• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

হাজীগঞ্জে বোন জামাই ও শালার হাতে খুন কিশোর আরমান

প্রকাশ:  ০৮ নভেম্বর ২০২৩, ১৪:২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা চুরির জেরে চোরের দল খুন করে বালির নিচে পুঁতে রাখে অটোরিক্সা চালক ও মালিক আরমান (১৫)কে। এ ঘটনায় আরমানের লাশ উদ্ধারের মাত্র একদিনের মধ্যে সবুজ হোসেন মিন্টু (২৫) ও শুকুর আলম (২৮) নামের দুই খুনীকে আটক করে চাঁদপুরের পিবিআই। আরমান হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার মকিমাবাদ গ্রামের মেস্তরী বাড়ির আব্দুল মোতালেবের ছেলে। আটককৃত  সবুজ উপজেলার হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের কাঁঠালি গ্রামের শাহআলমের ছেলে ও শুকুর আলম সদর ইউনিয়নের বাড্ডা মজুমদার বাড়ির আবুল কাশেমের ছেলে। বুধবার (৮ নভেম্বর)  পিবিআই  খুনিদেরকে   নিয়ে লাশ উদ্ধারের স্থান পরিদর্শন করেছে।

পুলিশ সূত্র ও নিহত কিশোরের বাবা জানায়, গত ১ অক্টোবর যাত্রী বেশে আরমানের অটোরিক্সা ভাড়া নেন সবুজ হোসেন মিন্টু  ও শুকুর আলম। অটোরিক্সাটি হাজীগঞ্জ হতে কচুয়া সড়ক ধরে কয়েক কিলোমিটার চলার পর আরমান  বুঝতে পারে তার অটোরিক্সাটি চুরির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাৎক্ষনিক সে ডাক-চিৎকার দিলে স্থানীয়রা ছুটে এসে সবুজ হোসেন মিন্টু ও শুকুর আলমকে আটক করে  কচুয়া থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এ  ঘটনায় আরমানের বাবা বাদী হয়ে মিন্টু ও শুকুরকে আসামী করে কচুয়া থানায় মামলা দায়ের  করেন। পরে তারা জেল খেটে জামিনে বেরিয়ে আসে দু'জনেই।

এই ঘটনার জেরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে গত ৩০ অক্টোবর( সোমবার) দিবাগত রাতে আরমানের অটোরিক্সাটি আবারো ভাড়া নেন মিন্টু ও শুকুর। এরপর তাকে ইট দিয়ে মাথা থেতলে হত্যা করে বালুর নিচে পুঁতে রাখে ও অটোরিক্সাটি নিয়ে  যায় তারা। উল্লেখ্য, আসামীদ্বয় পরস্পর শালা ও বোন জামাই।

এদিকে রাতে ছেলে বাড়ি ফেরার কারনে আরমান নিখোঁজের পরের দিন হাজীগঞ্জ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে আরমানের বাবা। সর্বশেষ  গত ৬ নভেম্বর (সোমবার) হাজীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের দোয়ালিয়া গ্রামের আমগাছ তলা নামকস্থানের বালির স্তুপের নিচ থেকে পঁচা  গলিত লাশ উদ্ধার করে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ।  একটি লাশ  খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পোঁছেন নিখোঁজ আরমানের বাবা মোতালেব ও মা পাখি বেগমসহ পরিবারের লোকজন। এ সময়  আরমানের জুতা ও পরনের প্যান্ট দেখে আরমানের লাশ সনাক্ত করে তার পরিবার। লাশ উদ্ধারের সুরতহাল ও অটোরিক্সাটির হদিস না পাওয়ার কারনে পুলিশ নিশ্চিত হয় এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। এর পরেই আরমানের বাবা অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামী করে হাজীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।


এ দিকে লাশ উদ্ধারের পর থেকে ছায়া তদন্তে নামে চাঁদপুরের পুলিশ ইনভেষ্টিগেশন ব্যুরো। ছায়া তদন্তে নেমে আগের অটোরিক্সা চুরির ঘটনাটির সন্ধ্যানে নেমেই মামলার মোটিভ উদ্ধারে সফলতা পেয়ে যায় সরকারের এই সংস্থাটি। আরমানের দুই খুনিকে নিয়ে বুধবার লাশ উদ্ধারের ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করে সব মিলিয়ে  পিবিআইয়ের কাছে এ দু'জন আরমানকে হত্যার কথা স্বীকার করে। ছেলের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের ঘটনায় সন্তোষ প্রকাশ করেই হাউমাউ করে কেঁদে উঠেন আরমানের বাবা আব্দুল মোতালেব।

 হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ জানান মিশুক গাড়িটি কচুয়া উপজেলার হোসেনপুর নামক স্থানে বিক্রি করা হয়েছে। আমরা অটোরিক্সাটি উদ্ধারের প্রকৃয়া চালিয়ে যাচ্ছি এবং আটককৃতের বিরুদ্ধে আইনী প্রকৃয়া চলছে।

 

সর্বাধিক পঠিত