মতলবে স্ত্রীকে আগুন দিয়ে পুড়লো স্বামী
শ্বাশুরী জেল হাজতে, স্বামী পলাতক
মতলব দক্ষিণ উপজেলার নায়েরগাঁও উত্তর ইউনিয়নের বকচর গ্রামে স্বামীর দেয়া আগুনে পুড়ে মরল স্ত্রী খাদিজা আক্তার (২৩)। এ ঘটনায় শাশুড়ি জায়েদা খাতুন (৬৭) কে থানা পুলিশ আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। তবে স্বামী ইব্রাহিম প্রধান পলাতক রয়েছেন।
১৪ এপ্রিল রবিবার খাদিজার পিতা খবর পেয়ে থানায় মামলা করেন। ইব্রাহিম প্রধানের বাড়ীর ওই বকচর গ্রামেই। এলাকাবাসি ও পরিবার জানায়, ঈদুল ফিতরের দিন সকালে ৭টার দিকে স্বামী ইব্রাহিম প্রধান যৌতুক না পেয়ে স্ত্রী খাদিজা আক্তারের শরীরে শ্যালো মেশিনের ডিজেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় খাদিজার চিৎকারে ছুটে এসে প্রতিবেশী মনির ও মহসিন পাটের বস্তা ভিজিয়ে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। পরে অগ্নিদগ্ধ খাদিজাকে আহত অবস্থায় ঢাকাস্থ শেখ হাসিনা বার্ন ও ইনস্টিটিউট ভর্তি করা হয়।
দুই দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাত দেয়টায় খাদিজা মারা যায়। খাদিজার শরীরের প্রায় ৯০ ভাগ আগুনে পুড়ে গেছে। মৃত্যুর বিষয়টি খাদিজার পরিবারকে গোপন করে তড়িঘড়ি করে মরদেহ দাফন করা হয়। আজ রবিবার খাদিজার বাবা মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে থানায় মামলা করেন। পুলিশ এ ঘটনায় খাদিজার শাশুড়ি জায়েদা খাতুনকে আটক করেছে।
জানা যায়, খাদিজা ইব্রাহিমের তৃতীয় স্ত্রী। এর আগে ইব্রাহিম আরও ২টি বিয়ে করেছেন। যৌতুকের নির্যাতনের কারণে আগের দুই স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়। খাদিজার দুটি ছেলে রয়েছে। ৪ বছর আগে খাদিজার সঙ্গে ইব্রাহিমের বিয়ে হয়। তখন থেকেই ইব্রাহিম ও তার মা যৌতুকের জন্য খাদিজাকে নির্যাতন করে আসছে।
খাদিজার বাবা খোকন মিয়া বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই ইব্রাহিম খাদিজাকে যৌতুকের জন্য মারধর করত। এ সব নিয়ে অনেকবার শালিস বৈঠকও হয়েছে। আমার যৌতুক দেওয়ার সামর্থ্য নেই দেখে মেয়েটা মুখ বুঝে সব কিছু সহ্য করে গেছে।’ মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিপন বালা জানান, খাদিজার শাশুড়িকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। স্বামী পলাতক রয়েছে। তাকে ধরার চেষ্টা চলছে।