চাঁদপুরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বিএনপি-জামায়াতের শত শত নেতা-কর্মী
চাঁদপুরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। নাশকতার অভিযোগে পুলিশের চলমান গ্রেফতার অভিযানে চাঁদপুর জেলা বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠন এবং বিভিন্ন ইউনিটের শত শত নেতা-কর্মী পরিবার ছেড়ে আত্মগোপনে। একই অভিযোগে জামায়াতের অনেক নেতা-কর্মী বাড়ি ছেড়ে পলাতক রয়েছেন।
গত কয়েকদিনে চাঁদপুর জেলায় বিএনপি-জামায়াতের ৭৫ জনের অধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জেলা পুলিশ অফিস সূত্রে জানা গেছে। প্রতিরাতেই পুলিশ নেতা-কর্মীদের বাসা-বাড়িতে হানা দিচ্ছে। অভিযানের ভয়ে শহরের অনেক ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা-কর্মী ঘরছাড়া। তারা এখন পলাতক জীবনযাপন করছে। জেলার বিরোধী মতাদর্শের রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও তাদের পরিবারের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে সারাদেশের মতো চাঁদপুর ও হাজীগঞ্জে ব্যাপক নৈরাজ্য হয়। চাঁদপুর শহরে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে (১৮ জুলাই) কোটা বিরোধী ছাত্র বিক্ষোভে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। শপথ চত্বরে এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীরা চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের ওপর চড়াও হয়ে হামলা ও ভাংচুর করে। অভিযোগ উঠে পুলিশের উপর আক্রমণ ও সরকারি কাজে বাধা প্রদানের। হামলায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন।
ছাত্র বিক্ষোভের তোপের মুখে ওইদিনই জেলা আওয়ামী লীগ অফিসে হামলার ঘটনার জের ধরে সন্ধ্যার পর শহরের বিভিন্ন স্থানে তাণ্ডব চলে। আগে আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা ও ভাংচুর পরে জেলা বিএনপি অফিসও ক্ষোভের রোষানলে হামলা ও ভাংচুরের শিকার হয়। তাতে বাদ পড়েনি জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের বাসভবনও। হামলাকারীরা জেলা বিএনপি সভাপতির বাসভবন মনিরা ভবনে হামলা ভাংচুর করেই ক্ষান্ত হয়নি, বাসভবনের নিচতলা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।
এসব ঘটনায় জেলার সদর মডেল থানায় পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। একটি পুলিশ বাদী, অপরটি জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়। এ দুই মামলায় ১৪জন এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাত অনেককে আসামী করা হয়েছে।
অন্যদিকে হাজীগঞ্জের সহিংসতার ঘটনায় হাজীগঞ্জ থানায় ৪টি ও শাহরাস্তি থানায় ১টি সব মিলিয়ে জেলাতে মোট ৭টি মামলা দায়ের করা হয়। জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে সভাপতির বাড়িতে আক্রমণ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ মামলা করেনি বলে থানা সূত্রে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির ক’জন নেতা-কর্মী বলেন, চাঁদপুর শহরে বিএনপির কোনো কর্মসূচি ছিলো না। সারাদেশের মতো চাঁদপুরেও ছাত্ররা সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করেছে। কোনো ধরনের হামলা সহিংসতা কিংবা নাশকতায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা জড়িত নয়। তারপরও পুলিশ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে। প্রতিরাতেই নেতা-কর্মীদের বাড়ি-ঘরে অভিযান চালাচ্ছে। এতে আমাদের অগণিত নেতা-কর্মী বাসা-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ হয়রানি বন্ধের দাবি জানান তারা।