• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

শেষ মুহুর্তের শ্বাসরুদ্ধকর জয়ে ফাইনালে ইংল্যান্ড

প্রকাশ:  ১১ জুলাই ২০২৪, ০৮:৪৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

৮১ মিনিটে দলের সবচেয়ে বড় তারকা হ্যারি কেনকে তুলে নেন কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। নামান ওলি ওয়াটকিন্সকে। কেউ কি জানতো ৯ মিনিটের মধ্যে এই ওয়াটকিন্সই ইংল্যান্ডকে ফাইনালের ভেলায় চড়াবেন!

ইউরোর দ্বিতীয় সেমিফাইনালে সিগনাল ইদুনা পার্কে লড়াইয়ে নামে ইংল্যান্ড-নেদলারল্যান্ডস। ওয়াটকিন্সের অন্তিম সময়ের গোলে ২-১ ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইংল্যান্ড। ১৪ জুন রানে বার্লিনের ফাইনালের ইংলিশদের প্রতিপক্ষ স্পেন।

ম্যাচ গড়াচ্ছিল অতিরিক্ত সময়ের দিকে। ঠিক তখনি ওয়াটকিন্স জাদু। ৮৯.৫৯ সেকেন্ড। রাইসের পাস ডান দিকে খুঁজে পায় বদলি নামা পালমারকে। তিনি বেশি দেরি করেননি। ডি বক্সের ডান দিকে বাড়িয়ে দেন আরেক বদলি স্ট্রাইকার ওয়াটকিন্সকে। বল পেয়ে দ্রুত বেগে শরীর ঘুরিয়ে ডান পায়ের কোনাকুনি শটে বল জালে জড়ান তিনি। দ্বিতীয়ার্ধে এটিই ছিল ইংল্যান্ডের একমাত্র অনটার্গেট শট।

ইউরোর মঞ্চে সেমিতে এমন সময়ে আর কখনো গোল হয়েনি। হ্যারি কেন শেষ মুহুর্তে উঠে গেলেও পেনাল্টি থেকে সমতা সূচক গোলটি করেন তিনি। ১৬ মিনিটে ডি বক্সে ভলি করতে যাচ্ছিলেন মাত্র, পা বাড়িয়ে ভুলটা করেন ডামফ্রিস। মাটিতে পড়ে যান কেন, ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির মাধ্যমে পেনাল্টি দেন রেফারি।

ডান দিকে মাটি গড়ানো শটে লক্ষ্যভেদ করেন বায়ার্ন মিউনিখ তারকা। ইউরোর নকআউট পর্বে এটি তার ৬ নম্বর গোল, এবারের আসরে তৃতীয়। আর কোনো ফুটবলারের এমন কীর্তি নেই।

অথচ ম্যাচের শুরুতে ৩৫ গজ দূর থেকে সিমন্সের চোখ ধাঁধানো বুলেট গতির শট এগিয়ে দেয় নেদারল্যান্ডসকে। ডাচরা লিড ধরে রাখতে পারেনি ৯ মিনিটও।

রাইসের ভুলে বল নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন জাভি সিমন্স। এগিয়ে যান ডি বক্সের দিকে। শট করার জায়গা পেতেই মুহুর্ত দেরি করেননি। হাওয়ায় ভেসে বল ডান দিক দিয়ে খুঁজে নেয় জাল। চেষ্টা করেও নাগাল পাননি পিকফোর্ড।

২৩ মিনিটে ডামফ্রিস ডাচদের অবতার হয়ে আসেন। ডান দিক থেকে ফিল ফোডেনের ডিফেন্স চেরা পাস ঢুকে যাচ্ছিল জালের দিকে। পোস্টের ভেতরে থেকে গোললাইন থেকে বল সরিয়ে গোল বাঁচিয়ে দেন ডামফ্রিস!

৩০ মিনিটে আবার ডামফ্রিস। এবার তার হেড লাগে ইংলিশদের বারে। ২ মিনিট পরে আবার ফোডেনের আক্রমণ। এবার যেন আগের রাতে ১৬ বছর বয়সী ইয়ামালের অসাধারণ গোলের মতো শট! কিন্তু এবারও ফোডেন ফিরেন খালি হাতে। বল ডান পোস্টে লেগে লক্ষ্যহীন ছুটে যায়।

৩৯ মিনিটে মানিওর ব্যাকহিল থেকে গোলের সুযোগ পান ফোডেন। এবার গোল পোস্ট নয়, বাধা হয়ে দাঁড়ান ভারব্রুগেন। বিরতির আগ পর্যন্ত আক্রমণ পালটা আক্রমণ চলতে থাকে।

বিরতির পর সমতায় ফেরে দুই দল। শুরুর দিকে ইংলিশরা বারবার আক্রমণের চেষ্টা করে। বল হারাতে থাকে টোটাল ফুটবলের দেশ। তবে ৬৫ মিনিটে দারুণ আক্রমণ করে নেদারল্যান্ডস। ফ্রি কিক থেকে ডাচদের আক্রমণ দারুণ ডাইভে রুখে দেন পিকফোর্ড।

 
ফোডেনের ভুলে ৭৯ মিনিটে বুকাও সাকার গোল বাতিল হয় অফসাইডে। ৮৪ মিনিটে ভেগহর্স্টের শটের গতিপথ এঁকে দেন গুয়েহি। এর পর ৯০ মিনিটে ওয়াটকিন্সের জাদু!

কমলা উৎসবে শোকের জল ঢেলে উৎসবে মেতে ওঠে থ্রি-লায়ন্সরা। বুনো উল্লাস যেন থামবার নয়। ভার্জিল ভ্যান ডাইকদের নিথর হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া যেন কিছু করার ছিল না।

বছর চারেক আগের ইউরোতেও ফাইনাল খেলেছে ইংল্যান্ড। এ নিয়ে সাউথগেটের অধীনে টানা দুই ইউরোর ফাইনালে কেন অ্যান্ড কোং। ওয়েম্বলির আক্ষেপ বার্লিনে ঘুচে যায় নাকি আবারও বেদনার রঙে নীল হতে হয়; বলে দেবে সময়।

সর্বাধিক পঠিত