ফরিদগঞ্জে চুরির ঘটনা থামছেই না
ফরিদগঞ্জে চুরির ঘটনা থামছেই না! উপজেলার কাওনিয়া গ্রামে একই বাড়িতে ৫ মাসের ব্যবধানে দুবার চুরি হয়েছে। ধারাবাহিক এমন চুরির ঘটনায় পরিবারটি আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। দু’টি ঘটনায়ই থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটেই চলছে।
উপজেলার ১৬নং রূপসা উত্তর ইউনিয়নের কাওনিয়া গ্রামের হাজী বাড়িতে সৌদি প্রবাসী মিজানুর রহমানের ঘরে এই চুরির ঘটনা ঘটে। তার সন্তানরা ঢাকায় পড়ালেখার কারণে তার স্ত্রী ফেরদৌস আক্তার শিউলিকে বেশিরভাগ সময় ঢাকাতেই থাকতে হয়। মাঝে মাঝে তিনি বাড়িতে বেড়াতে আসেন। গত ১১ আগস্ট রোববার গভীর রাতে তাদের বাড়িতে চুরি হয়। চুরির ঘটনায় ফেরদৌসি আক্তার শিউলি ফরিদগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের আলোকে জানা যায়, ফেরদৌসি আক্তার শিউলি ৬ আগস্ট ঢাকায় চলে যান। ১২ আগস্ট সকালে হাজী বাড়ির সেলিমের স্ত্রী আমেনা বেগম ফেরদৌসি আক্তার শিউলিকে মুঠোফোনে কল দিয়ে তাদের ঘরের চুরির বিষয়টি জানান। তাদের ঘরের তালা ভেঙ্গে চোরের দল ভিতরে প্রবেশ করে। এ সময় মোটর, গ্যাস সিলিন্ডার, ঘরের সব কল এবং ইলেকট্রিক মালামাল নিয়ে যায়। যার আনুমানিক মূল্য পঁচিশ হাজার টাকা।
এর আগে চলতি বছরের ১ মার্চ বুধবার গভীর রাতে একই ঘরে প্রথমবার চুরি হয়। সে সময়ও ঘরে কেউ ছিলো না। পরদিন সকালে আবদুল মান্নানের ছেলে মোঃ রনি হোসেন তাদেরকে মুঠোফোনে কল দিয়ে চুরির ঘটনা জানান। অভিযোগের আলোকে জানা যায়, সে সময় ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে আলমারি থেকে ফেরদৌসি আক্তার শিউলির হাতের, কানের, গলার ব্যবহৃত ৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায়। যার আনুমানিক মূল্য ছিলো ৪ লাখ টাকা। এছাড়াও নগদ পঁয়তাল্লিশ হাজার টাকা, জমির সমস্ত দলিল, অলিখিত কিছু স্ট্যাম্পও নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে শিউলি এ প্রতিনিধিকে বলেন, ‘আমাদের এই এলাকায় ঘন ঘন চুরির ঘটনা ঘটছে। আমার বাসায়ই ৫ মাসের ব্যবধানে দুবার চুরি হয়েছে। ক’দিন আগে আমার পাশের বাড়ির একজনের প্রায় দেড় লাখ টাকার একটি গরু চুরি হয়েছে। প্রায় সময়ই এলাকাতে টুকটাক চুরি ডাকাতি হয়ে থাকে। সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় এখানে মাদকের সয়লাব খুব বেশি। আমার বাসায় চুরির ঘটনায় থানায় অভিযোগ করেছি। আশা করি পুলিশ এই দুষ্ট চক্রকে ধরতে পারবে।
মিজানুর রহমানের জেঠাতো ভাই আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সকালে এসে দেখি বাসার গেটের তালা ভাঙ্গা। ভিতরে প্রবেশ করে দেখি ঘরের আলমারি, ওয়ার্ডরোব সব খোলা, বিছানা এলোমেলো। বাসার সব কল, গ্যাস সিলিন্ডার, মোটর কিছুই নেই।
ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ মোর্শেদ এ প্রতিনিধিকে বলেন, আমার কাছে মনে হয় মাদকের সাথে যারা সম্পৃক্ত, চুরির ঘটনাগুলো তারাই ঘটাতে পারে। মূলত কিছু নেতার শেল্টারে এরা চলে। আর একই কারণে মাদকের নির্মূল ঘটানো সম্ভব হয়ে উঠছে না। মাদকের ছোবল থেকে কাউনিয়াকে রক্ষা করতে হলে আগে মাদক এবং মাদকসেবীদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
১৬নং রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ শরীফ হোসেন খান এ প্রতিনিধিকে বলেন, বিদ্যুৎ না থাকার কারণে চুরি বেড়ে গেছে। কারেন্টের অভাবে এলাকা বেশিরভাগ সময় অন্ধকারে থাকে। চোরেরা এই সুযোগের ব্যবহার করেছে। তাছাড়া দিন দিন বেকারত্বের হার বেড়ে যাচ্ছে। সেই সাথে মাদকের ছোবলতো আছেই।
ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল মান্নান বলেন, আমরা তার অভিযোগপত্র পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। সামান্য সংখ্যক পুলিশ দিয়ে বিশাল ফরিদগঞ্জের নিরাপত্তা দেয়া সম্ভব নয়। তাই জনগণকে বলবো আরো সচেতন হতে হবে।