ছাত্রলীগে তোলপাড় ও দ্বন্দ্ব!
দেশের অন্যতম বৃহৎ ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটগুলোর মধ্যে মতবিরোধ নতুন নয়। তবে সম্প্রতি ছাত্রলীগ আয়োজিত স্মরণকালের সর্ববৃহৎ ছাত্রসমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের মধ্যে ‘দ্বন্দ্ব’ প্রকাশ্যে এসেছে।
এরপর থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতি ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করছে। এদিকে সেই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধর করেন অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) এডিসি হারুন। তার বিচার চাইতে সভাপতি যান কমিশনারের সাথে দেখা করতে। আর সাধারণ সম্পাদক অপেক্ষা করেন যথাযথ কর্তৃপক্ষের। তবে শেষমেশ হারুন অর রশিদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কিন্তু তাকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা।
গত বছর আগস্ট মাসে আয়োজিত শোক সভায় প্রধানমন্ত্রীর সামনে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আনন্দ বাজারে প্রকাশিত লেখা তোতাপাখির মতো আওড়ে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন তৎকালীন ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। সেখান থেকেই বোধ হয় তার কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতির আসন দখল করার রাস্তা ছাফ হয়ে যায়। ক্ষমতা পাওয়ার পরে চলতি বছরের জুন মাসেই ডয়েচে ভেলের প্রখ্যাত বাংলাদেশী সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীনের সাথে বসেন তিনি। সেখানে অবশ্য গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব ও সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নূরও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আলোচনায় সাদ্দামের ব্যবহৃত গাড়ি নিয়ে বারবার খোঁচা দেয় সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীন। যদিও পরবর্তীতে সাদ্দামের বোন ফেইসবুকে এক যৌক্তিক পোস্টের মাধ্যমে প্রমাণ করতে চেয়েছেন যে এ গাড়ি কেনার সামর্থ্য তাদের আছে।
স্মরণকালের সর্ববৃহৎ সমাবেশ থেকে ছাত্রলীগ যে বার্তা দিতে চেয়েছিল
১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ছাত্রলীগের সভা থেকে বিশেষ বার্তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। এর আগেরদিন বিকেলে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা মনে করি, এই সমাবেশ রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি অবিশ্বাস্য পরিবর্তন নিয়ে আসবে। এই ছাত্র সমাবেশের মধ্য দিয়ে আমরা গোটা বাংলাদেশকে এই বার্তা দিতে চাই যে, আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং জাতির পিতার আদর্শে আমরা বলীয়ান থাকবো। একইসঙ্গে খুনি, সন্ত্রাসী এবং জঙ্গিবাদীদের সঙ্গে কোন আপসের জায়গা বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ আর রাখে নাই।
সেদিন ছাত্র সমাবেশে কী হয়েছিল?
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ১ সেপ্টেম্বর ছাত্র সমাবেশের আয়োজন করে ছাত্রলীগ। ঐ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, রীতি অনুযায়ী ঢাবি ছাত্রলীগ এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অর্থাৎ ছয় নেতা বক্তৃতা দেন। তবে এবারের সমাবেশ সেই ঐতিহ্যকে লঙ্ঘন করেছে এবং এই ছয়জনের কেউই সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পাননি।
গত বছরের ডিসেম্বরে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ছাত্রলীগের বর্তমান শীর্ষ নেতৃত্ব সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান। কমিটি ঘোষণার আট মাসের মধ্যে এসব গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সঙ্গে দ্বন্দে লিপ্ত হয়। এই সমাবেশের পর তা প্রকাশ্যে আসে।
কেন্দ্রের সঙ্গে ঢাবি ছাত্রলীগের টানাপোড়েন চরমে
গত বছরের ডিসেম্বরে কমিটি ঘোষণার পর থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ‘সমন্বয়’ নিয়ে নানা সময়ে আলোচনা হয়। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতা সাদ্দাম হোসেন ও শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের বিরুদ্ধে ‘ব্যক্তিগত অশ্লীলতার’ অভিযোগ তুলেছেন ঢাবি ছাত্রলীগের নেতারা। তারা বলছেন, এতে সংগঠনেরই ক্ষতি হবে।
ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতির ফেইসবুক স্ট্যাটাস
গত বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ফেইসবুক প্রোফাইলে লেখেন, কেন্দ্রীয় কমিটির কাজ কেন্দ্রীয় বিষায়াদি সম্পাদন করা, সারাদেশের ইউনিটগুলির মাঝে সমন্বয় সাধন করা, কর্মসূচী প্রণয়ন করা ও শৃঙ্খলা-গঠনতন্ত্রের রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করা। এর বাইরে ৩০০ জন কেন্দ্রীয় নেতা দ্বারা ব্যক্তিগতভাবে ৫ জন কর্মী সংগঠন করা বর্তমান কাঠামোতে সম্ভব না। ছাত্রলীগের প্রাণ হলো তৃণমূল তথা বিভিন্ন ইউনিট; যারা মাত্র কয়েকদিন আগেই সম্মিলিতভাবে লাখো কর্মীর সমাগম করে দেখিয়েছে। এরাই সংগঠনের প্রাণ। এরা দামী ফ্ল্যাটে থাকেনা, দামি গাড়িতে ঘুরেনা, এরা নিজের পরিবারকে ঠকিয়ে, পেটে ক্ষুধা রেখে, টিউশনির টাকা জমিয়ে, ছেড়া স্যান্ডেল, ঘার্মাক্ত জামা পড়ে রাজপথে জীবন উৎসর্গ করার ব্রত নিয়ে সংগঠনকে টিকিয়ে রাখে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু তনয়া, আমাদের আশ্রয়স্থল দেশরত্ন শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি-সম্পাদক সহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয় এবং ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন। আমি নিশ্চিত বঙ্গবন্ধু তনয়ার হাতে সময় থাকলে সারা বাংলাদেশের সকল জেলা-উপজেলা কমিটি নিজ হাতে গঠন করতেন। ছাত্রলীগের সর্বোচ্চ পদ থেকে তৃণমূলের সর্বশেষ কর্মীর এই বিষয়টি অনুধাবন করা উচিত।
আমরা অনেকেই প্রায়শ নিজেদের ব্যক্তিস্বার্থের জন্য সংগঠনকে নিলামে তুলে ফেলি। আমাদের মনে রাখতে হবে, ছাত্রলীগের ইতিহাস বাঙালির ইতিহাস। আমাদের মনে রাখতে হবে, আমাদের জীবনের কর্ম আমাদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, ইতিহাস কখনো কাউকে ক্ষমা করেনা।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি কী বলছে?
কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, সময়ের অভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মহানগরের শীর্ষ নেতাদের ছাত্র সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি।
ইনান মনে করেন, ছাত্রলীগ পরিবার এটা বের না করে নিজেদের কাছে রাখলে ভালো হতো। তিনি এবং সাদ্দাম সমাবেশে ১৪ থেকে ১৫ মিনিট কথা বলেন। ইনানের প্রশ্ন এটাকে ‘দীর্ঘ বক্তৃতা’ বলা যায় কি-না?
হল কমিটিতে কেন্দ্রকে ‘শেয়ার’ না দেওয়ার বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দেওয়া ইঙ্গিত প্রসঙ্গে ওয়ালী বলেন, হল কমিটি বানরের রুটি ভাগাভাগির বিষয় নয়।
মাজহারুল-তানভীরের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা যে কেউ দাবি করতে পারেন। সবার মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে সংগঠন পরিচালনা করতে চাই। যৌক্তিক বিবেচনা সাপেক্ষে বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। কিন্তু সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি জানা আমাদের জন্য বিব্রতকর। যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই কেন্দ্রীয় সংসদে এই দাবি জানানো বিব্রতকর।
তবে কেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সঙ্গে এই বিরোধপূর্ণ অবস্থানের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা বুঝতে পারছেন না ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইনান। তিনি বলেন, ১ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগের সব ইউনিট সফল সমাবেশ করেছে।
ছাত্রলীগ সভাপতির জন্য আনা ফুল ফেলে দেন ঢাবি নেতারা
