পদ্মা-মেঘনায় বালুবাহী বাল্কহেড ও ড্রেজারসহ আটক ৬২
চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ২৮টি বালুবাহী অবৈধ নৌযান বাল্কহেড ও ৩টি ড্রেজার জব্দসহ ৬২ ব্যক্তিকে আটক করেছে নৌপুলিশ। শনিবার দিবাগত রাত থেকে রোববার ৬ আগস্ট সকাল পর্যন্ত দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া উপেক্ষা করে নৌপুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের একাধিক টীম এ অভিযান চালায়। জব্দ করা বাল্কহেডগুলো দুপুরে হরিণার নদীর পাড় এলাকায় রাখা হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের নৌথানায় নিয়ে আসা হয়।
নৌপুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার মোঃ কামরুজ্জামানের নির্দেশে নৌপুলিশ, নৌথানা ও ফাঁড়ি পুলিশ যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করেন। ৫ আগস্ট শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মার শাখা নদীতে বাল্কহেডের ধাক্কায় একটি পিকনিকের ট্রলার ডুবে রায়হানের প্রাণহানির ঘটনায় নৌপুলিশ বালু উত্তোলনের অবৈধ ড্রেজার ও বালুবাহী নৌযানগুলোর চলাচল নিয়ন্ত্রণে বিশেষ এ অভিযান পরিচালনা করে বলে জানা যায়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর নৌপুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) মোঃ তোফাজ্জল হোসেন, চাঁদপুর সদর নৌথানার ওসি কামরুজ্জামান, মেঘনার পশ্চিম পাড় ঈদগাহ ফেরিঘাট সংলগ্ন আলুর বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কেএম মনিরুজ্জামান ও নীলকমল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহাঙ্গীর হোসেন খান।
চাঁদপুর নৌথানার ওসি জানান, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কিছু মালিক ও শ্রমিক রাতের বেলায় অবাধে বাল্কহেড চালাচ্ছে। ধারাবাহিক অভিযানের অংশ হিসেবে বাল্কহেড ও ড্রেজার জব্দ করা হয়েছে। যে বাল্কহেডগুলো জব্দ করা হয়েছে এগুলোর প্রত্যেকটি মেঘনা নদীর কোনো না কোনো স্থান থেকে উত্তোলন করা বালু বহন করে নিয়ে যাচ্ছিল। জব্দ করা বাল্কহেড ও আটকদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুরে নদী হতে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করার সরকারি কোনো অনুমতি নেই। কিন্তু চিহ্নিত চক্র বরিশাল ও শরিয়তপুর নৌসীমানার নাম ব্যবহার করে দিনে এবং রাতের বিভিন্ন সময়ে চুরি-চামারি করে বালু উত্তোলন করে বাল্কহেডে দিচ্ছে। এই কাজে নিয়োজিত তিনটি ড্রেজার হরিণার নামার এলাকা হতে জব্দ করে নৌপুলিশ।
চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলনের সরকারি অনুমতি না থাকলেও নদীর বালুকাটা থেমে নেই। বালু বিক্রির বিপুল অর্থ যায় কোথায়? জনমনে প্রশ্ন এমন প্রশ্ন থাকলেও নৌপুলিশ মাঝে মধ্যে কিছু ধারপাকড় করে কিন্তু বালুখেকোদের অপতৎপরতা বন্ধ হচ্ছে না। অথচ নদ-নদীর এই প্রাকৃতিক সম্পদ উজাড় হয়ে যাচ্ছে। সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। পাশাপাশি যাত্রীবাহী লঞ্চ ও পণ্যবাহী বাল্কহেডের বেপরোয়া চলাচলে নৌদুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছে-এমনটাই বলছেন সচেতন মহল।