বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার জাতীয় শোক দিবসের ‘মুজিব মহীয়ান’ অনুষ্ঠান
শিক্ষার রূপান্তরের পাশাপাশি আমাদের পরিপূর্ণ সাংস্কৃতিক জাগরণ দরকার
----------শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি
আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে আগামী প্রজন্মের কাছে পৌঁছাতে হলে শিক্ষার রূপান্তরের পাশাপাশি পরিপূর্ণ সাংস্কৃতিক জাগরণ দরকার। কেননা এর মাধ্যমেই আগামী প্রজন্ম জানতে পারবে কেমন করে একজন পিতা মুজিব সুদীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এদেশ স্বাধীন করেছেন। আগামী প্রজন্ম এর মাধ্যমেই জানতে পারবে কেমন করে পিতা মুজিবের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা পিতার স্বপ্নকে সফল করে তুলেছেন। কথাগুলো বলছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি। তিনি গতকাল ১৮ আগস্ট সকাল ১১টায় বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার জাতীয় শোক দিবসের ‘মুজিব মহীয়ান’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করছিলেন। তিনি আরও বলেন, আমাদের হাজার বছরের কৃষ্টি-সংস্কৃতি আমাদের আত্মশক্তিকে জাগ্রত করে। আত্মশক্তি জাগ্রত হলে পরাজয়ের আর ভয় থাকে না। মুজিবকে সঠিকভাবে জানতে হলে আমাদের সংস্কৃতি চর্চার বিকল্প নেই।
অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও বাংলা একডেমির পরিচালক, বিশিষ্ট আবৃত্তিকার ড. শাহাদাৎ হোসেন নিপু সংগঠনের চাঁদপুর জেলা শাখার কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, মাননীয় মন্ত্রী কেবল বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার একটা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্যেই ঢাকা থেকে চাঁদপুর এসেছেন জেনে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা অনেক বেড়ে গেছে। তিনি তাঁর দরাজ কণ্ঠে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা কবিতা আবৃত্তি করে শ্রোতাদের অসম্ভব মুগ্ধ করেন।
সংগঠনের সভাপতি মুক্তা পীযূষের সভাপ্রধানে এবং সাধারণ সম্পাদক মিঠুন বিশ্বাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় শোক দিবস পালন কমিটির আহ্বায়ক ও সংগঠনের সহ-সভাপতি কেএম মাসুদ। এ সময় মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি সদ্য যোগদানকৃত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি ও শিক্ষা) মোস্তাফিজুর রহমান, পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইয়াসির আরাফাত, চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশ, পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার, সংগঠনের জেলা কমিটির প্রধান উপদেষ্টা কাজী শাহাদাত, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসানউল্লাহ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি তপন সরকার, পিপি অ্যাডঃ রঞ্জিত রায় চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটোয়ারী ও বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার উপদেষ্টা ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়া। অনুষ্ঠান উপভোগ করেন ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান, চাঁদপুর সদর উপজেলার সদ্য যোগদানকৃত নির্বাহী কর্মকর্তা সাখাওয়াত জামিল সৈকত, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডঃ মজিবুর রহমান ভূঁইয়া, চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আবিদা সুলতানা, জেলা পরিষদের নারী সদস্য আয়শা রহমান লিলি, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী অধ্যাপিকা মাসুদা নূর খান, চতুরঙ্গের মহাসচিব ও জাতীয় ইলিশ উৎসবের রূপকার হারুন আল রশীদ, রেলওয়ে কিন্ডারগার্টেন চাঁদপুর-এর অধ্যক্ষ রোটাঃ মাহমুদা খানম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি তিনভাগে বিভক্ত ছিলো। প্রথম পর্বে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, দ্বিতীয় পর্বে আলোচনা সভা এবং তৃতীয় পর্বে পুরস্কার বিতরণ। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে নিবেদিত গান ও কবিতা আবৃত্তি পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানে ১৫ আগস্টের শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এর আগে প্রধান অতিথিসহ মঞ্চে উপবিষ্ট অতিথিবৃন্দকে সংগঠনের সদস্য অনন্যা দাস অনুর তৈরি উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করে নেয়া হয়। প্রধান অতিথিকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন সভাপ্রধান মুক্তা পীযূষ এবং অন্যদের উত্তরীয় পরিয়ে দেন আয়শা আক্তার রূপা, সিগমা আহসান কনক, ফারজানা আক্তার, ফাতেমা তুজ জোহরা, প্রীতি, নাসরিন উজ্জ্বল, আলমগীর হোসেন পাটোয়ারী, আবু সায়েম প্রমুখ। উপদেষ্টা ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়া ও মীরা রায় চৌধুরীকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন প্রধান অতিথি নিজেই। সমগ্র অনুষ্ঠানটি তত্ত্বাবধান করেন উপদেষ্টা ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়া ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ফরিদ হাসান। সবশেষে কুইজ, আবৃত্তি ও ৭ মার্চের ভাষণ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করা হয়।