নিজ শয়নকক্ষ হতে ব্যবসায়ীর মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা
চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার হরিসভা পশ্চিম শ্রীরামদীতে নিজ শয়নকক্ষ হতে সুজন সাহা (৩৫) নামে এক চাল ব্যবসায়ীর মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। নিহতের বাবা সমীর কান্তি সাহা বাদী হয়ে মামলা করেন বলে ১৯ জুলাই বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর মডেল থানার ওসি শেখ মোঃ মুহসীন আলম।
তিনি বলেন, আমরা লাশ উদ্ধারের বিষয়টি অধিকতর তদন্ত করছি। এজন্যে আমাদের পুরাণবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই জাহেরকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ মামলার বাদী হচ্ছেন নিহতের পিতা সমীর কান্তি সাহা।
এদিকে নিহতের লাশ নিয়ে ময়না তদন্তকারী চিকিৎসক ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডাঃ আসিবুল আহসান বলেন, মৃত ব্যক্তির মুখে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়েছি। ময়না তদন্ত রিপোর্টের আগে আমরা এই লাশ উদ্ধারের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দিবো না।
১৮ জুলাই মঙ্গলবার দুপুরে চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার পৌর ২নং ওয়ার্ডস্থ হরিসভা পুণ্য সাহার বাড়িতে সুজন (৩৫) নামে ওই ব্যবসায়ীর মরদেহ তার ঘর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আঃ মালেক শেখ জানান, আমার ওয়ার্ডের হিন্দু অধ্যুষিত সাহা বাড়িতে এক যুবকের গলিত লাশের গন্ধ বের হয়। বিষয়টি এলাকাবাসী আমাকে জানালে আমি দ্রুত থানা পুলিশকে অবগত করেছি।
জানা যায়, নিহত যুবক চাঁদপুর পৌর হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি রিপন সাহার আপন ছোট ভাই ও চাল ব্যবসায়ী সমর কান্তি সাহার ছোট ছেলে। তিনি সাহা বাড়িতে একাই একটি একতলা বিল্ডিংয়ে বসবাস করতেন। ব্যক্তি জীবনে তিনি বিয়ে করেন নি। নেশায় আসক্ত ছিলেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়।
এ বিষয়ে সুজনের বড় ভাই রিপন সাহা বলেন, আমার ভাইয়ের মৃতু কয়েকদিনের পুরানো বলে ধারণা করছি। সে কি স্ট্রোক করে মারা গেলো নাকি অন্য কিছু তা এখনই বলতে পারছি না। আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।
এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসা চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইয়াসির আরাফাত বলেন, আমরা ফ্ল্যাট বাসা হতে যুবকের লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্যে মর্গে পাঠিয়েছি। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। আশা করছি দ্রুতই এই অপমৃত্যুর বিস্তারিত উদ্ঘাটন করা সম্ভব হবে।
এ সময় চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মুহসীন আলম, ইন্সপেক্টর তদন্ত আব্দুর রাজ্জাক, পুরাণবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রাজিব শর্মাসহ পুলিশ ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সুজন সাহার মৃত্যু এবং ঘরের ভিতর ৪/৫ দিন লাশ পড়ে থাকার ঘটনাটি রহস্যজনক মনে করছে এলাকাবাসী। পোস্টমর্টেমের পর বুধবার নিহতের মরদেহ চাঁদপুর মর্গ থেকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হলে পৌর শ্মশানে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়।