• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

তৃতীয় দফায় নোটিস পেলেন খাজুরিয়া মাদ্রাসার সুপার

প্রকাশ:  ১৩ নভেম্বর ২০২৩, ১১:২৬
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে প্রথম এক মাস এবং পরে আরো ৫ মাস সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন এক মাদ্রাসা সুপার। মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনা কমিটি ঘটনার বিষয়ে সর্বশেষ শনিবার (১১ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তৃতীয় বারের মতো নোটিস দিয়েছে অভিযুক্ত সুপারকে। যদিও মাদ্রাসা সুপারের দাবি, যৌন হয়রানির কোনো ঘটনাই ঘটেনি। ইতিমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টেও তা এসেছে। কিন্তু এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই সুপারকে মাদ্রাসা থেকে বিতাড়িত করার চেষ্টা চলছে, এমন অভিযোগ মাদ্রাসা সুপারের। ঘটনাটি ফরিদগঞ্জের খাজুরিয়া ওল্ড স্কীম দাখিল মাদ্রাসার।
জানা গেছে, খাজুরিয়া ওল্ড স্কীম দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোঃ আবুল বাসার মিয়াজী গত ১৭ সেপ্টেম্বর ওই মাদ্রাসার একটি শ্রেণির কোরআন শিক্ষার ক্লাস নেয়ার সময় জনৈক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করেন বলে ওই ছাত্রীর অভিভাবক উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাদ্রাসা সুপারকে গত ২১ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনা কমিটি প্রথমে এক মাস এবং পরবর্তীতে আারো ৫ মাস সাময়িক বরখাস্ত করে।
ওই ঘটনার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মশিউর রহমানকে প্রধান করে গঠিত তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটিকে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্যে দায়িত্ব প্রদান করেন। কমিটি গত ২৬ অক্টোবর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
সূত্র মতে, তদন্ত প্রতিবেদনে ওই মাদ্রাসা সুপার ছাত্রীর সাথে যে আচরণ করেছেন তা যৌন হয়রানির পর্যায়ে পড়ে না বলে বলা হয়। তবে ওই মাদ্রাসা সুপার কোনো ছাত্রীকে হাত দিয়ে প্রহার বা স্পর্শ করতে পারেন না এবং বিষয়টি উভয় পক্ষের মধ্যে সমাধান হয়ে গেছে বলে তার কপিও জমা দেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে মাদ্রাসার সুপার (সাময়িক বরখাস্ত হওয়া) আবুল বাসার মিয়াজী গত ৯ নভেম্বর মাদ্রাসা কমিটি বরাবর প্রেরিত চিঠিতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার বিষয়টি মহামান্য হাইকোর্টের রায়ের আলোকে হয়নি বলে দাবি করে বলেন, তারপরও মাদ্রাসার প্রধান হিসেবে ওই ঘটনার জন্যে দুঃখ প্রকাশ করছি। ওই আবেদনে তিনি তার বিরুদ্ধে গঠিত কমিটি ‘যৌন হয়রানির কোন ঘটনা ঘটেনি বলে’ রিপোর্ট দিয়েছেন বলে দাবি করেন।
এ ব্যাপারে মাদ্রাসার সাময়িক বরখাস্তকৃত সুপার আবুল বাসার মিয়াজী নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, সেদিন যা ঘটেছে, তার জন্যে আমি দুঃখ প্রকাশ করেছি। লেখাপড়া না করায় ওই ছাত্রীকে প্রহার করা উচিত হয়নি। কিন্তু ওই ঘটনাকে উপজীব্য করে একটি চক্র আমাকে ওই প্রতিষ্ঠান থেকে স্থায়ীভাবে সরানোর চেষ্টা করছে।
ঘটনার তদন্ত কমিটির প্রধান ও উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, তদন্ত কমিটি তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব অনুযায়ী সকলের সাথে কথা বলে রিপোর্ট প্রদান করেছে। তবে ঘটনার দিন মাদ্রাসা সুপার শ্রেণিশিক্ষা প্রদানকালে যা করেছেন, তা যৌন হয়রানির পর্যায়ে পড়ে না। তবে তিনি অবশ্যই কোনো ছাত্রীকে হাত দিয়ে প্রহার করতে পারেন না। রিপোর্টে বিস্তারিত রয়েছে।
মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বুলবুল আহমেদ জানান, শনিবার (১১ নভেম্বর) মাদ্রাসা কমিটির সভা হয়েছে। সেখানে সুপারের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া মাদ্রাসা সুপারকে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়ে দেয়া কারণ দর্শানোর জবাব মনঃপুত না হওয়ায় তৃতীয়বারের মতো তাকে চিঠি প্রদান করা হয়েছে।

সর্বাধিক পঠিত