মতলব উত্তরে দৃষ্টিনন্দন আনোয়ারপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের যাত্রা শুরু
মতলব উত্তরে দৃষ্টিনন্দন একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। ৩৫ শতাংশ জমির ওপর আনোয়ারপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ নামে মসজিদটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৪ কোটি টাকা। মসজিদটি দৈর্ঘ্যে ১৪৫ ফুট এবং প্রস্থে ৮৫ ফুট। ছোট-বড় মিলিয়ে এই মসজিদের ছয়টি মিনার ও তিনটি গম্বুজ রয়েছে। মসজিদটিতে একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারবেন ২ হাজারের বেশি মুসল্লি।
২০১৬ সালের ২ ডিসেম্বর মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সাত বছর পর গতকাল শুক্রবার নির্মিত দৃষ্টিনন্দন মসজিদটির ফলক উন্মোচন ও ফিতা কেটে উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
আনোয়ারপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদটির অসাধারণ নির্মাণশৈলী, এর রং ও আলোকসজ্জা লোকজনকে কাছে টানছে। নির্মাণ শুরুর পর থেকে প্রতিদিন মসজিদটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা আসছেন। মসজিদের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। মসজিদ দেখা শেষে মুগ্ধতার আবেশ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন ধর্মপ্রাণ মুসলিম ও দর্শনার্থীরা।
দিনের আলো, সন্ধ্যার ঠিক আগমুহূর্ত ও রাতের অন্ধকার, তিন সময়ে ভিন্নরকম সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদ। তবে সন্ধ্যার পর মসজিদের লাইট জ্বালানো হলে ফুটে ওঠে এর দ্যুতি ছড়ানো সৌন্দর্য। মসজিদটির ভেতরে সেনসর লাগানো, তাই দরজা খুলে মসজিদে ঢুকলেই লাইট জ্বলে ওঠে এবং এসির শীতল হাওয়া বইতে শুরু করে।
ছেংগারচর পৌর এলাকা থেকে মসজিদ দেখতে আসা সাব্বির লস্কর বলেন, ‘এ রকম সুন্দর মসজিদ আমি কখনো দেখিনি। আমার মনে হয়, পুরো চাঁদপুর জেলায় এ রকম সুন্দর দৃষ্টিনন্দন মসজিদ নেই। এখানে নামাজ পড়ে মনে অনেক প্রশান্তি পাই। এখান থেকে ঘরে ফিরে যেতে ইচ্ছে করে না।’
আবদুল্লাহ নামে এক দর্শনার্থী বলেন, ‘ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার সময় হঠাৎ মসজিদটি দেখে চোখ আটকে যায়। মোটরসাইকেলে বসে এক মুহূর্তের জন্য দেখেছিলাম। এখন সময় নিয়ে দেখতে এসেছি।’
এই মসজিদের মুসল্লি মোঃ মেহেদি হাসান রনি বলেন, ‘আমাদের পুরোনো যে মসজিদটি ছিল, ওইখানে জায়গা কম থাকায় মুসল্লিরা স্বাচ্ছন্দ্যে নামাজ আদায় করতে পারেন না। এখন এই মসজিদ নির্মিত হওয়ায় আমরা সুন্দরভাবে নামাজ আদায় করতে পারছি এবং দূর-দূরান্ত থেকেও মুসল্লিরা এখানে এসে নামাজ আদায় করছেন।’
আনোয়ারপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি শিল্পপতি মাসুদ আলম কাজল বলেন, ‘আল্লাহর ইচ্ছা ও গ্রামবাসীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দৃষ্টিনন্দন আল্লাহর ঘর মসজিদ নির্মাণ করতে পেরেছি। আমাদের গ্রামের পুরোনো মসজিদটি ১৯৪৩ সালে নির্মিত। পুরোনো মসজিদে মুসল্লিদের জায়গা না হওয়ায় আমার ও গ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল বড় পরিসরে একটি মসজিদ নির্মাণ করা। সেই স্বপ্ন বুকে ধারণ করে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় ২০১৬ সালে এর নির্মাণ কাজ শুরু করি। করোনাকালীন কাজে কিছুটা বিঘ্ন ঘটলেও অবশেষে দীর্ঘ অপেক্ষার পর আমাদের স্বপ্নের মসজিদ আজ উদ্বোধন করতে পেরেছি। এ জন্য আল্লাহর কাছে শোকরিয়া আদায় করছি।’
মসজিদ কমিটির সভাপতি বলেন, ‘আমি ব্যবসায়িক কাজে যখন তুর্কি ও দুবাইতে যাই, সেখানে এ রকম দৃষ্টিনন্দন মসজিদ দেখতে পাই। পরে দেশে এসে তুর্কি স্টাইলে এবং মার্বেল পাথর দিয়ে মসজিদটি নির্মাণ করি।’
মাসুদ আলম কাজল আরও বলেন, ‘শুধু মসজিদ নির্মাণ করলেই হবে না, আমাদের মসজিদের নান্দনিকতা বজায় রাখতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। মসজিদে নিয়মিত মুসল্লির সংখ্যা বাড়াতে হবে। গ্রামের সবাইকে মসজিদমুখী হতে হবে।’ সূত্র : আজকের পত্রিকা।