শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন ও বিজয় দিবস উদযাপনে প্রস্তুতি সভা
শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন ও মহান বিজয় দিবস উদ্যাপনে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল ১৫ নভেম্বর বুধবার সকালে জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত প্রস্তুতি সভায় সভাপ্রধানের বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান। তিনি দিবস দুটির তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, ১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস যা বাঙালি জীবনে একটি অনাকাক্সিক্ষত দিন। আর ১৬ ডিসেম্বর আমাদের মহান বিজয় দিবস। দিবস দুটি এক করে দেখলে হবে না। একটি হলো শোকের, আর অন্যটি হলো বিজয়ের অর্থাৎ আনন্দের। এই দিবস দুটি বাঙালি জাতির কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে এর গুরুত্ব তুলে ধরতে হবে। তুলে ধরতে হবে সেদিন কেন কী কারণে দেশের মেধাসম্পন্ন মানুষদের হত্যা করা হয়েছিলো। তিনি বিগতদিনের ন্যায় ব্যাপক আয়োজনে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন ও মহান বিজয় দিবস উদ্যাপনের আহ্বান জানান এবং কর্মসূচি প্রনয়ণসহ নতুন প্রজন্মকে দিবসগুলোর সাথে সম্পৃক্ত করার গুরুত্বারোপ করেন।
সভার শুরুতে বিগত বছরের কার্যবিবরণী উপস্থাপন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বশির আহমেদ। শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন ও মহান বিজয় দিবস উদ্যাপনে করণীয় সম্পর্কে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদ্য পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) সুদীপ্ত রায়, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ ওয়াদুদ, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দা বদরুন্নাহার চৌধুরী, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ, চাঁদপুর পৌরসভার সচিব মোঃ আবুল কালাম ভূঁঞা, জেলা স্কাউটের সাধারণ সম্পাদক অজয় কুমার ভৌমিক, চাঁদপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রাধা গোবিন্দ গোপ, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বাবু, নাট্য ব্যাক্তিত্ব শহীদ পাটোয়ারী, জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি তপন সরকার, নাট্যকর্মী এমআর ইসলাম বাবু প্রমুখ।
সভায় ১৪ ডিসেম্বর সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সৌধে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ, সুবিধাজনক সময় মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দিরসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দোয়া, মিলাদ ও প্রার্থনার আয়োজন করা, সন্ধ্যায় দিবসের তথ্য উপাত্ত সম্পন্ন ডকুমেন্টারি উপস্থাপন ও দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা সভা, দৈনিক পত্রিকাগুলোতে বিশেষ প্রকাশনা, দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিশেষ আলোচনা এবং জেলায় কতজন বুদ্ধিজীবী শহীদ হয়েছেন তাদের পরিচিতি প্রকাশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
এছাড়া মহান বিজয় দিবস উদ্যাপনে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। বিগত বছরের ন্যায় এই বছরও দিবসটি উদ্যাপনে রয়েছে ১ ডিসেম্বর থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক প্রামান্য চিত্র প্রদর্শনী, জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রতিযোগিতা, ৬ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটসহ দেশীয় ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার আয়োজন, ১৫ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাঁদপুর বড় স্টেশন রক্তধারা, শাপলা চত্বর সজ্জিত করণ, ১৬ ডিসেম্বর দৈনিক পত্রিকাগুলোতে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ, ১৬ ডিসেম্বর সূর্যোদয়ের সাথে সাথে তোপধ্বনি। পরে সকাল সাড়ে ৮টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শহীদদের প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পণ, চাঁদপুর স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজ প্রদর্শনী ও সালাম গ্রহণ, ডিসপ্লে প্রদর্শনী, পুরস্কার বিতরণ, সকাল ১১টায় মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান, সুবিধাজনক সময় মন্দির, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দোয়া, মোনাজাত ও প্রার্থনা, হাসপাতালসহ এতিমখানায় উন্নতমানের খাবার পরিবেশন, বিকেলে বড় স্টেশনে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের জন্যে নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজ প্রদর্শনী, বিকেলে ছাত্রী ও নারীদের উপস্থিতিতে বিজয় দিবসের তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা সভা ও ক্রীড়ানুষ্ঠান, সন্ধ্যায় জাতির পিতার সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে বিজয় দিবসের আলোচনা সভাসহ ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।