• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

পুঁজি সংকটে বন্ধ চাঁদপুরের ৯৮৩ খামার

প্রকাশ:  ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:৫২
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

অস্থিতিশীল বাজার ব্যবস্থা, পোলট্রি ও পশুখাদ্য এবং ওষুধের দাম বাড়ার কারণে সংকট দেখা দিয়েছে চাঁদপুরের পোলট্রি ও দুগ্ধ খামারে। পুঁজি সংকটে বিভিন্ন সময় বন্ধ হয়ে গেছে ৯৮৩টি খামার। এতে বেকার হয়ে পড়েছেন এ শিল্পের অনেক শ্রমিক। খামারিদের দাবি, অধিকাংশ খামারি লোকসান দিয়ে যাচ্ছেন। পুঁজি হারিয়ে এখন তারা খণগ্রস্ত। খামার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকেই।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার আট উপজেলায় গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, কবুতর ও কোয়েল পাখিসহ ৯ হাজার ৫১৫টি খামার রয়েছে। এর মধ্যে ২৭৫টি পোলট্রি ও ৭০৮টি ডেইরিসহ ৯৮৩টি খামার বন্ধ হয়ে গেছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপ-পরিচালক ডাঃ মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘চাঁদপুরে একসময় ৯১৮টি ব্রয়লার মুরগির খামার ছিল। যার ৩০ শতাংশই বন্ধ হয়ে গেছে। মূলত বৈশ্বিক মন্দার কারণে পোলট্রি ও পশু খাদ্যের দাম বেড়েছে। এ কারণে অনেক খামার বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হওয়া খামার পুনরায় চালু করতে খামারিদের আর্থিক সহায়তা দরকার। এ বিষয়ে উদ্যোগ নিলে আবার চালু করা সম্ভব হবে।’
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, জেলায় ৪৬৭টি পোলট্রি ও ডেইরি খামারের নিবন্ধন আছে। এর মধ্যে চাঁদপুর সদর উপজেলায় পোলট্রি ৪৮টি ও ডেইরি ৫৬টি, কচুয়ায় পোলট্রি ৩২টি ও ডেইরি ৬০টি, হাইমচরে পোলট্রি ১৯টি ও ডেইরি ২৫টি, মতলব উত্তর ও দক্ষিণে পোলট্রি ৫১টি ও ডেইরি ৫০টি, শাহরাস্তিতে পোলট্রি ২৫টি ও ডেইরি ১৭টি, ফরিদগঞ্জে পোলট্রি ২৭টি ও ডেইরি ২৯টি এবং হাজীগঞ্জে পোলট্রি ১৫টি ও ডেইরি ১৩টি নিবন্ধনকৃত খামার রয়েছে।
এদিকে শত প্রতিকূলতার মাঝেও মুরগি এবং মৎস্য খামার ধরে রেখেছেন চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের উদ্যোক্তা নূরুল ইসলাম রিপন ও মাসুম বিল্লাহ। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই তারা গড়ে তুলেছেন স্বপ্না এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ নামে মুরগি এবং মৎস্য খামার। কোভিডের সময় খামারের ১ হাজার ৪০০টি ব্লাকহোল প্রজাতির হাঁস মারা গেলে ক্ষতির মুখে পড়েন খামার মালিক রিপন ও মাসুম।
উদ্যোক্তা মাসুম বিল্লাহ বলেন, দুর্বৃত্তায়ন, পোলট্রি খাদ্যের দাম বাড়াসহ অনুকূল পরিবেশ না থাকায় প্রতি মাসে লোকসান দিয়ে যাচ্ছি। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতা পেলে আমি খামারটি আরো এগিয়ে নিতে পারব।
এদিকে কোভিডের সময় সরকারিভাবে খামারিদের প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। তবে স্বপ্না পোলট্রি খামারের কেউ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি বলে জানিয়েছেন সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মুকুবুল হোসেন।
তিনি বলেন, পোলট্রি খামারের যে কয়টি তালিকা পেয়েছি কোভিডের সময় তাদের প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। পোলট্রি খামারের জন্যে অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেছে কম। সে অনুযায়ী আমরা দিয়েছি। তবে রামপুর ইউনিয়নে আমাদের প্রতিনিধি এলএসই মোঃ মহসিন রয়েছেন। তিনি নাম দিলে আমরা তালিকা করতে পারতাম। যাদের নিবন্ধন আছে তাদের ব্যাংক ৫ শতাংশ হারে ঋণ দিচ্ছে।’
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (পুষ্টি) মোঃ মোবারক হোসেন বলেন, খামারগুলোয় আমরা চিকিৎসাসহ বিভিন্ন সেবা ও পরামর্শ দিয়ে আসছি। খামারগুলোয় সরকারিভাবে প্রণোদনা বা সাহায্য আমাদের হাত দিয়েই দেয়া হয়। বর্তমানে কোনো প্রণোদনা চালু নেই।
বন্ধ হওয়া খামারের বিষয়ে জানান, পোলট্রি খাদ্য ও ওষুধসহ বিভিন্ন উপকরণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক খামার বন্ধ হয়ে গেছে। তাছাড়া অনেকের ঋণ আছে। ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরেও অনেকে নিরূপায় হয়ে খামার বন্ধ করে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। সূত্র : বণিক বার্তা।

 

সর্বাধিক পঠিত