছেলে সিয়াম। তারা এক ভাই ও দুই বোন। দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। বাবা সোহাগ সর্দার অনেকটা অসুস্থ। তেমন কাজ করতে পারেন না। ছেলে সিয়ামই সংসার চালাতো। টাইলস্ মিস্ত্রির সহকারীর কাজ ছেড়ে চলতি মাসের প্রথম দিকে এলাকার এক বড়ো ভাইয়ের সহযোগিতায় ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বরে বেনারসি পল্লীতে রাব্বানী হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে হোটেল বয় হিসেবে চাকুরি নেন। ১৮ জুলাই রাত দশটায় হোটেলের কাজ শেষ করে নিজ বাসায় ফিরতে গিয়ে একটু সামনে গেলেই গুলিবিদ্ধ হন সিয়াম। গুলি তার চোখ দিয়ে ঢুকে মাথার পেছন দিয়ে বের হয় বলে জানান সিয়ামের বাবা সোহাগ সর্দার। এরপর স্থানীয়রা গুলিবিদ্ধ সিয়ামকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরদিন ১৯ জুলাই সিয়ামের মামাতো ভাই আতিক ভোর বেলায় তার লাশ নিয়ে এলাকায় আসেন। শুক্রবার জুমার নামাজের পর সিয়ামকে নিজ ঘরের পাশে দাফন করা হয়। সেদিন লাশ অ্যাম্বুলেন্সযোগে নিয়ে আসাসহ দাফন কাজের সহযোগিতা নগদ বিশ হাজার টাকা প্রদান করেন হোটেল মালিক।
সিয়াম কার গুলিতে মারা গেছেন বাবা সোহাগ ও মা জেসমিন আক্তার বলতে পারেন না। তারা এখন সংসারের উপার্জনক্ষম একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে অন্ধকার দেখছেন বলে জানান। সামনের দিনগুলো কীভাবে কাটাবেন এই চিন্তা ভর করেছে তাদের মাঝে। মা জেসমিন বার বার বলেন, ‘আমার ছেলের কী দোষ ছিল? কেন তাকে গুলি করা হলো?’