• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

হরতাল বিএনপির মাঠ দখলে আওয়ামী লীগের

প্রকাশ:  ৩০ অক্টোবর ২০২৩, ১২:৩৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 বিএনপি ও জামায়াতের ডাকা হরতাল চাঁদপুরে তেমন কোনো প্রভাব ফেলেনি। যানবাহন চলাচলসহ সব কিছুই স্বাভাবিক ছিল। হরতালে বিএনপি বা জামায়াতের তেমন কোনো তৎপরতা ছিল না বললেই চলে। চাঁদপুর শহরের কিছু কিছু জায়গায় যুবদলের কিছু নেতা-কর্মী মাঠে নামলেও ছাত্রলীগের তাড়া খেয়ে তারা মাঠ ছেড়েছে। শুধু বাবুরহাট এলাকায় হরতাল সমর্থক ও হরতাল বিরোধীদের মধ্যে কিছু সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। ইটের আঘাতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুজন নেতা আহত হয়েছেন।
এদিকে হরতাল বিএনপির হলেও মাঠ দখলে ছিল আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের। এসব সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ দলের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মাঠে ছিল এবং হরতাল বিরোধী মিছিলে সোচ্চার ছিল। যেখানেই হরতালের পক্ষে মিছিল বা পিকেটিংয়ের চেষ্টা করা হয়েছে, সেখানেই যুবলীগ ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা ধাওয়া করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে। অর্থাৎ হরতাল বিএনপি-জামায়াত ডাকলেও মাঠ দখলে ছিল আওয়ামী লীগের। বিএনপির তেমন কোনো নেতা-কর্মী মাঠে ছিল না। শুধু জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল গাজী বাহারকে কিছু সময় মাঠে দেখা গেছে। তাও ছাত্রলীগের প্রতিরোধের মুখে মাঠ ছেড়ে দিতে হয়েছে। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ সলিম উল্যা সেলিম কিছু সংখ্যক নেতা-কর্মী নিয়ে হাসান আলী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে কিছুক্ষণ অবস্থান করলেও পরে আর দেখা যায়নি।
চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের কিছু নেতা-কর্মীকে নিয়ে সকাল থেকে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের নিচে অবস্থান নেন। এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক পৌর মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আর্শ্বাদ মিয়াজি, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বেপারী, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান বাবুল, জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান টুটুল, মোহাম্মদ আলী মাঝি, জেলা যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী প্যানেল মেয়র ফরিদা ইলিয়াস, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জহির উদ্দিন মিজি ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা মাঠে সক্রিয় ছিল। নেতৃবৃন্দ শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেন এবং দফায় দফায় হরতাল বিরোধী মিছিল বের করেন। আওয়ামী লীগ নেতাদের মাঠে সরব উপস্থিতিতে নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত ছিল।
এদিকে হরতালে চাঁদপুরে জনজীবনে তেমন কোনো প্রভাব ফেলেনি। রিক্সা, অটো, সিএনজি, ট্রেন, লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক ছিল। শুধুমাত্র দূরপাল্লার বাস বিকেল পর্যন্ত বন্ধ ছিল।
বাগাদী চৌরাস্তায় সকালে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা সড়কের উপর টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এমনকি গাড়ি ভাংচুরের চেষ্টা করে। এ বিষয়টি আওয়ামী লীগ নেতা মামুন পাটোয়ারী ও ছাত্রলীগ নেতা রায়হান বিন হিরু দেখতে পেয়ে এগিয়ে যায় এবং হরতালকারীদের সাথে বাগবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থান থেকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও কৃষকলীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে চলে আসলে তারা পালিয়ে যায়। চাঁদপুরের পুলিশ সুপার ও মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাগাদী চৌরাস্তায় যান।
সকাল থেকেই শহরের মোড়ে মোড়ে পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি ছিলো। দুু-একটি পয়েন্টে বিএনপির নেতা-কর্মীরা টায়ার জ্বালালে পুলিশ তা অপসারণ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এ ব্যাপারে চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুদীপ্ত রায় জানান, ভোর থেকেই পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় আছে। আমরা কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম হতে দেবো না। যে ২/১টি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে সে বিষয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

সর্বাধিক পঠিত