সমাজ পরিবর্তনে সার্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থার বিকল্প নেই : রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেছেন, সমাজ উন্নয়ন ও পরিবর্তনের জন্য একটি বৈষম্যহীন ও সার্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই। ‘জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৪’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে আজ এ কথা বলেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, আনুষ্ঠানিক শিক্ষার মূলভিত্তিই হলো প্রাথমিক শিক্ষা। প্রাথমিক শিক্ষা দিয়েই একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবনের শুরু। সুশিক্ষিত ও মূল্যবোধসম্পন্ন জাতি গঠনে শিক্ষাই মূল চাবিকাঠি।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৪’ উদযাপন ও ‘প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২৩’ প্রদানের উদ্যোগকে স্বাগত জানান। এ উপলক্ষ্যে তিনি দেশের সকল কোমলমতি শিক্ষার্থীর প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অকৃত্রিম ভালোবাসা জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্ব অনুধাবন করে শিক্ষাকে সর্বজনীন ও বাধ্যতামূলক ঘোষণা, প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, ড. কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন গঠন, ধ্বংসপ্রাপ্ত স্কুল-কলেজ পুনর্নির্মাণ ও বাজেটে শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দসহ বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষা দর্শনকে অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার শিক্ষাখাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণে নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে,’ বলেন তিনি।
তিনি বলেন, সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপের ফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের ভর্তির হার বৃদ্ধি, শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার হ্রাস, বিদ্যালয়ে উপস্থিতি হার বৃদ্ধি ও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। ছাব্বিশ হাজারের অধিক প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়েছে এবং শিক্ষকের সংখ্যাও বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ ও শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশে পাঠদান একটি আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন চৌকস প্রজন্ম গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার এমন পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে- যাতে শিশুরা স্কুলে যেতে উৎসাহী হয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর পাশাপাশি অভিভাবক ও স্কুল পরিচালনা কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে এ বছরের জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহের প্রতিপাদ্য- ‘শিশুবান্ধব শিক্ষা, স্মার্ট বাংলাদেশের দীক্ষা’ যথার্থ ও সময়োপযোগী হয়েছে বলেও তিনি মনে করেন। সাহাবুদ্দিন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘সোনার বাংলা’ বিনির্মাণের লক্ষ্যে একটি সুখী-সমৃদ্ধ ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতেন।
একটি সুশিক্ষিত, মেধাবী ও বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠনের মাধ্যমে জাতির পিতার সেই স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে আসতে রাষ্ট্রপতি সকলের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা অর্জিত হবে এবং অচিরেই আমরা একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও বিজ্ঞানমনস্ক স্মার্ট জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবো। প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০২৩ প্রাপ্ত সকলকে তিনি আন্তরিক অভিনন্দন জানান।