ফরিদগঞ্জে স্ত্রী ও শাশুড়ি হত্যা মামলায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
ফরিদগঞ্জের গৃদকালিন্দিয়ায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সন্দেহকে কেন্দ্র করে স্ত্রী তানজিনা আক্তার রিতু (২০) ও শাশুড়ি পারভীন বেগম (৪৫)কে হত্যার দায়ে রিতুর স্বামী মোঃ আল মামুন মোহন (৩২)কে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাকে ১ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। রোববার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (২) সাহেদুল করিম এই রায় দেন। আসামীর উপস্থিতিতে এ রায় দেয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আল মামুন মোহন লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার শায়েস্তানগর গ্রামের মিয়াজান বেপারী বাড়ির মৃত মনতাজ মাস্টারের ছেলে। হত্যার শিকার তানজিনা আক্তার রিতু ও পারভীন বেগম চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার গৃদকালিন্দিয়া এলাকার প্রবাসী মোঃ সেলিম খানের মেয়ে ও স্ত্রী।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১৩ ডিসেম্বর মামুন ও রিতুর বিয়ে হয়। মামুনের বাড়িতে ঘর না থাকায় রিতু বাবার বাড়িতে থাকতেন। এরই মধ্যে মামুন বিদেশে চলে যান। সেখানে কাজ না পেয়ে দেড় বছর পরে ফিরে আসেন দেশে। এরই মধ্যে নানা কারণে সন্দেহ সৃষ্টি হয় মামুন ও রিতুর মধ্যে। এরপর ২০২০ সালের ১৩ মে সন্ধ্যায় ফরিদগঞ্জ উপজেলার গৃদকালিন্দিয়া এলাকায় সেলিম খানের তিনতলা ভবনের নিচতলায় সামনে ইফতারের সময় স্ত্রী ও শাশুড়িকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন মামুন। ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন তাকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে।
ছুরিকাঘাত করার পর রিতু ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং তার মা পারভীন বেগম ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় রিতুর চাচা মোঃ লিয়াকত খান ফরিদগঞ্জ থানায় মামুনকে আসামী করে মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করেন ফরিদগঞ্জ থানার তৎকালীন পরিদর্শক মোহাম্মদ শহীদ হোসেন। তিনি তদন্ত শেষে ওই বছরের ২৯ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাডঃ মজিবুর রহমান ভূঁইয়া। তিনি জানান, মামলাটি তিন বছরের অধিক চলমান অবস্থায় আদালত ২৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। সাক্ষ্য প্রমাণ, মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা ও আসামী তার অপরাধ স্বীকার করায় আদালত এই রায় দেন। রায়ের সময় আসামী মামুন উপস্থিত ছিলেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী হিসেবে আরো ছিলেন অ্যাডঃ দেবাশীষ কর মধু ও অ্যাডঃ জসিমউদদীন (২)। আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডঃ সেলিম আকবর ও অ্যাডঃ সফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া।