নানা উন্নয়নে চাঁদপুরে এলজিইডির ৫২ কোটি টাকার কাজ
অবকাঠামোগত উন্নয়নে ১৯৬০ সাল থেকে দেশের অন্যতম বৃহৎ প্রকৌশল সংস্থা এলজিইডি কাজ করছে। শহর উন্নয়ন, পল্লী এলাকা ও নগর অঞ্চলের অবকাঠামো উন্নয়নে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে চাঁদপুরসহ সারাদেশে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) নামীয় সংস্থাটি।
স্থানীয় পর্যায়ে অবকাঠামোগত সুবিধা সৃষ্টির মাধ্যমে দেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে তিনটি সেক্টরে কাজ করে থাকে এলজিইডি। এগুলো হচ্ছে : পল্লী উন্নয়ন, ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন ও নগর উন্নয়ন। একইসঙ্গে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহকে কারিগরি সহায়তা প্রদান করে। এলজিইডির সার্বিক কর্মকাণ্ড দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য বিমোচনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।
স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ (পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশন)কে কারিগরি সহায়তা প্রদান ও এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচালন ব্যবস্থা ও দক্ষতা উন্নয়নেও এলজিইডির ব্যাপক সম্পৃক্ততা রয়েছে । চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনিসহ জেলার অন্যান্য সংসদ সদস্য এসব উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন।
চলতি বছরের ৭ মার্চ মোঃ আহসান কবির চাঁদপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে যোগদানের পর থেকে ভিন্ন আঙ্গিকে চাঁদপুরকে এগিয়ে নেয়ার কাজ অব্যাহত রেখে কাজের গুণগত মান সঠিক রাখার স্বার্থে মনোযোগী হয়েছেন। তিনি সদা হাস্যোজ্জ্বল, দক্ষতাসম্পন্ন, চৌকষ একজন সরকারি কর্মকর্তা, তার নিজ দক্ষতা দিয়ে কর্মকাণ্ডকে যেমনি সচল রেখেছেন, তেমনি আন্তরিকতা দিয়ে সহকর্মীদের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছেন। কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধের কারণে তিনি সকলের নিকট প্রশংসিত। তাঁর দক্ষ নেতৃত্বে উল্লেখযোগ্য প্রকল্পের আওতাধীন চলতি অর্থ বছরে ৫২কোটি টাকার কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
চাঁদপুরে ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩০টি সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ সম্পন্ন, ৪০ লাখ টাকায় হাজীগঞ্জে দেশ খাগুরিয়া ভাটরা শিবপুর ব্রিজ, ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৫টি সড়কের উন্নয়ন, ৫০ লাখ টাকা ব্যায়ে হাজীগঞ্জের দেশগাঁও ইউপি ভূমি অফিস, ২ কোটি টাকা ব্যয়ে পুকুর খাল প্রকল্প সম্পন্ন এবং চলমান, লার্জ ব্রিজ প্রকল্পের অধীনে ২টি ব্রিজের কাজ চলমান। হাজীগঞ্জের টোরাগড় এবং মহামায়ায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি ব্রিজের কাজ সম্পন্ন করেছে।
স্থানীয় সরকারের আওতাভুক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভবন তৈরির ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং সাহায্যের জন্যে বাংলাদেশ সরকার ১৯৬০-এর দশকে পল্লীপূর্ত কর্মসূচি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে কার্যক্রম শুরু করলেও সময়ের পরিক্রমায় এর পরিধি ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হয়েছে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এলজিইডি গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাপক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করলেও পরবর্তীতে এর কাজের পরিধি আরো ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করে থাকে।
নির্বাহী প্রকৗশলী মোঃ আহসান কবির আরো বলেন, উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়নে অবকাঠামোর তথ্যভান্ডার, ম্যাপ, কারিগরি বিনির্দেশ (টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন), ম্যানুয়াল ইত্যাদি প্রণয়ন এবং দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি ও কর্মদক্ষতা বাড়াতে সংস্থার নিজস্ব কর্মকর্তা/কর্মচারী, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান অন্যান্য অংশীজনদের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে এলজিইডি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের আমলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) নিরলস ভাবে কাজে করে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের আমলে সারাদেশে (এলজিইডি) উন্নয়ন কাজে রেকর্ড গড়েছে। কারণ অতীতে অন্য কোনো সরকারের আমলে এত বেশি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম এবং এলজিইডির বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী শেখ মোহাম্মদ মোহসীনের ঐকান্তিক চেষ্টা ও আন্তরিকতায় সারা দেশের ন্যায় চাঁদপুরের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা নিরবচ্ছিন্ন রাখার সময় রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি মোবাইল মেনটেনেন্স কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। ফলে কম খরচে অধিক সংখ্যক মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে। পল্লী অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ এবং হাট-বাজার ও গ্রোথ সেন্টার উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিকে গতিশীল করতে এলজিইডি যে অবদান রেখেছে তা আজ সকল স্থানে দৃশ্যমান। দেশের ক্রমবর্ধমান প্রবৃদ্ধি অর্জনে এসব অবকাঠামোর অবদান অপরিসীম। প্রত্যন্ত পল্লীর মানুষ আজ সর্বোচ্চ দুই কিলোমিটারের মধ্যে পাকা সড়ক ব্যবহারের সুবিধা পাচ্ছে। মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে পল্লীর এসব অবকাঠামো ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।
চাঁদপুর জেলার এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আহসান কবির ২০০১ সালে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ২০০৯ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত উপজেলা প্রকৌশলী, ২০১৯ সাল পর্যন্ত সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী এবং ২০২০-২১ সালে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে গাইবান্ধা জেলায় সৎ ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। পূর্বের পদে থাকাবস্থায় তিনি তার মেধা-যোগ্যতায় অর্জিত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে এ বিভাগের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার এবং সুধীজনদের নজর কেড়েছেন।