শুধু ফেইসবুক পোস্ট দিয়েই দমে যায়নি ঢাবি ছাত্রলীগ নেতারা। এবার প্রত্যক্ষভাবেই কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিকে কটাক্ষ করেন। ৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে জড়ো হয়েছিলেন সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। অভিযোগ এসেছে সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নের অনুসারীরা তাদের হেনস্তা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী গণমাধ্যমকে জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার নিরব ও বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি মেহেদী হাসান নিবিরের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী রোকেয়া হলের সামনে আসেন। সেখানে সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে আসা ছাত্রলীগের নেতারা দাঁড়িয়ে ছিলেন সাদ্দামের অপেক্ষায়।
ঢাবির ছাত্রলীগ নেতারা তাদের জিজ্ঞেস করেন, ফুলের তোড়া কাকে দিতে এনেছেন? জবাবে সলিমুল্লাহ ছাত্রলীগের নেতারা জানান, ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দামকে দিতে এনেছেন।
ঢাবি ছাত্রলীগের নেতারা তখন বলেন, ফুল দিতে হলে পার্টি অফিসে যান বা নেতার বাসায় যান। এই বলে তারা ফুলের তোড়া কেড়ে নিয়ে ফেলে দেন। এক্ষেত্রে দুজনের নাম আসে: নিরব ও নিবির। তারা উভয়েই ক্যাম্পাসে শয়নের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
ছাত্রলীগ নেতাদের পুলিশও মারছে
ক্ষমতাধর দলের রাজনীতি করে কী লাভ, যদি পুলিশের ঠেঙানি খেতে হয়? ওই দিন রাতে ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে পুলিশ নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করে বলে অভিযোগ ওঠে। আহতরা হলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত আনোয়ার হোসেন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। অন্যরা চিকিৎসা নিয়ে হলে ফিরে গেছেন।
জানা গেছে, এডিসি হারুনের সঙ্গে শাহবাগের একটি হাসপাতালে পুলিশের একজন নারী কর্মকর্তা আড্ডা দিচ্ছিলেন। সেখানে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে ওই নারী কর্মকর্তার স্বামী হাজির হন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়।
পরবর্তীতে এডিসি হারুন সেখান থেকে চলে যান। পরে পুলিশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের শাহবাগ থানায় ডেকে নিয়ে মারধর করে।
এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল শাখা ছাত্রলীগ প্রতিবাদলিপি দিয়েছে। তবে ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও ১০ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কোনো প্রকাশ্য অবস্থান জানানো হয়নি। জানা গেছে, এ ঘটনায় কোনো মামলার কথাও আপাতত ভাবছেন না তারা। তাহলে রাজপথের সঙ্গীরা কি আজ জুদা হয়ে গেলো? আর এদিকে হারুন অর রশিদকে ডিএমপি থেকে এপিবিএনে বদলি করা হয়েছে। রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ বদলির আদেশ জারি করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনকে রোববার গণমাধ্যম থেকে লাগাতার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে সন্ধ্যায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান মুখ খোলেন।
তিনি বলেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে আশু পদক্ষেপ গ্রহণে আন্তরিকতার ঘাটতি দেখা গেলে আমরা কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারি। আমরা যদি দেখি, আইনি প্রক্রিয়ায় সঠিকভাবে তাঁর বিচার হচ্ছে বা কাজ হচ্ছে, তাহলে আমাদের কিছু করা ঠিক নয়।
শেখ ইনান বলেন, আমরা ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। তিনি আমাদের কাছে ঘটনার বিবরণ শুনে এডিসি হারুনকে স্ট্যান্ড রিলিজ করেছেন।
পুলিশ বিভাগীয় তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, তারা বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছেন। অর্থাৎ বাংলাদেশ পুলিশও এ বিষয়ে বদ্ধপরিকর। তারা অপরাধকে প্রশ্রয় দিতে ইচ্ছুক নয়।
তিনি বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক, লজ্জাজনক। বাংলাদেশ পুলিশ শিক্ষার্থীবান্ধব; সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের পক্ষে কাজ করে। সে ক্ষেত্রে পুলিশ কর্মকর্তার বিচ্ছিন্ন কাজ পুলিশের জন্য লজ্জাজনক। এ বিষয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের অনুরোধ জানাই।
ইনান বলেন, নাঈম চিকিৎসাধীন। মুনিমের বিষয়টিও মানসিকভাবে কষ্টকর। তারা যেন মানসিকভাবে ঠিক থাকে, সে বিষয়ে কাজ করছি। আর সবারই রক্তক্ষরণ হয়েছে। সেই রাগ ও ক্ষোভ থেকে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন-প্রতিবাদ করছে।
