বন্ধ হয়ে গেলো পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন
কয়লা সংকটের কারণে সোমবার (৫ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টায় বন্ধ হয়ে গেছে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি শুরু হওয়ার পর থেকে এই প্রথম পুরোপুরি বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়েছে। কয়লা সংকটে ২৫ মে একটি ইউনিট বন্ধ হয়েছিল। অবশিষ্ট ইউনিটটি আজ বন্ধ হয়ে গেল।
এতে পটুয়াখালীসহ সারাদেশে ভয়াবহ লোডশেডিং দেখা দিয়েছে। এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সমগ্র বরিশাল, খুলনা ও ঢাকার কিছু অংশের বিদ্যুতের উৎস ছিল।
পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শাহ আব্দুল হাসিব ঢাকা পোস্টকে বলেন, কয়লা সংকটের কারণে দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। তবে ইতোমধ্যে কয়লা আনার জন্য এলসি খোলা হয়েছে। আশা করছি এই মাসের শেষের দিকে কয়লাবাহী প্রথম জাহাজ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে এসে পৌঁছাবে। তখন আবার বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে।
এদিকে পটুয়াখালীতে লোডশেডিংয়ের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে রাতের বেলা চার থেকে পাঁচ বার লোডশেডিং হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
বিদ্যুৎ বিভাগের বিক্রয় ও বিতরণ শাখার পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, পটুয়াখালী জেলায় প্রতিদিন ১০ থেকে ১৩ ইউনিটের বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয়। সেখানে আমরা প্রতিদিন গড়ে ১০ ইউনিটের মতো বিদ্যুৎ পাচ্ছি। এজন্য লোডশেডিং হচ্ছে। চাহিদা মতো বিদ্যুৎ পাওয়া গেলে লোডশেডিং হবে না।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে সাড়ে ১৩ হাজার মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে গড়ে প্রতিদিন ১২ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ৩ হাজার ৪৪০ মেগাওয়াটের সক্ষমতার বিপরীতে গড়ে ২ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করছে। পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৭০০ থেকে ১ হাজার বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে থাকে। এতে প্রতিদিন ১২ হাজার টনের বেশি কয়লা পোড়ানো হয়।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বাংলাদেশের সরকারি প্রতিষ্ঠান নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি ও চীনের সরকারি প্রতিষ্ঠান সিএমসির মাধ্যমে এতদিন পরিচালিত হয়ে আসছিল। পরে দুই প্রতিষ্ঠানের সমান মালিকানায় বাংলাদেশ-চীন পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) নামে আলাদা একটি প্রতিষ্ঠান গঠিত হয়। এতদিন পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রকে ৬ মাস বাকিতে কয়লা দিয়েছে সিএমসি। পরে আরও ৩ মাসের বকেয়াসহ ৯ মাসে এই বকেয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৯ কোটি ডলার। ডলার সংকটের কারণে এই বকেয়া পরিশোধ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। যে কারণে চীন থেকে কয়লা পাঠানো বন্ধ করে দেওয়া হয়। সূত্র : ঢাকা পোস্ট।