• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

শৃঙ্খলা মানলে যানজট ও শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব : জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান

প্রকাশ:  ২৭ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৪২
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমম্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্পের আওতায় পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের জন্য সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর চাঁদপুরের আয়োজনে ২৬ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকালে চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান।
তিনি বলেন, শব্দদূষণের ফলে আমাদের যে কী পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে তা আমরা এখনো বুঝে উঠতে পারছি না। শব্দদূষণের ফলে হার্টের সমস্যা, হৃদ্রোগ,  মাথা ধরা, চোখে কম দেখা, উচ্চ রক্তচাপ, বধির হওয়া, খিটখিটে মেজাজ, অনিদ্রা, অবসাদগ্রস্ততা দেখা দেয়। শব্দদূষণের স্থানসমূহে অধিক সময় অবস্থান করলে মারাত্মকভাবে মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। এমনকি শিশুদের মেধার বিকাশ বিলম্বিত হয়। ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়। শব্দদূষণ একটি মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করে। ক্রমাগত শব্দদূষণের ফলে কানের টিস্যুগুলো আস্তে আস্তে বিকল হয়ে যায়। ফলে একসময় মানুষ স্বাভাবিক শব্দ শুনতে না পেয়ে সে ধীরে ধীরে বধির হয়ে যায়। তিনি শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ আইন মেনে চলার আহ্বান জানান।
তিনি আরো বলেন, চাঁদপুর শহরে ইজিবাইক ও স্কুটারের যন্ত্রণায় মানুষজনের নাভিশ্বাস চরমে উঠেছে। শৃঙ্খলা মানলে যানজট ও শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। শব্দদূষণরোধে যে সকল আইন রয়েছে তা যদি কার্যকর করা হয় তাহলে রাস্তায় কোনো যানবাহন থাকবে না। ফলে কারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা আপনারা একটু ভেবে দেখবেন। আমাকে মনে রাখতে হবে আমি নিয়ম মেনে গাড়ি চালাবো, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করবো। অযথা হর্ন বাজাবো না, শব্দ দূষণ বাড়াবো না। তিনি হাইড্রোলিক হর্ন না বাজানো এবং শব্দদূষণে কী কী সমস্যা হতে পারে সেই লক্ষ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে সকলকে কাজ করার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিপিএম, পিপিএম। তিনি পারিবারিকভাবে সর্বপ্রথম শব্দদূষণ প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান জানিয়ে বলেন, শব্দদূষণ একটি মারাত্মক ব্যাধি। এই ব্যাধি প্রতিরোধে সকলকে সচেতন হতে হবে। চাঁদপুর শহরে বড় গাড়ির চেয়ে ছোট গাড়ির সংখ্যা বেশি আর তার মধ্যেই চলে কার আগে কে যাবে তার জন্য অসুস্থ প্রতিযোগিতা। আর তা করতে গিয়ে দেখা দেয় যানজট। আর যানজট থেকে পরিত্রাণ পেতেই একের পর এক চলতে থাকে হর্ন দেয়ার মানসিকতা। ফলে পরিবেশে দেখা দেয় শব্দদূষণ। তিনি গাড়ি চালকদেরকে গাড়িতে থাকা ইন্ডেকেটর লাইটের ব্যবহার, ট্রাফিক আইন মেনে চলা ও প্রয়োজন ছাড়া হর্ন না দেয়ার অনুরোধসহ শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকগুলো জনসমক্ষে তুলে ধরার আহ্বান জানান।
বক্তব্য রাখেন আড়াইশ’ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ জাহিদুজ্জামান। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ এস এম মোসা।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনসহ মূল পয়েন্ট উপস্থাপন করেন জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর চাঁদপুরের উপ-পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান।
কর্মশালায় শব্দদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব, কারণ ও নিয়ন্ত্রণে করণীয় এবং শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬-এর উল্লেখযোগ্য বিষয়সমূহ প্রেজেন্টেশন ও ভিডিও প্রামাণ্য চিত্রের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
বক্তাগণ উত্থাপিত তথ্যসমূহ উপস্থিত সবাইকে ব্যক্তি জীবনে মেনে চলার পাশাপাশি অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার অনুরোধ জানান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পরিবেশ অধিদপ্তর চাঁদপুরের পরিদর্শক শরমিতা আহমেদিয়া।

সর্বাধিক পঠিত