‘দেড়শ বছরের সাংবাদিকতা ও চাঁদপুর’ শীর্ষক সেমিনার ও বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
গণমানুষের সঙ্গে জনপ্রতিনিধির সংযোগ স্থাপনে গণমাধ্যম বড় ভূমিকা রাখে
-----শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি
সেন্টার ফর হিস্ট্রি অ্যান্ড কালচারাল রিসার্চের আয়োজনে ‘দেড়শ বছরের সাংবাদিকতা ও চাঁদপুর’ শীর্ষক সেমিনার ও বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি।
চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ। সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল। আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক রোটাঃ কাজী শাহাদাত ও দৈনিক চাঁদপুর প্রবাহের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রহিম বাদশা। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দৈনিক শপথ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক কাদের পলাশ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কবি ও লেখক ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়া। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সেন্টার ফর হিস্ট্রি অ্যান্ড কালচারাল রিসার্চের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ ফরিদ হাসান।
শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি তাঁর বক্তব্যে ‘দেড়শ বছরের সাংবাদিকতা ও চাঁদপুর’ বইয়ের প্রকাশক ও লেখককে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, তাদের সাহসী উদ্যোগে এই বই বের করায় অনেক অজানা বিষয় জানার সুযোগ হয়েছে। বইটি আমাদের জন্যে একটি গর্বের জায়গা তৈরি করেছে। তিনি বলেন, চাঁদপুর হচ্ছে সাহিত্য, সংস্কৃতি, সাংবাদিক ও রাজনীতি চর্চার অন্যতম জনপদ। আমি তো এই বইয়ের নাম শুনেই পটে গেলাম। যে সংগঠনটি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে, এ ধরনের সংগঠন প্রয়োজন। কারণ যারা গবেষণা করেন তাদের জন্য সুযোগ তৈরি হবে। গবেষণার কাজ অনেক কষ্ট। বইটি স্বল্প সময়ে দেখে আমার কাছে খুবই ভালো মনে হয়েছে।
তিনি বলেন, আপনারা সাংবাদিক। আপনারা সত্যটা তুলে ধরেন। আপনারা মানুষের কাছে আমাদের কথাগুলো তুলে ধরেন। গণমানুষের সঙ্গে আমাদের যে সংযোগ সেখানে আপনাদের একটি বড় ভূমিকা আছে। দেশটাকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে আপনাদের ভূমিকা আছে। আপনারা সত্যকে সত্য এবং মিথ্যাতে মিথ্যা বলবেন। নির্যাতনকারী আর নির্যাতিত, হত্যাকারী এবং হত্যার শিকার সবাইকে এক পাল্লায় মাপবেন না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এগিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। আমরা বিশ্বাস করি আগামী নির্বাচনে আবার জনগণ আস্থা রাখবে শেখ হাসিনার প্রতি।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ৪২ বছর পূর্বে তাঁর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসেছিলেন। এই ৪২ বছরে কমপক্ষে ২১ বার তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি দুই বছর পর পর তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। আর এই প্রচেষ্টায় আমরা অনেককে হারিয়েছি। বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকীর দিনে বেগম জিয়া তার জন্মোৎসব পালন করেন। তার এই আচরণ হলো নির্মমতা।
দীপু মনি বলেন, কোকো মারা গেলেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা মা হিসেবে দেখতে গেলেন। সেদিন আমিও তার সঙ্গী ছিলাম। একে একে সেদিন সবগুলো গেট বন্ধ করে দেয়া হলো। দেশের প্রধানমন্ত্রীকে ঢুকতে দেয়া হলো না। অপমাণিত করা হলো। তিনি গিয়েছিলেন একজন মা হিসেবে আরেকজন মাকে সমবেদনা জানাতে। মানবিকতার শ্রেষ্ঠ নিদর্শন সেদিন হতে পারতো। কিন্তু সেদিন অমানবিকতার একটি নিকৃষ্টতম নিদর্শন বেগম জিয়া তৈরি করেছিলেন। আমাদের ভেবে দেখা দরকার কোনটা মানবিকতা আর কোনটা অমানবিকতা।
মন্ত্রী বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিলো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর কী পরিমাণ নিপীড়ন ও নির্যাতন হয়েছিলো নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার কারণে। বিপরীতে আজকে বিএনপির নেতারা বাড়িতে থাকেন, রাজনীতি করেন। তারা বলেন তাদের রাজনীতি করার সুযোগ নাই। টেলিভিশনে আমাদের চাইতে তারা সময় বেশি পান। টকশো আর যেই শো বলেন তারা কথা বলছেন বেশি। এতো কথার এই সুযোগ পৃথিবীর আর কোথাও আছে? তারপরও বলে তাদেরকে নাকি কথা বলতে দেয়া হয় না। তাদের সময়ে আমরা কথা বলতে গেলে বোমা মারা হতো। আমাদের অফিসের মধ্যে আটকে রাখা হতো। হত্যা করা হয়েছে আমাদের নেতাদেরকে। নিবার্চন-পরবর্তী সময়ে নারীদেরকে গণধর্ষণ করা হয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, চাঁদপুর সমৃদ্ধ জনপদ। এ জেলা সংস্কৃতি, সাংবাদিকতাসহ নানা ক্ষেত্রে সমৃদ্ধ। আজকে ইতিহাসকে মলাটবন্দী করার যে প্রয়াস, তা প্রশংসনীয়। গবেষণা কাজই কষ্টাসাধ্য। সেই কষ্ট্যসাধ্য কাজটি করা এবং আজকের আয়োজনের জন্যে আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।
অনুষ্ঠানে চাঁদপুরের জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমের বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিক, লেখক, সাহিত্যিক ও বিভিন্ন পেশার আমন্ত্রিত সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।