মায়া চৌধুরীকে আবারও শোকজ
চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর ও দক্ষিণ উপজেলা) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে দ্বিতীয়বারের মতো শোকজ করেছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। শনিবার নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চাঁদপুর-২-এর চেয়ারম্যান এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ (২য় আদালত) সাইয়েদ মাহবুবুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে ফের এই শোকজ করা হয়।
শোকজে আগামী মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় চাঁদপুর-২-এর নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে সশরীরে অথবা উপযুক্ত কোনো প্রতিনিধির মাধ্যমে লিখিতভাবে ব্যাখ্যা দেয়ার জন্যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আদেশে বলা হয়েছে, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী এম ইসফাক আহসান আপনার (মায়া) বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, তার আবেদনের প্রেক্ষিতে নৌকার প্রার্থীকে শোকজ করা সত্ত্বেও গত ১৪ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় লুলু (এটিইও) জরুরি নোটিশের মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়ে নির্বাচনী আলোচনা করেন, যা নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন। কেননা ওই শিক্ষকরাই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন। ওই আলোচনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ভাইরাল হয়।’
আদেশে আরও বলা হয়, ‘ওই ভিডিও ক্লিপে দেখা যায় ফরাজীকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তার গাজী আপনার উপস্থিতিতে উপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সরাসরি নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করার আহ্বান করেন। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে আপনার মনোনয়ন বাতিলসহ আপনার উক্ত রূপ কাজের জন্যে আপনার বিরুদ্ধে সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল প্রার্থীর আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছেন।’
এদিকে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার অনুসারীদের হামলায় স্বতন্ত্র প্রার্থী এম ইসফাক আহসানের ১৫-২০ জন নেতা-কর্মী আহতের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার মতলব উত্তরে নিজ বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এম ইসফাক আহসান (সিআইপি)।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে প্রার্থিতা ঘোষণার পর থেকেই আমার লোকজনের ওপর হুমকি-ধমকিসহ মারধর করে আসছে মায়া চৌধুরীর লোকজন। এ নিয়ে লিখিত ও মৌখিকভাবে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারের নিকট অভিযোগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু এরপরও থামেনি হামলা ও নির্যাতন।’
মতলব উত্তরের লতরদী নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে এম ইসফাক আহসান আরও বলেন, ‘শুক্রবার ও শনিবার আমার নেতা-কর্মীরা আমার বাসায় আসার পথে নৌকার প্রার্থী মায়া চৌধুরীর লোকজন তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফাহিম, মতলব উত্তর ছেঙ্গারচর পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তামিম, সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম, ছাত্রলীগ নেতা রাব্বি হাসান শান্ত, আরাফাত হোসেন নিপু, রিহান, তাহসিন, মুরাদ ও শান্ত সরকারসহ ১৫-২০ জন নেতা-কর্মী গুরুতর আহত হয়।’
আহতদের উদ্ধার করে চাঁদপুর সদর হাসপাতাল ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। খবর পেয়ে হামলার ঘটনার পর পর মতলব উত্তর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নৌকা সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে ইউপি চেয়ারম্যান সোবহান সরকার শুভা, মেহেদী হাসান কাজল, কামরুল, খোরশেদ আলম অপু, হোসেন প্রামাণিক, বাবু প্রামাণিকসহ ২৫-৩০ জন এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ এম ইসফাক আহসানের।
উল্লেখ্য, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে নৌকা প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার কাছে গত ৪ ডিসেম্বর ব্যাখ্যা চায় নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও চাঁদপুরের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ সাইয়েদ মাহবুবুল ইসলাম। এর প্রেক্ষিতে মায়ার পক্ষের আইনজীবী লিখিত ব্যাখ্যা জমা দেন।