নিত্যপণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে ব্যবসায়ীদের সাথে চাঁদপুর চেম্বারের মতবিনিময় সভা
কেউ যাতে বলতে না পারে ব্যবসায়ীগণ সিন্ডিকেট করে নিত্য পণ্যের দাম বৃদ্ধি করেছে
আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে নিত্যপণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও যৌক্তিক পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছেন চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম।
গতকাল ২ মার্চ দুপুর ১২টায় চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির আয়োজনে চেম্বার কার্যালয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সভাপ্রধানের বক্তব্যে চেম্বার প্রেসিডেন্ট জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম ব্যবসায়ীদের অগ্রিম ঈদ মোবারক জানিয়ে বলেন, সারা দেশে চাঁদপুর চেম্বারের একটি সুনাম রয়েছে। আমরা শুধু ব্যবসাই করি না, সামাজিক, সেবামূলক কাজের সাথেও জড়িত। আর তা সম্ভব হচ্ছে ব্যবসায়ীদের আন্তরিকতার জন্যে। আমরা এই সুনাম সকল ক্ষেত্রেই অক্ষুণ্ন রাখতে চেষ্টা করবো। তিনি বলেন, রমজান বা রোজা আসলেই ব্যবসায়ীদের নামে একটি গুজব উঠে, তারা নাকি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অধিক মুনাফা অর্জনে লিপ্ত হয়। আমরা এই গুজব থেকে দূরে থাকতে চেষ্টা করবো। তিনি প্রতিটি ব্যবসায়ীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আমি মনে করি আপনারা সকল ব্যবসায়ীই নীতি আদর্শ মেনে ব্যবসা করেন, তারপরও আপনাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে রমজান মাসে আপনারা নিয়ম মেনেই নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করবেন, বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সঙ্কট হতে পারে এমন কার্যক্রম থেকে দূরে থাকবেন এবং আখেরাতের কথা লক্ষ্য রেখে মানুষের কল্যাণে যৎসামান্য লাভে ব্যবসা করতে চেষ্টা করবেন। তিনি আরো বলেন, চাঁদপুর আমদানি নির্ভর মোকাম, চাইলেই আমরা অধিক দামে পণ্য বিক্রি করতে পারি না এবং গুদামজাত করারও সুযোগ থাকে না। তিনি রমজানকে কেন্দ্র করে যাতে প্রশাসন বা বাজার নিয়ন্ত্রণ সংস্থা এবং সাধারণ মানুষ বলতে না পারে, চাঁদপুরের ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম বৃদ্ধি করেছে। তিনি বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখার জন্যে সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।
মতবিনিময় সভায় নেতৃবৃন্দের মাঝে বক্তব্য রাখেন চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায়, সহ-সভাপতি তমাল কুমার ঘোষ, চেম্বার পরিচালক ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম রোমান এবং চেম্বার পরিচালক নাজমুল আলম পাটোয়ারী।
চেম্বার পরিচালক গোপাল চন্দ্র সাহার সঞ্চালনায় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের মাঝে আরো বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর লবণ মিলস্ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, চাঁদপুর বেকারী মালিক সমিতির সভাপতি এসএম জয়নাল আবেদীন, ভোজ্য তেল ব্যবসায়ী সুবল পোদ্দার, চাঁদপুর রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুদ আখন্দ, বিপণীবাগ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জয়নাল মাঝি, পাইকারী আলু-পেঁয়াজ ব্যবসায়ী দুলাল কাজী প্রমুখ।
ব্যবসায়ীদের মাঝে কেউ কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অনেক সময় মোবাইল কোর্টের নামে আমরা হয়রানির শিকার হই। দেখা যায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনসহ ভোক্তা অধিকারের নেতৃত্বেও মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হচ্ছে। সম্মানিত ম্যাজিস্ট্রেটগণ জরিমানা করতে গিয়ে বড়-ছোট ব্যবসার ধরণ দেখেন না, এমনভাবে জরিমানা করেন যে, ব্যবসায়ীর দেয়ার ক্ষমতা বা পুঁজি কতোটা আছে তা উনারা চিন্তা করেন না।
নেতৃবৃন্দের মাঝে এ সময় উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর জেলা জজকোর্টের বিজ্ঞ আইনজীবী অ্যাডঃ জসিম পাটোয়ারী, চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক মাঈনুল ইসলাম কিশোর, চাল ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি শম্ভুনাথ সাহা, ডাল ব্যবসায়ী প্রমোদ কুমার দাস, সুতা ব্যবসায়ী সমিতির নেতা অতিন্দ্র সাহা, তিমির নাহা, সবুজ কুমার পোদ্দার, চেম্বার অব কমার্সের সচিব আব্দুল মোতালেব শেখ টুটুল, পাইকারী চাল ব্যবসায়ী গোবিন্দ সাহা প্রমুখ।
চেম্বার প্রেসিডেন্ট সকল ধরনের পণ্য ক্রয় বিক্রয়ে মেমো প্রদানসহ বাজার মূল্য তালিকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দৃশ্যমান স্থানে রাখার জন্যে ব্যবসায়ীদের প্রতি অনুরোধ জানান।