আমদানি বাড়ায় সরগরম চাঁদপুর মাছঘাট
চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ইলিশের তেমন দেখা না মিললেও সাগর মোহনা থেকে দেশের অন্যতম বৃহৎ ইলিশের আড়ত চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাটে ইলিশ আসতে শুরু করেছে। এই ইলিশ আসাকে কেন্দ্র করে মাছঘাটে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে চাঁদপুর মাছঘাট ঘুরে দেখা যায়, বাজারে মাছের চেয়ে ক্রেতা বেশি। কিছুক্ষণ পর পর এই ঘাটে ট্রাকে ও ট্রলারে করে মাছ আসছে। আড়তে তোলার পর নিলাম বা ডাক উঠছে। আড়তদাররা ছোট মাছ, বড় মাছ আর তাজা মাছ আলাদা করে স্তূপ করার পর নিলামে তুলছেন। এ সময় স্থানীয় বিভিন্ন বাজারের মাছ বিক্রেতারা আর দেশের বিভিন্নস্থানের ইলিশ সরবরাহকারী দালালরা সেই ডাকে অংশ নিয়ে সর্বোচ্চ দামে কিনে নিচ্ছেন।
আড়তদার ব্যবসায়ী মোঃ শবেবরাত সরকার বলেন, এবার মৌসুমের শুরুতে ইলিশের তেমন দেখা না মিললেও গত ৩/৪দিন ধরে নোয়াখালী, ভোলা, বরিশাল থেকে ট্রলার ও ট্রাকে করে কিছু কিছু ইলিশ আসছে। তবে পরিমাণে মৌসুম অনুপাতে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার অর্ধেকেরও কম ইলিশ এসেছে। যার অধিকাংশই আকারে ছোট। তবে চাঁদপুর অঞ্চলে জেলেদের জালে ধরা পড়া ইলিশ একটু বড়। এ জন্যে এর দামও বড়। এরপরও এসব ইলিশ পেয়ে খুশি স্থানীয় ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই।
মাছ ঘাটের ইলিশ ব্যবসায়ী মোখলেসুর রহমান বলেন, চাঁদপুর মাছঘাটে অধিকাংশ ক্রেতা আসেন চাঁদপুরের পদ্মা মেঘনার তাজা ইলিশ নিতে। কিন্তু সেই পরিমাণ তাজা ইলিশ সরবরাহ নেই এই ঘাটে। এখানে এখন অধিকাংশ সাগর মোহনার ইলিশই বেশি পাওয়া যায়। তাও এসব ইলিশ আকারে ছোট। চাঁদপুরের তাজা ইলিশ পাওয়া গেলেও আকারে বড়, দামও অনেক বেশি। বর্তমানে এই বাজারে সাগর মোহনার ইলিশ ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা মণে কেনা-বেচা চলছে। আর চাঁদপুরের তাজা ইলিশ ১ হাজার ৬শ’ থেকে ১ হাজার ৮শ’ টাকায় কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে। এর চেয়ে বড় মাছ বড় দামে, ছোট মাছ ছোট দামে কেনাবেচা চলছে।
তাজা ইলিশ কিনতে ঢাকার মিরপুর আদর্শ স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন চাঁদপুরের মাছঘাটে এসে বলেন, আমি হাজব্যান্ডসহ প্রতি বছর চাঁদপুরে ইলিশ কিনতে আসি। কিন্তু ইলিশের অনেক দাম। তারপরও বড় দেড় কেজির একটি এবং এক কেজির তিনটি ইলিশসহ অন্যান্য মাছ নিয়েছি। ঢাকার বাজার অনুপাতে এখানকার মাছের দাম বেশি হলেও তাজাটা পেয়েছি।
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সভাপতি আব্দুল বারী মানিক জমাদার বলেন, আমরা এই মৌসুমের প্রথম এক মাস বসেছিলাম। আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। তবে ক’দিন ধরে ইলিশ আসতে শুরু করলেও পরিমাণে অন্যান্য বছরের তুলনায় অর্ধেকেরও কম। আমরা আশাবাদী আর প্রায় দুমাস এই মৌসুম রয়েছে। আল্লাহ চাহেতো সামনে আমরা ইলিশ পাবো। তাহলে ক্ষতিটা পুষিয়ে যাবে।