• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

চাঁদপুর পৌরসভার ১১নং ওয়ার্ডে ডাঃ দীপু মনির গণসংযোগ ও উঠোন বৈঠক

১৫ বছরে মাত্র ৫ দিন ছুটি নিয়েছি

প্রকাশ:  ০৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১৪:৪৪
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

চাঁদপুর পৌরসভার ১১নং ওয়ার্ডে ব্যাপক গণসংযোগ ও উঠোন বৈঠক করেছেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-৩ (চাঁদপুর সদর ও হাইমচর) আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ডাঃ দীপু মনি। ১ জানুয়ারি সোমবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ গুণরাজদীস্থ আনোয়ারা ইসলাম দাখিল মাদ্রাসা সংলগ্ন মাঠ এবং রাতে মধ্য ইচলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে তিনি স্থানীয়দের সাথে মিলিত হন। এ সময় তিনি উক্ত এলাকা দুটোর উন্নয়নচিত্র জনসমক্ষে তুলে ধরেন এবং ৭ জানুয়ারি নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্যে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি তরুণ ভোটারসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষের সাথে কুশল বিনিময় করেন। একই সাথে তিনি মরহুম নেতৃবৃন্দসহ বিশিষ্টজনদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
ডাঃ দীপু মনি বলেন, চাঁদপুর একটি নদী ভাঙ্গনপ্রবণ এলাকা। আমার দায়িত্ব নেয়ার পূর্বে বিগত ৩৫ বছরে এ অঞ্চলের আশানুরূপ কোনো উন্নয়ন হয়নি। স্থায়ী বাঁধ না থাকায় নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে বহু মানুষ তাদের ভিটেমাটি হারিয়েছে। আমি যখন চাঁদপুরে প্রথম নির্বাচনী প্রচারণায় আসি তখন শপথ করেছিলাম জনপ্রতিনিধি হতে পারলে সর্বপ্রথম এই অসহায় মানুষদের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। আপনারা ভোটের মাধ্যমে আমাকে আপনাদের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ দিয়েছেন। আমি আমার ওয়াদা পালন করেছি। আমার মনে আছে, গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সর্বশেষ প্রচারণার দিন চাঁদপুর পৌরপার্কে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আমি চাঁদপুরের নদী ভাঙ্গনরোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের ব্যাপারে অবগত করে আপনাদের দাবি পেশ করি। শেখ হাসিনা সে দাবি পূরণ করেছেন। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করেছেন। ফলে নদী ভাঙ্গন রোধ হয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, জমি রক্ষা করার মালিক আল্লাহ। আমরা মানুষ উসিলামাত্র।
তিনি বলেন, চাঁদপুর-৩ তথা চাঁদপুর সদর ও হাইমচরের লাখ লাখ মানুষ আমার প্রতি তাদের বিশ^াস নিয়ে আমাকে মূল্যবান ভোট দিয়েছেন। আর ভোট দিয়েছেন বলেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে প্রথমে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পরে শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন। আপনারা ভোট দিয়েছেন বলেই আমি দেশের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। এজন্যে মহান আল্লাহর কাছে আমি শোকরিয়া আদায় করি। বিগত ১৫ বছরে আমি আপনাদের সেবা দেয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। নিরলসভাবে আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছি। আপনাদেরকে যা যা কথা দিয়েছি, তা আমি রেখেছি। কোথাও গাফিলতি করিনি। আপনাদের সেবা করতে গিয়ে আমি আমার স্বামী, সংসার এবং সন্তানকে যতোটুকু সময় দেয়ার কথা ছিলো, তা হয়তো আমি দিতে পারিনি। এ ১৫ বছরে আমি মাত্র ৫ দিন ছুটি নিয়েছি। শুক্রবার কিংবা শনিবার নয়, যখনই প্রয়োজন হয়েছে তখনই আমি কাজ করেছি।
ডাঃ দীপু মনি বলেন, চাঁদপুর অনেকদিন অবহেলিত ছিলো। যেহেতু নৌকার এমপি ছিলো না, তাই আমরা কাজের লোক পাইনি। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী বলেই আমরা ১৫ বছর কাজ করতে পেরেছি। মানুষের জীবনমান উন্নয়নে শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করছেন। গৃহহীনদের ঘর তৈরি করে দিয়েছেন। বছরের প্রথমদিন শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে নূতন বই তুলে দিচ্ছেন। এখন উপবৃত্তির টাকা মায়েদের মোবাইলে চলে যায়। কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের মাধ্যমের মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়া হয়েছে। ফলে মানুষ যে কোনো সমস্যায় খুব সহজেই সেবা নিতে পারছেন। বর্তমানে মাতৃমৃত্যু-শিশুমৃত্যুর হার কমেছে। বেড়েছে গড় আয়ু। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া হয়েছে। এখন দুর্গম চরাঞ্চলও বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত। বদলে যাওয়া এই বাংলাদেশ শেখ হাসিনার গড়া। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। আর তাঁর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সেই স্বাধীন দেশকে উন্নত দেশে রূপান্তর করেছেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা আমাদের জন্যে এতো কিছু করেছেন তার জন্যে তো কৃতজ্ঞতা-স্বরূপ আমাদেরও কিছু করতে হবে। এজন্যে আগামী ৭ জানুয়ারি নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিবেন, অন্যকেও ভোট দিতে উৎসাহিত করবেন। নির্বাচন নিয়ে অনেকেই গুজব ছড়াচ্ছে। কোনো প্রকার গুজবে কান না দিয়ে আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
ডাঃ দীপু মনি বলেন, এবার প্রথম ভোটার হয়েছেন তাদের একজন আপনাদের এই এলাকারই কন্যা মরিয়ম বিনতে রহমান ছোঁয়া এ নির্বাচনে আমার একজন সমর্থনকারী। তরুণ শিক্ষার্থী মরিয়ম বিনতে রহমান ছোঁয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক ভূঁইয়ার নাতি। এছাড়া এ নির্বাচনে আমাকে সমর্থন দিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। আর সাথে তো জনগণ আছেনই। নৌকার বিজয় নিশ্চিতে সকলকে কাজ করতে হবে।
এ সময় উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী, অ্যাডঃ মজিবুর রহমান ভূঁইয়া, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক ও পৌর মেয়র অ্যাডঃ মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শ্রমবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান বাবুল, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান টুটুল, পৌর প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী মাঝি, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বেপারী, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী অধ্যাপিকা মাসুদা নূর খান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ফারুক হোসেন ভূঁইয়া, পৌর ১১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন বাবু পাটওয়ারী, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ মিজানুর রহমান বেপারী, ওয়ার্ড যুবলীগের আহ্বায়ক মোঃ মিজানুর রহমান খান, যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ সবুজ চৌধুরী, ওয়ার্ড ছাত্রলীগ সভাপতি মুহাম্মদ বেলাল হোসাইনসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
সবশেষে ডাঃ দীপু মনি ১১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ব্যবসায়ী মোঃ নূরুল ইসলাম ভূঁইয়ার বাসায় যান এবং তার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন।