শাহরাস্তিতে চিকিৎসক হত্যায় দুই কিশোরের ১০ বছরের আটকাদেশ
শাহরাস্তিতে অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক আনোয়ার উল্লাহ (৮৫) হত্যা মামলায় অভিযুক্ত কিশোর মোঃ শফিউল আলম শুভ (১৪) ও মোঃ আসিফ মিয়াজী বাবু (১৭)কে ১০ বছরের আটকাদেশ দিয়েছে আদালত। ১২ ফেব্রুয়ারি সোমবার বিকেলে চাঁদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ আব্দুল হান্নান এই রায় দেন। অভিযুক্তদের উপস্থিতিতেই রায় দেয় আদালত। আটকাদেশপ্রাপ্ত কিশোর শুভ শাহরাস্তি উপজেলার বানিয়াচোঁ গ্রামের মিয়াজী বাড়ির মোঃ জামাল হোসেনের ছেলে এবং বাবু একই বাড়ির মফিজুল ইসলামের ছেলে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক আনোয়ার উল্লাহ চাকুরি থেকে অবসরগ্রহণ করার পর থেকে নিজ বাড়ি বানিয়াচোঁ গ্রামের মিজি বাড়িতে নিজস্ব চেম্বারে এলাকার লোকদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করতেন। ২০১৭ সালের ২৬ জানুয়ারি রাতে তিনি খাওয়া-দাওয়া শেষ করে নিজ কক্ষে ঘুমাতে যান। স্ত্রী মৃত্যুবরণ করায় ওই ঘরে তিনি একাই থাকতেন। পাশের ঘরে থাকতেন তার ছেলে ও ছেলের বউ, নাতি-নাতনিরা। রাতের কোনো এক সময় দুর্বৃত্তরা আনোয়ার উল্লাহকে গলা কেটে হত্যা করে ওই ঘরের সিঁড়ির পাশে রেখে চলে যায়। পরদিন ২৭ জানুয়ারি সকালে স্থানীয় চা দোকানি তোয়াব আলী গলাকাটা মরদেহ দেখে পরিবারের লোকজনকে জানান। মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ময়না তদন্তের জন্যে মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় চিকিৎসক আনোয়ার উল্লাহর ছেলে মোশারফ হোসেন ২৮ জানুয়ারি শাহরাস্তি থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর শাহরাস্তি থানা পুলিশ আটকাদেশপ্রাপ্ত দুই কিশোরকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহরাস্তি থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ নূর হোসেন মামুন মামলাটি তদন্ত শেষে একই বছরের ৯ জুন আদালতে পৃথক দুটি চার্জশিট দাখিল করেন।
সরকার পক্ষের আইনজীবী বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সাইয়েদুল ইসলাম বাবু জানান, মামলাটি ৬ বছর চলাকালীন সময় আদালত ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে। সাক্ষ্য গ্রহণ ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে দুই কিশোরের উপস্থিতিতে বিচারক এই রায় দেন। আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট শহীদুল্লাহ পাটোয়ারী।