চাঁদপুর বড় স্টেশন এলাকায় মাদক বিক্রির আধিপত্য বিস্তারে সংঘর্ষ
চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন এলাকা মাদকের স্বর্গরাজ্য, অভয়ারণ্য-এমন মন্তব্য ছিল খোদ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের। এই দপ্তরের চাঁদপুর জেলার সাবেক সহকারী পরিচালক দিদারুল আলমের এমন মন্তব্য ছিল বড় স্টেশন এলাকা নিয়ে। খোদ জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় তিনি এ কথা বলেন। বাস্তবেও তাই। বড় স্টেশন এলাকা বলতে পৌর ৬নং ওয়ার্ডস্থ ৩নং কয়লা ঘাট এবং ৭নং ওয়ার্ডস্থ কুলি বাগান, নিশি বিল্ডিং রোড, ক্লাব রোড, উত্তর শ্রীরামদী, লোকো কলোনী, আক্কাস আলী বস্তি এলাকাকে বুঝায়। এসব এলাকায় মাদকের রমরমা বেচাকেনা চলে। আর পুরো ৬নং এবং ৭নং ওয়ার্ডের মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে রহিম, রানা এবং ঈমান। তাদের মাঝে আধিপত্য বিস্তার নিয়েই শনিবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। ওইসব এলাকায় সরজমিনে গেলে স্থানীয়রা এসব তথ্য জানান।
জানা যায়, শনিবার বিকেল থেকে কয়লা ঘাট এলাকা ও ক্লাব রোড এলাকার দুই গ্রুপ সশস্ত্র সন্ত্রাসীর মাঝে সংঘর্ষ চলতে থাকে। এক গ্রুপের নেতৃত্ব দেয় মাদকের ডিলার খ্যাত রহিম এবং আরেক গ্রুপের নেতৃত্ব দেয় রানা ও ঈমান। এই তিনজন এবং মিলন ও লিটন পুরো বড় স্টেশন এলাকায় মাদক নিয়ন্ত্রণ করে। শনিবার বিকেলে এবং সন্ধ্যার পর থেকে তাদের মাঝে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। উভয় গ্রুপ দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে একে অপরের উপর হামলা চালায়। ক্লাব রোড এলাকায় বহু দোকান ভাংচুর করে এবং রাস্তায় চলাচল করা অটোবাইক ভাংচুর করে। রাত ১১টার দিকেও কয়লা ঘাট এলাকায় একদল যুবক দেশীয় ধারালো বড় বড় অস্ত্র নিয়ে অবস্থান করতে দেখা যায়।
এদিকে বিকেলে সংঘর্ষের খবর পেয়েই মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সন্ধ্যার পর সংঘর্ষ আরো ব্যাপক হলে আরো বেশি সংখ্যক পুলিশ সে এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রাতে সেনাবাহিনীও সেখানে টহল দেয়। তবে রাতভর সন্ত্রাসীরা এলাকায় সশস্ত্র মহড়া দেয় বলে এলাকাবাসী জানায়। রাতভর তারা আতঙ্কের মধ্যে ছিল। গতকালও তারা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটায়। পৌর ৬নং ও ৭নং ওয়ার্ডের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের কঠোর হাতে দমন না করলে এবং তাদের দুর্গ না ধ্বংস করলে নিরীহ মানুষ সেখানে শান্তিতে বসবাস করতে পারবে না বলে এলাকাবাসী আশঙ্কা করেছেন।
এ বিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শেখ মুহসীন আলম জানান, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই এবং সন্দেহভাজন এলাকায় অভিযান চালাই। পুলিশ উপস্থিত হলে তারা সরে যায়। রাতে সেনাবাহিনীও সে এলাকায় টহল দেয়। গতকালও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল)সহ পুলিশ সে এলাকায় মহড়া দেয়। আক্কাছ আলী স্কুল মাঠে খেলাকে কেন্দ্র করে রানা-ঈমান গ্রুপের মধ্যে মারামারি হয় বলে জানান ওসি মুহসিন আলম। তবে থানায় কোনো পক্ষ থেকেই অভিযোগ দেয়া হয়নি। পুরো এলাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে রয়েছে বলে জানান তিনি।