মজার বিষয় হচ্ছে এই কাণ্ডে ছাত্রদলের আবার মানবিক ভাবনা উতলে উঠেছে। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রদল। রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. মাহমুদুল হাসানের সই করা এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
ছাত্রদলের নেতারা বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে পুলিশের সহযোগিতায় ছাত্রলীগ সারা দেশের ক্যাম্পাসগুলোতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। ছাত্রদলসহ সব বিরোধী ছাত্রসংগঠন এবং সাধারণ ছাত্রদের নির্মম নির্যাতন করেছে। নির্যাতিত, মুমূর্ষু ছাত্রদের পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। পুলিশ তাদের গায়েবি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে এনে আবার নির্যাতন করেছে। বিরোধী ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর অমানবিক পুলিশি নির্যাতনের ঘটনাগুলোতে বুনো উল্লাস করেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পুলিশ বাহিনী যখন ভোট ডাকাতির দায়িত্ব নিয়েছে, তখন রাজনীতি ছেড়ে ছাত্রলীগের নেতারা টেন্ডারবাণিজ্য, প্রশ্নফাঁস এবং চাঁদাবাজিতে ব্যস্ত হয়েছেন। আজ তাদের দুইজন কেন্দ্রীয় নেতা পাশবিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার পরও ছাত্রলীগের কেউ কোনো প্রতিবাদ জানাতে সক্ষম হয়নি। এতেই বোঝা যায় ছাত্রলীগ এখন নীতি-আদর্শহীন একটি দেউলিয়া সংগঠনে পরিণত হয়েছে।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে বেলা ১২টা ১০ মিনিটের দিকে কেন্দ্রীয় কমিটির একজন নেতাকে সঙ্গে নিয়ে ডিএমপি কার্যালয়ে যান ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম। সেখানে গিয়ে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে দেখা করেন। তার কিছুক্ষণ পরেই ভেতরে প্রবেশ করেন সাধারণ সম্পাদক ইনান।
দুপুর ২টার দিকে বের হয়ে সাদ্দাম বলেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে এডিসি হারুনের মারধরের ঘটনায় ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশের বিভাগীয় তদন্তে আস্থা রাখতে চায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। যারা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ব্যত্যয় ঘটাতে চায় এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে চায় তাদের ফাঁদে ছাত্রলীগ পা দেবে না। অনাকাঙ্ক্ষিত, দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। আমরা সেই ঘটনাটির আশু সুরাহা নিশ্চিত করার জন্য, আইনের শাসন সুনিশ্চিত করার জন্য এবং যারা দায়ী তাদের যেন যথাযথ ও যথোপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা হয় সেটির জন্য গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ও আজ ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেছি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আমাদের দাবিগুলো সুস্পষ্টভাবে জানিয়েছি এবং ডিএমপি কমিশনার আমাদের আশ্বস্ত করেছেন বিভাগীয় তদন্ত প্রক্রিয়াধীন। দ্রুত তদন্তের আলোকে সর্বোচ্চ আইনানুগ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
ভুক্তভোগীর পরিবার থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, ছাত্রলীগ মামলা করতে নিষেধ করেছে। মামলার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম বলেন, পরিবারকে মামলা করতে দেওয়া হচ্ছে না ভুল কথা। এটি নিয়েই আমরা কথা বলেছি। আজ ডিএমপি কমিশনারকে বলেছি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন যেন দ্রুত দেওয়া হয়। সুষ্ঠু বিচার-বিবেচনা করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হয় সেটি নিয়েই আমরা কথা বলেছি। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের সবাই বিব্রতবোধ করছেন।
ঐ দিনই ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধরের ঘটনায় এডিসি হারুনকে চাকরি থেকে বহিষ্কার ও বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মীরা। দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে 'গাজীপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতি' ও 'সাধারণ শিক্ষার্থীদের' ব্যানারে মানববন্ধনে এসব দাবি জানান তারা। এ সময় অনশনের ঘোষণা দিলেও 'বৃষ্টির কারণে' তারা কেউ অনশনে বসেননি।
হারুন অর রশীদকে স্থায়ী বরখাস্ত ও গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা। দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘গাজীপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতি’ ও ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’–এর ব্যানারে এক মানববন্ধন ও সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে ছাত্রলীগের কয়েকজন সাবেক নেতা এই দাবি জানান।
ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সোহান খান বলেন, এডিসি হারুন পেটানোয় পটু। তিনি নিজের সহকর্মীকেও পিটিয়েছেন। তার কাজ পুরো পুলিশ প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। এর দায় তো পুলিশ প্রশাসন নিতে পারে না। হারুনকে কেন প্রশ্রয় দেওয়া হবে? তিনি যেভাবে ছাত্রলীগের নেতাদের অমানুষিক নির্যাতন করেছেন তাতে শুধু প্রত্যাহার কিংবা বদলিতে যথেষ্ট নয়। তাকে গ্রেফতার করে স্থায়ী বরখাস্ত করতে হবে। তাকে আইনের আওতায় আনার কোনো বিকল্প নেই।
ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম সোহাগ বলেন, এডিসি হারুন একজন শিক্ষার্থীবিদ্বেষী পুলিশ কর্মকর্তা। এর আগেও বিভিন্ন সময় তিনি ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী, মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান, কোর্টের আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ করেছিলেন। অতি দ্রুত তাকে ফৌজদারি অপরাধের কারণে আইনের আওতায় না আনলে সাধারণ ছাত্র সমাজ রাজপথে নেমে আসবে।
ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি কামাল খান বলেন, এডিসি হারুন তার ব্যক্তিগত অপকর্ম ঢাকতে পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করেছেন। তিনি যে কাজ করেছেন তা ফৌজদারি অপরাধের শামিল। তাকে ছাড় দিলে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে।
গাজীপুরের শিক্ষার্থীদের সংগঠন গাজীপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির সভাপতি আশিক রাব্বানী জিহান বলেন, এডিসি হারুন যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তখন তার ব্যাকগ্রাউন্ড ছিল ছাত্রশিবিরের। পরে যখন এসব ফাঁস হয়ে যায় নাঈম এসব ধরিয়ে দেবেন বলে তিনি নাঈমকে মেরে দাঁত ফেলে দেন। তিনি এপিবিএনে প্রত্যাহারকে এখন ক্রেডিট হিসেবে নিয়েছেন। ফল তাকে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে।
আহত নাঈম হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় এক বিশেষ কক্ষে আছেন। চিকিৎসক ও সেবিকারা সার্বক্ষণিক তার যত্ন নিচ্ছেন এবং তিনি কেমন আছেন তা পরীক্ষা করছেন। তিনি ঘাড় নাড়াতে পারেন না এবং কাউকে তার কক্ষে যেতে দেওয়া হয় না। সামনের দাঁত নড়ছে, একটা আংশিক ভেঙেছে। ডেন্টিস্টের কাছ থেকে এখনো রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।
বিকেলে এডিসি হারুনকে সাময়িক বরখাস্তের প্রজ্ঞাপনে সই করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান। কিন্তু প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, সাময়িক বরখাস্তকালীন এডিসি হারুন পুলিশ অধিদপ্তরে সংযুক্ত থাকবেন এবং বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো।
তৃণমূলে অসন্তোষ ও সামাজিক মাধ্যমে কটাক্ষ
থানায় তিন ছাত্রলীগ নেতাদের উপর সহিংসতার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩টি হল শাখার ছাত্রলীগ ন্যায়বিচার চেয়েছে। তবে এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কিছু বলা হয়নি। ছাত্রদল ও ছাত্র ইউনিয়নও এ বিষয়ে ক্ষুব্ধ। তবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এখনো এ বিষয়ে কিছু জানায়নি।
তবে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা যেভাবে বিষয়গুলো সামলাচ্ছেন তাতে খুশি নন কয়েকজন নেতা-কর্মী। বিশেষ করে, ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা মনে করেন না যে ছাত্রলীগের তিন নেতাকে মারধর করায় সাময়িকভাবে বরখাস্ত এডিসি হারুনের শাস্তি নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ নেতারা যথেষ্ট আন্তরিকতা দেখাচ্ছেন না। কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঠাট্টা করছেন ছাত্রলীগের কিছু নেতা। তবে আরও কয়েকজন নেতা বলছেন, ছাত্রলীগ সতর্ক ও বড় পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে।
৩ জন নেতা আহত হওয়ায় সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ। তারা একে অপরের প্রতি খুশি নয়।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাদের সমর্থনকারী কয়েকজন ব্যক্তি ফেসবুকে গুরুত্বপূর্ণ দুই নেতাকে নিয়ে সমালোচনা করছেন। তাদের কথায় খুব মিল আছে। তবে তারা কী বলেছেন তা ঠিক স্পষ্ট নয়।
গতকাল মুন্সী রাকিব হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, মাস্টারদা সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফেইসবুকে প্রথম পোস্ট করেন। তিনি মূলত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ মাজহারুল কবির শয়নের অনুসারী।
রাকিব লিখেছেন, হারুন-টারুন কিছুই না। যেদিন থেকে ফুল, পাখি, গান, জারুল হওয়া শুরু করেছে, সেদিন থেকে ছাত্রলীগ লাল সুতায় ঝুলে গেছে। আর এর সঙ্গে নতুন সুর যোগ হইছে আবার আহ্হা, উহ্হু। আমরা সেই ছাত্রলীগ ফিরে পেতে চাই, যে ছাত্রলীগের একজন কর্মীর জয় বাংলা স্লোগানে প্রকম্পিত হতো রাজপথ। আমরা এই ফুল, ফল, জারুল অভিশাপ থেকে মুক্তি চাই।
জহুরুল হক হল শাখার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সূর্যসেন হল শাখার সদস্য যথাক্রমের আসাদুজ্জামান ফরিদ ও মিনহাজুল ইসলামও একই ধরনের পোস্ট দেয়।
যদিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক সৈকত কিছু বলেননি, তবে পুলিশের নির্যাতনে আহত তাদের সহযোদ্ধা আনোয়ারের সঙ্গে দেখা করতে হাসপাতালে যান।
ঢাবির হল নিয়েও রয়েছে দ্বন্দ্ব
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের অধীনে থাকলেও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী প্রার্থীরাও হলগুলোতে থাকেন। মানে আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে না পড়লেও ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কর্মী হতে পারলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের একটি সিট আপনার। যেখানে কিনা স্বয়ং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে হলের বারান্দার মেঝেতে। সলিমুল্লাহ মুসলিম হল থেকে শুরু করে মাস্টারদা সূর্য সেন হলের ‘লাদেন গুহা’ পর্যন্ত অস্বস্থিকর অবস্থার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মূলত নেতৃত্ব নির্বাচনের সময় কেন্দ্রীয় ও ঢাবি শাখার শীর্ষ নেতারা 'সমঝোতার' ভিত্তিতে তাদের নিজস্ব প্রার্থীকে নেতৃত্বে আনেন। তবে একে 'অন্ধকার সময়ের সংস্কৃতি' আখ্যা দিয়ে এ প্রথা থেকে বেরিয়ে আসার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাবি ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন এবং সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত।
ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজ ইউনিটের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজের ছাত্রলীগের ঐক্যের রাজনীতি নিয়ে সম্প্রতি 'নতুন' আলোচনা শুরু হয়েছে। এসব ইউনিটকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের হাত থেকে মুক্ত করে ঢাবি ছাত্রলীগের অধীনে আনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক অঙ্গন সোচ্চার হচ্ছে।
গঠনতন্ত্র সংস্কার চায় ঢাবি ছাত্রলীগ
বহিষ্কারের ইস্যুতে গঠনতন্ত্র সংস্কার চাইবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কাউকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করার ক্ষমতা একমাত্র ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির। এ ধারার পরিবর্তন চান ঢাবি ছাত্রলীগের নেতারা।
ছাত্রলীগের ভবিষ্যৎ এখন প্রশ্নবিদ্ধ। গত ৭৪ বছরের সুনাম কি বর্তমান কেন্দ্রীয় নেতারা ধরে রাখতে পারবেন কি-না এ নিয়ে চলছে মত-ভিন্নমত। সূত্র : ব্রেকিং নিউজ।